০৮:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাচনে জমে উঠেছে ঘোড়া-মোটরসাইকেলের লড়াই

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা :
  • আপডেট সময় : ০৬:০২:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪
  • / ৩৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আগামী (২১ মে) দ্বিতীয় ধাপে বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নেমেছেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় উপজেলা জুড়ে বইছে নির্বাচনী হাওয়া।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল কবির খোকন (মোটরসাইকেল) প্রতীক এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলার দুই শীর্ষ নেতা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় দলের নেতা-কর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল কবির খোকন গত ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। অপর প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে পর পর ৩ বার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে বর্তমান পর্যন্ত দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেছেন।

দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা বলছেন, এবার নির্বাচনে উপজেলার দুই শীর্ষ নেতা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় দলের নেতা-কর্মীরা বেকায়দায় পড়েছেন। দু’জনকে আবার দলের অনেক শীর্ষ নেতারা সমর্থন দিয়ে মাঠে রয়েছেন। নেতা-কর্মীরা কিছুটা আতংকের মধ্যেও রয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচনী মাঠ এখন গরম।

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রার্থীরা জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় তাঁরা পোস্টার-ব্যানার, মোটরসাইকেল শো-ডাউন, ছোট ছোট পথসভা, উঠান বৈঠকের সঙ্গে বড় বড় জমায়েতের সভাও করছেন। বারহাট্টা উপজেলা ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলায় প্রার্থীদের এলাকাভিত্তিক ভোটের হিসাবও কষছেন অনেকে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ও ভোটারের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, একজন প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন তাই সাত ইউনিয়নেই তার পরিচিতি রয়েছে। অন্যজন নতুন হলেও পর পর ৩ বার উপজেলা সদর (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সদর ইউনিয়ন ছাড়াও অন্য ছয় ইউনিয়নেও তার সুনাম রয়েছে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘আমি ভোটের মাধ্যমে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। ভোটাররা আমাকে আবারও ভোট দেবেন—এমন প্রত্যাশা রয়েছে আমার।’

তিনি আরও বলেন, দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট চেয়ে যাচ্ছি। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। এবারের নির্বাচন উন্মুক্ত। তাই নেতা-কর্মীরা অনেকেই যাঁর যাঁর মতো করে প্রার্থীদের সঙ্গে কাজ করছেন। তবে নির্বাচনের পর আমরা সবাই আবার একসঙ্গে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করব।
অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি ভোটের মাধ্যমে জনগণের অকৃত্রিম ভালবাসায় পর পর ৩ বার সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করেছি। সদর ইউনিয়ন ছাড়াও অপর ছয় ইউনিয়নের উন্নয়ন করার স্বপ্ন নিয়ে আমি এবার উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছি। আমার বিশ্বাস ভোটাররা আমাকে ভোট দেবেন এবং আমার স্বপ্নকে সফল করবেন।’

দলের দুই প্রধান শীর্ষ নেতা প্রার্থী হওয়ায় দলের মধ্যে বিভক্তি হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আমার দলীয় কোনো প্রভাব নেই। এখানে আমি শুধুই একজন প্রার্থী হিসেবে সাধারণ ভোটার ও নেতা-কর্মীদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছি। ফলে দলের মধ্যে কোনো ধরনের বিভক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি বলেন, নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাচনে জমে উঠেছে ঘোড়া-মোটরসাইকেলের লড়াই

আপডেট সময় : ০৬:০২:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আগামী (২১ মে) দ্বিতীয় ধাপে বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নেমেছেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় উপজেলা জুড়ে বইছে নির্বাচনী হাওয়া।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল কবির খোকন (মোটরসাইকেল) প্রতীক এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলার দুই শীর্ষ নেতা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় দলের নেতা-কর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল কবির খোকন গত ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। অপর প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে পর পর ৩ বার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে বর্তমান পর্যন্ত দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেছেন।

দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা বলছেন, এবার নির্বাচনে উপজেলার দুই শীর্ষ নেতা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় দলের নেতা-কর্মীরা বেকায়দায় পড়েছেন। দু’জনকে আবার দলের অনেক শীর্ষ নেতারা সমর্থন দিয়ে মাঠে রয়েছেন। নেতা-কর্মীরা কিছুটা আতংকের মধ্যেও রয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচনী মাঠ এখন গরম।

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রার্থীরা জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় তাঁরা পোস্টার-ব্যানার, মোটরসাইকেল শো-ডাউন, ছোট ছোট পথসভা, উঠান বৈঠকের সঙ্গে বড় বড় জমায়েতের সভাও করছেন। বারহাট্টা উপজেলা ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলায় প্রার্থীদের এলাকাভিত্তিক ভোটের হিসাবও কষছেন অনেকে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ও ভোটারের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, একজন প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন তাই সাত ইউনিয়নেই তার পরিচিতি রয়েছে। অন্যজন নতুন হলেও পর পর ৩ বার উপজেলা সদর (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সদর ইউনিয়ন ছাড়াও অন্য ছয় ইউনিয়নেও তার সুনাম রয়েছে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘আমি ভোটের মাধ্যমে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। ভোটাররা আমাকে আবারও ভোট দেবেন—এমন প্রত্যাশা রয়েছে আমার।’

তিনি আরও বলেন, দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট চেয়ে যাচ্ছি। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। এবারের নির্বাচন উন্মুক্ত। তাই নেতা-কর্মীরা অনেকেই যাঁর যাঁর মতো করে প্রার্থীদের সঙ্গে কাজ করছেন। তবে নির্বাচনের পর আমরা সবাই আবার একসঙ্গে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করব।
অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি ভোটের মাধ্যমে জনগণের অকৃত্রিম ভালবাসায় পর পর ৩ বার সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করেছি। সদর ইউনিয়ন ছাড়াও অপর ছয় ইউনিয়নের উন্নয়ন করার স্বপ্ন নিয়ে আমি এবার উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছি। আমার বিশ্বাস ভোটাররা আমাকে ভোট দেবেন এবং আমার স্বপ্নকে সফল করবেন।’

দলের দুই প্রধান শীর্ষ নেতা প্রার্থী হওয়ায় দলের মধ্যে বিভক্তি হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আমার দলীয় কোনো প্রভাব নেই। এখানে আমি শুধুই একজন প্রার্থী হিসেবে সাধারণ ভোটার ও নেতা-কর্মীদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছি। ফলে দলের মধ্যে কোনো ধরনের বিভক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি বলেন, নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন