শীতার্তদের পাশে দাড়ানো ইবাদত
- আপডেট সময় : ০১:৩৫:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩
- / ১০২
প্রতিদিনের নিউজ:
মাঘের শীতে নাকি বাঘও কাঁপে, কিন্তু মাঘ আসার আগেই বাঘ কাঁপানো শীত এসে গেছে এবার। প্রচণ্ড শীত ও ঠাণ্ড বাতাসে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে সর্দি-কাশি-হাঁচি-জ্বর, হুপিংকাশিসহ শীতকালীন ডায়রিয়ায়। অসহায়, দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষরা দিন কাটাচ্ছে সীমাহীন কষ্টে। ফুটপাত ও বস্তিতে থাকা মানুষরা গরম পোশাকের অভাবে পার করছে নির্ঘুম রাত। পথে-ঘাটে, খোলা আকাশের নিচে শৈত্যপ্রবাহে অনেকে যাপন করছে দুর্বিষহ জীবন। এ কষ্টে কখনো নিভে যায় কারো জীবন প্রদীপ। সক্ষমতার অভাবে অনেকেই কিনতে পারছে না গরম পোশাক।
এ অবস্থায় শীতার্ত মানুষের পাশে উপস্থিত হওয়ার সময় এখনই। ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন, দাতব্য প্রতিষ্ঠান, দলমত নির্বিশেষে সবারই শীতকালীন সেবা উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি । প্রবল শৈত্যপ্রবাহের সীমাহীন কষ্টের মধ্যে তাদের মুখে একটু হাসি ফোটানোর কাজ শুরু করা দরকার। ইসলামে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো বা মানবসেবার গুরুত্ব অনেক। কুরআন হাদিসের বাঁকে বাঁকে মানব ও মানবতার সুরক্ষার কথা বর্ণিত হয়েছে। বিপদাক্রান্ত যেকোনো মানুষের পাশে দাঁড়ানোকে আল্লাহর প্রিয়ভাজন হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
এক হাদিসে নবীজী বলেন, কেউ যখন অন্যের কল্যাণে নিয়োজিত থাকে তখন আল্লাহও তার কল্যাণে রত থাকেন। (সহীহ মুসলিম: ৬৭৪৬)
শীতার্ত মানুষের দিকে সহানুভূতি ও দয়ার হাত বাড়িয়ে দেওয়া সামর্থ্যবানদের নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব। শীত আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়নোর এ সুযোগকে লুফে নেওয়া উচিত। কেননা অন্যের কষ্ট লাঘব করলে নিজের লাভই বেশি। কিভাবে?
নবীজী ইরশাদ করেন, কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে কাপড় দান করলে যতক্ষণ ওই কাপড়ের টুকরা তার কাছে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত দানকারী আল্লাহর হেফাজতে থাকবে। (সুনানে তিরমিজি : ২৪৮৪) মানুষের জীবনে প্রয়োজন আর বিপদের কোন শেষ নাই। নবীজী মানুষের প্রয়োজন পূরণ এবং বিপদ মুক্তির পথ বর্ণনা করে বলেন, যে ব্যক্তি অন্য মুসলমানের প্রয়োজন পূরণ করবে আল্লাহ তায়ালাও তার প্রয়োজন মিটিয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি অন্য মুসলমানের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ তাআলাও তার বিপদ দূর করে দেবেন। (সুনানে আবু দাউদ : ৪৮৯৩)
মানুষের অন্যতম একটি মৌলিক প্রয়োজন হলো বস্ত্র। শীতকাতর মানুষের জন্য ঠাণ্ডা নিবারক বস্ত্রের প্রয়োজন আরো অনেক বেশি। এ প্রয়োজন পূরণকারীর জন্য রয়েছে জান্নাতি সবুজ পোশাকের প্রতিশ্রুতি।
নবীজী ইরশাদ করেন, যে মুসলমান বস্ত্রহীন তাকে বস্ত্র দান করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের সবুজ বর্ণের পোশাক পরাবেন। খাদ্য দান করলে তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন, পানি পান করালে জান্নাতের শরবত পান করাবেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৮২)
সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি, সংগঠন এবং বিত্তবানরা ভালোবাসা ও সহানুভূতির হাত বাড়ালে শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাগব হতে পারে। তাছাড়া প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দান ও সহানুভূতির পরশ বুলালে শীতার্ত মানুষ পেতে পারে উষ্ণ শান্তি।