কৃষি

বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরে পেল বোরো আবাদ, স্বস্তিতে কৃষক

  রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা : ২৪ মার্চ ২০২৪ , ৮:৩৪:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা :

নেত্রকোনায় দুই-তিন দিনের বৃষ্টির পর নতুন করে প্রাণ ফিরে পেল বোরো ধানের জমি। বৃষ্টির ছোঁয়ায় জমিগুলো এখন সতেজ ও সবুজময় হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির পানি জমিতে আটকানোর জন্য খেতের চারদিকের ফাঁকা রাস্তা বন্ধ করছেন অনেক কৃষক। আবার যাদের ধানে শীষ বের হয়েছে, তারা কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন, যদি শিলা বৃষ্টি হয়, তাহলে ধানের শীষ নষ্ট হয়ে যাবে। তবে সবকিছুর পরে বৃষ্টির পানি পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।
চাষিরা জানান, বৃষ্টি না হলে আমাদের ফসল একেবারে নষ্ট হয়ে যেত। যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে আপাতত সপ্তাহ খানেক ফসল নষ্ট হওয়ার চিন্তা নেই। তবে অতি ভারী বৃষ্টি হলে যেসব গাছে ধানের শীষ বের হয়েছে, এসব ধান নষ্ট হয়ে যাবে। আশা করছি, আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে সকল গাছে শীষ চলে আসবে।
তারা আরও বলেন, পানির অভাবে আমাদের কিছু জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। যে টুকু জায়গা আছে, বৃষ্টি না হলে এগুলোও নষ্ট হয়ে যেত। বৃষ্টি হওয়ার কারণে ধানের অনেক উপকার হয়েছে।
খালিয়াজুরীর কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক রহিস উদ্দিন বলেন, পাঁচ থেকে সাত দিন যাবৎ প্রখর রোদের পর বৃষ্টি হওয়ায় আমরা খুব খুশি।
বারহাট্টা উপজেলা সদরের কাশবন গ্রামের বোরো চাষি অরুণ সরকার বলেন, এ সপ্তাহে ভালো বৃষ্টি হওয়াতে আমাদের বড়ো জমি এখন সতেজ হয়ে উঠেছে। এখন জমিতে ৮/১০ দিন সেচ দিতে হবে না। এতে করে তাদের মেশিন চালাতে হবে না। ডিজেল খরচ অনেক বেঁচে যাবে।
নেত্রকোনা সদরের মৌগাতী গ্রামের কৃষক শহীদুল হক বলেন, আমি সাত একর জমিতে এবার বোরো ধান চাষ করেছি। এর মাঝে কিছু জায়গায় ধানের শীষ বের হয়ে অতিরিক্ত খরায় কিছুটা নষ্ট হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ার কারণে ধানের অনেক উপকার হয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোনায় এবার ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৫০ হেক্টর বেশি। নেত্রকোনার দশ উপজেলার মধ্যে হাওর উপজেলা খালিয়াজুরী, মদন, মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, নেত্রকোনা সদরে সব সময় বোরো আবাদ বেশি হয়। এবারও তাই হচ্ছে। খালিয়াজুরিতে-২০ হাজার ২২৫ হেক্টর, মদনে-১৭ হাজার ৬২০ হেক্টর, মোহনগঞ্জে- ১৭ হাজার ১০ হেক্টর, বারহাট্টায়- ১৫ হাজার ৩২০ হেক্টর এবং নেত্রকোনা সদরে- ২১ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, দুই দিন ভালো বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের জন্য ভালো হয়েছে। কারণ সেচের চেয়ে বৃষ্টির পানি জমির জন্য আশীর্বাদ। এখন রোদও পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বরো জমিতে ধানের চারাগুলো সতেজ হয়ে উঠেছে।

আরও খবর

Sponsered content