০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিংয়েও বিদ্যুৎ বিল দ্বিগুন: তীব্র গরমে নাভিশ্বাস

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৯:১২:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩
  • / ১৬
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মোহাম্মদ আলী, রামগঞ্জ:

লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলা শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও বাসাবাড়ীর লোকজনের অভিযোগ রামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং চলার পরও চলতি মাসের (মে) বিল বিগত কয়েকমাসের তুলনায় দ্বিগুন হয়েছে। বিগত মাসগুলোর তুলনায় ৪শ থেকে ৫শ টাকা, কোথাও কোথাও শতভাগ বেশি এসেছে বিদ্যুত বিল।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন নিস্তার পাওয়া যায়নি। উপরুন্ত পল্লী বিদ্যুত রামগঞ্জ জোনাল অফিস কর্তৃপক্ষ বকেয়া টাকা পরিশোধে ব্যর্থতায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আলটিমেটাম দিয়ে শহরব্যপি মাইকযোগে ব্যপক প্রচারনা চালিয়েছে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ভয়ে বাধ্য হয়ে পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষের তৈরিকৃত বিদ্যুত বিল পরিশোধ করেছেন বলেও জানান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজন।
এদিকে তীব্র গরমে অতীষ্ট সাধারন মানুষ ও প্রাণীকুল। গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে ঘন্টায় ঘন্টায় দেয়া হচ্ছে লোডশেডিং। তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ে চরম ত্রাহি অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।
লোডশেডিং ও গরমের কারনে শিশু ও বয়স্ক মানুষদের কষ্ট হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।
এ সংবাদটি লিখতে গিয়েও দুইবার লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হয়েছে।
রামগঞ্জ উপজেলা শহরের একটি মার্কেটের কনফেকশনারী ব্যবসায়ী মোঃ সজিব। তিনি জানান, ২০২৩ ইং সনের মার্চ মাসের বিল ছিলো ২৭শ টাকা থেকে সামান্য বেশি, এপ্রিল মাসের বিদ্যুত বিল ছিলো ২৭৩৬ টাকা কিন্তু পরবর্তী (চলতি মাসে) মে মাসের বিদ্যুত বিল এসেছে ৫৯৯২ টাকা। ছোট্ট একটি কনফেকশনারী দোকানে এত টাকা বিদ্যুত বিল দেখে বাকরূদ্ধ হয়ে পড়েন ব্যবসায়ী মোঃ সজিব।
তিনি আরো জানান, আগের থেকে বিদ্যুতর ব্যবহার কম হচ্ছে, বাধ্য হয়ে লাইটও কম জালাই। আর মে মাসে বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিলো অন্য মাসের তুলনায় বেশি।
রামগঞ্জ বাজারের মোবাইল ফোন দোকানের মালিক হানিফ মোল্লাও জানালেন একই কথা। তিনি জানান, ২০২৩ইং সনের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুত বিল ছিলো ৩৪০৭টাকা, মার্চ মাসে ৩৭৩৮ টাকা, এপ্রিলে ৪০৫১ টাকা আর মে মাসে এক লাফে ৬৮৭০ টাকা। এটা কেমন বিল বুঝতে পারছি না। ২/৪শ টাকা এদিক সেদিক হতে পারে, তাই বলে দ্বিগুন বিল ! লাইন কাটার ভয়ে বাধ্য হয়ে বিল পরিশোধ করেছি।
একই অভিযোগ ফারুক হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর। তিনি জানান, বিদ্যুত বিল বেশি যেন না হয় সে কারনে লাইট ফ্যান কম ব্যবহার করেছি। অথছ গত কয়েকমাসের তুলনায় মে মাসের বিদ্যুত বিল প্রায় ৪শ টাকা বেশি দিতে হয়েছে।
ছেরাজুল হক নামের একজন জানান, বিগত মাসগুলোতে গড়ে বিদ্যুত বিল আসতো ১হাজার টাকা। মে মাসে ১৯শ টাকার বিল দেখে হতবাক হয়ে যাই। মে মাসে বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিলো বেশি। আবার বৃষ্টি ও ঝড়ের অজুহাতেও লোডশেডিং করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের বিল বেড়েছে শতভাগ। এ থেকে পরিত্রানের কি কোন উপায় নেই?
তবে রামগঞ্জ উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মোঃ নুরুল আলম ভূইয়া জানান, মে মাসের বিলটি ছিলো গত রমজানের। রোজার সময় সরকার লোডশেডিং না দেয়ায় বিল বেশি আসবে, স্বাভাবিক। গরমের কারনে আর বিদ্যুতের ব্যবহার আগের থেকে বেশি হওয়ায় বিলও বেশি হয়েছে। আমরা মার্চের আগে ৭৬লাখ ইউনিট বিদ্যুত ক্রয় করেছি আর পরবর্তী মাসে (মার্চ-এপ্রিল) ক্রয় করেছি ১কোটি ১৬ লাখ ইউনিট। বিদ্যুত কিনেছি বেশি, আর গ্রাহক খরচও করেছেন বেশি। বিল বেশি এ কারনেই হয়েছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিংয়েও বিদ্যুৎ বিল দ্বিগুন: তীব্র গরমে নাভিশ্বাস

আপডেট সময় : ০৯:১২:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মোহাম্মদ আলী, রামগঞ্জ:

লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলা শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও বাসাবাড়ীর লোকজনের অভিযোগ রামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং চলার পরও চলতি মাসের (মে) বিল বিগত কয়েকমাসের তুলনায় দ্বিগুন হয়েছে। বিগত মাসগুলোর তুলনায় ৪শ থেকে ৫শ টাকা, কোথাও কোথাও শতভাগ বেশি এসেছে বিদ্যুত বিল।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন নিস্তার পাওয়া যায়নি। উপরুন্ত পল্লী বিদ্যুত রামগঞ্জ জোনাল অফিস কর্তৃপক্ষ বকেয়া টাকা পরিশোধে ব্যর্থতায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আলটিমেটাম দিয়ে শহরব্যপি মাইকযোগে ব্যপক প্রচারনা চালিয়েছে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ভয়ে বাধ্য হয়ে পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষের তৈরিকৃত বিদ্যুত বিল পরিশোধ করেছেন বলেও জানান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজন।
এদিকে তীব্র গরমে অতীষ্ট সাধারন মানুষ ও প্রাণীকুল। গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে ঘন্টায় ঘন্টায় দেয়া হচ্ছে লোডশেডিং। তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ে চরম ত্রাহি অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।
লোডশেডিং ও গরমের কারনে শিশু ও বয়স্ক মানুষদের কষ্ট হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।
এ সংবাদটি লিখতে গিয়েও দুইবার লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হয়েছে।
রামগঞ্জ উপজেলা শহরের একটি মার্কেটের কনফেকশনারী ব্যবসায়ী মোঃ সজিব। তিনি জানান, ২০২৩ ইং সনের মার্চ মাসের বিল ছিলো ২৭শ টাকা থেকে সামান্য বেশি, এপ্রিল মাসের বিদ্যুত বিল ছিলো ২৭৩৬ টাকা কিন্তু পরবর্তী (চলতি মাসে) মে মাসের বিদ্যুত বিল এসেছে ৫৯৯২ টাকা। ছোট্ট একটি কনফেকশনারী দোকানে এত টাকা বিদ্যুত বিল দেখে বাকরূদ্ধ হয়ে পড়েন ব্যবসায়ী মোঃ সজিব।
তিনি আরো জানান, আগের থেকে বিদ্যুতর ব্যবহার কম হচ্ছে, বাধ্য হয়ে লাইটও কম জালাই। আর মে মাসে বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিলো অন্য মাসের তুলনায় বেশি।
রামগঞ্জ বাজারের মোবাইল ফোন দোকানের মালিক হানিফ মোল্লাও জানালেন একই কথা। তিনি জানান, ২০২৩ইং সনের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুত বিল ছিলো ৩৪০৭টাকা, মার্চ মাসে ৩৭৩৮ টাকা, এপ্রিলে ৪০৫১ টাকা আর মে মাসে এক লাফে ৬৮৭০ টাকা। এটা কেমন বিল বুঝতে পারছি না। ২/৪শ টাকা এদিক সেদিক হতে পারে, তাই বলে দ্বিগুন বিল ! লাইন কাটার ভয়ে বাধ্য হয়ে বিল পরিশোধ করেছি।
একই অভিযোগ ফারুক হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর। তিনি জানান, বিদ্যুত বিল বেশি যেন না হয় সে কারনে লাইট ফ্যান কম ব্যবহার করেছি। অথছ গত কয়েকমাসের তুলনায় মে মাসের বিদ্যুত বিল প্রায় ৪শ টাকা বেশি দিতে হয়েছে।
ছেরাজুল হক নামের একজন জানান, বিগত মাসগুলোতে গড়ে বিদ্যুত বিল আসতো ১হাজার টাকা। মে মাসে ১৯শ টাকার বিল দেখে হতবাক হয়ে যাই। মে মাসে বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিলো বেশি। আবার বৃষ্টি ও ঝড়ের অজুহাতেও লোডশেডিং করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের বিল বেড়েছে শতভাগ। এ থেকে পরিত্রানের কি কোন উপায় নেই?
তবে রামগঞ্জ উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মোঃ নুরুল আলম ভূইয়া জানান, মে মাসের বিলটি ছিলো গত রমজানের। রোজার সময় সরকার লোডশেডিং না দেয়ায় বিল বেশি আসবে, স্বাভাবিক। গরমের কারনে আর বিদ্যুতের ব্যবহার আগের থেকে বেশি হওয়ায় বিলও বেশি হয়েছে। আমরা মার্চের আগে ৭৬লাখ ইউনিট বিদ্যুত ক্রয় করেছি আর পরবর্তী মাসে (মার্চ-এপ্রিল) ক্রয় করেছি ১কোটি ১৬ লাখ ইউনিট। বিদ্যুত কিনেছি বেশি, আর গ্রাহক খরচও করেছেন বেশি। বিল বেশি এ কারনেই হয়েছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন