০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

খুমেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসক নেই, ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৭:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩
  • / ১৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

খুলনা প্রতিনিধি:

খুলনায় চলছে চিকিৎসকদের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি। বুধবার, ১ মার্চ সকাল ৬টা থেকে শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ এর উপর হামলার প্রতিবাদে এই কর্মবিরতি পালন করছে চিকিৎসকরা।
এই কর্মবিরতি চলবে বৃহস্পতিবার (২মার্চ) সকাল ৬টা পর্যন্ত। তবে খোলা থাকবে জরুরি বিভাগ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগি ও তাদের স্বজনরা। এদিকে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন চিকিৎসকরা। এর আগে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখা এই কর্মসূচি ঘোষণা করে।
বিএমএ সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নগরীর শেখপাড়া এলাকার হক নার্সিং হোমের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে পুলিশের এএসআই নাঈম ও তার সঙ্গীরা ডা. শেখ নিশাত আবদুল্লাহকে মারধর করেন। এছাড়া অপারেশন থিয়েটারে ভাংচুর চালায় তারা। এক মাস আগে অপারেশন করা রোগীর জটিলতার কথা বলে তারা এই হামলা চালায়। ডা. নিশাত বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে গত মঙ্গলবার সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তিনি বলেন, মামলা হয়েছে, আসামী গ্রেপ্তার হলে আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করবো। রূপসা থেকে আসা মেহেদী হাসান বলেন, মাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসছি। আমার আজ পরীক্ষা ছিল, ভেবেছি ডাক্তার দেখিয়ে চলে যাব। কিন্ত এসে দেখি যারা সেবা দিবে তারাই ধর্মঘট ডেকেছে। দেশে মানবিকতা কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে আমার প্রশ্ন এটাই। সেবা দিবে, সেবার নামে তারা ধর্মঘট ডাকছেন।
নিরালা থেকে আসা রোগি আকরাম হোসেন বলেন, কোমরে ব্যাথা। ডাক্তার দেখাতে না পেরে এখন ফিরে যেতে হচ্ছে। ফিরে যাওয়ার সময় ডলি বেগমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ছেলের পায়ের সমস্যা থাকায় ডাক্তার দেখাতে এসেছি। প্রথম দিন ছেলেকে দেখে ডাক্তার বলেছিলেন অপারেশন করাতে হবে। আজ আবার ডাক্তার দেখাতে এসেছি। কিন্তু ডাক্তাররা কর্মবিরতি পালন করছে। বাইরে কোনো চেম্বারে ডাক্তার দেখাতে গেলে এক হাজার টাকার মতো খরচ হবে। সেটাতো আমার কাছে নেই। প্রতিদিন আসা একটা সমস্যা। এখন ডাক্তার না দেখিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। ছেলের নাকের সমস্যা নিয়ে খুমেকে এসেছেন খালিশপুরের মো. আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, সকালে ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে এসেছি। এসে দেখি ডাক্তার নেই। ছেলেটার নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে। এখন কী করব বুঝতে পারছি না। জরুরি বিভাগে নিয়েছি, সেখান থেকে বলেছে বহির্বিভাগের নাক, কান, গলার ডাক্তার দেখাতে হবে। আর এখানে এই অবস্থা। তাহলে যাব কোথায়? তিনি আরও বলেন, শুনেছি রোগীর স্বজনরা ডাক্তারকে মেরেছে। একটা রোগীর জন্য তো হাজার রোগীর সমস্যা হতে পারে না। যে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তার বিচার হোক। আমার ছেলেটা অসুস্থ। আমরা তো ভোগান্তিতে পড়েছি। এখানে কত লোক আসছে। একেক জনের একেক সমস্যা। আইন আছে, পুলিশ আছে, আদালত আছে তারা দেখবে। কিন্তু ডাক্তাররা কেন সাধারণ জনগণকে ভোগাবেন। আরেক রোগি মুজিবর রহমান বলেন, সকাল থেকে এসে বসে আছি। আমার পায়ে ব্যাথা। এসে দেখলাম টিকিট দিচ্ছে না। অনেক লোকজন এসে ফিরে যাচ্ছে। ভোগান্তি ও হয়রানিতে পড়েছি। দ্রুত সমাধান করে ডাক্তারদের রোগি দেখার আহবান জানান তিনি। নড়াইল কালিয়া থেকে আসা আজিজুর শরীফ বলেন, দূর থেকে এখানে এসেছি। ডাক্তার দেখাতে না পেরে ফিরে যাচ্ছি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

খুমেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসক নেই, ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা

আপডেট সময় : ০৮:৪৭:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

খুলনা প্রতিনিধি:

খুলনায় চলছে চিকিৎসকদের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি। বুধবার, ১ মার্চ সকাল ৬টা থেকে শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ এর উপর হামলার প্রতিবাদে এই কর্মবিরতি পালন করছে চিকিৎসকরা।
এই কর্মবিরতি চলবে বৃহস্পতিবার (২মার্চ) সকাল ৬টা পর্যন্ত। তবে খোলা থাকবে জরুরি বিভাগ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগি ও তাদের স্বজনরা। এদিকে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন চিকিৎসকরা। এর আগে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখা এই কর্মসূচি ঘোষণা করে।
বিএমএ সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নগরীর শেখপাড়া এলাকার হক নার্সিং হোমের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে পুলিশের এএসআই নাঈম ও তার সঙ্গীরা ডা. শেখ নিশাত আবদুল্লাহকে মারধর করেন। এছাড়া অপারেশন থিয়েটারে ভাংচুর চালায় তারা। এক মাস আগে অপারেশন করা রোগীর জটিলতার কথা বলে তারা এই হামলা চালায়। ডা. নিশাত বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে গত মঙ্গলবার সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তিনি বলেন, মামলা হয়েছে, আসামী গ্রেপ্তার হলে আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করবো। রূপসা থেকে আসা মেহেদী হাসান বলেন, মাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসছি। আমার আজ পরীক্ষা ছিল, ভেবেছি ডাক্তার দেখিয়ে চলে যাব। কিন্ত এসে দেখি যারা সেবা দিবে তারাই ধর্মঘট ডেকেছে। দেশে মানবিকতা কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে আমার প্রশ্ন এটাই। সেবা দিবে, সেবার নামে তারা ধর্মঘট ডাকছেন।
নিরালা থেকে আসা রোগি আকরাম হোসেন বলেন, কোমরে ব্যাথা। ডাক্তার দেখাতে না পেরে এখন ফিরে যেতে হচ্ছে। ফিরে যাওয়ার সময় ডলি বেগমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ছেলের পায়ের সমস্যা থাকায় ডাক্তার দেখাতে এসেছি। প্রথম দিন ছেলেকে দেখে ডাক্তার বলেছিলেন অপারেশন করাতে হবে। আজ আবার ডাক্তার দেখাতে এসেছি। কিন্তু ডাক্তাররা কর্মবিরতি পালন করছে। বাইরে কোনো চেম্বারে ডাক্তার দেখাতে গেলে এক হাজার টাকার মতো খরচ হবে। সেটাতো আমার কাছে নেই। প্রতিদিন আসা একটা সমস্যা। এখন ডাক্তার না দেখিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। ছেলের নাকের সমস্যা নিয়ে খুমেকে এসেছেন খালিশপুরের মো. আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, সকালে ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে এসেছি। এসে দেখি ডাক্তার নেই। ছেলেটার নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে। এখন কী করব বুঝতে পারছি না। জরুরি বিভাগে নিয়েছি, সেখান থেকে বলেছে বহির্বিভাগের নাক, কান, গলার ডাক্তার দেখাতে হবে। আর এখানে এই অবস্থা। তাহলে যাব কোথায়? তিনি আরও বলেন, শুনেছি রোগীর স্বজনরা ডাক্তারকে মেরেছে। একটা রোগীর জন্য তো হাজার রোগীর সমস্যা হতে পারে না। যে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তার বিচার হোক। আমার ছেলেটা অসুস্থ। আমরা তো ভোগান্তিতে পড়েছি। এখানে কত লোক আসছে। একেক জনের একেক সমস্যা। আইন আছে, পুলিশ আছে, আদালত আছে তারা দেখবে। কিন্তু ডাক্তাররা কেন সাধারণ জনগণকে ভোগাবেন। আরেক রোগি মুজিবর রহমান বলেন, সকাল থেকে এসে বসে আছি। আমার পায়ে ব্যাথা। এসে দেখলাম টিকিট দিচ্ছে না। অনেক লোকজন এসে ফিরে যাচ্ছে। ভোগান্তি ও হয়রানিতে পড়েছি। দ্রুত সমাধান করে ডাক্তারদের রোগি দেখার আহবান জানান তিনি। নড়াইল কালিয়া থেকে আসা আজিজুর শরীফ বলেন, দূর থেকে এখানে এসেছি। ডাক্তার দেখাতে না পেরে ফিরে যাচ্ছি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন