০৭:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লালমনিরহাটে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে চলছে হরিলুট! দেখার কেউ নেই

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৭:০৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩
  • / ৪৭

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আশরাফুল হক:

শেখ হাসিনার বাংলাদেশ-ক্ষুদা হবে নিরুদ্দেশ-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায় লালমনিরহাটে ও দীর্ঘদিন থেকে চলছে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি।
খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার সয়সম্বলহীন অসহায় লোকদের তালিকা প্রনয়ন করে একটি কার্ডের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়নে বাৎসরিক ২ বার করে সরকারের পক্ষ থেকে, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সহায়তায়, ডিলার (পরিবেশক) নিয়োগের মাধ্যমে ৩০ কেজি করে চাউল অসহায় গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
চাউল বিতরণে দেখা যায়, ডিলাদের অনিয়ম, শুধু অনিয়ম নয়, গরীবদের চোখে ধুলা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে বিনা মূল্যে চাউল দেওয়ার নিয়ম থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে ডিলারগন (পরিবেশক) টাকা নিয়ে চাউল দিচ্ছেন। শুধু টাকায় সীমাবদ্ধ নয়, বিতরণ করছেন বাজারের নিন্মমানের চাউল যা খাবার উপযুক্ত নয়। এমন ঘটনা ঘটেছে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মাদাতি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে।
জেলা ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা’র যোগসাজসে ডিলারগন (পরিবেশক) বাজারের নিন্মমানের চাউল ক্রয় করে তা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে গরীবদের মাঝে চালিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এমনি একজন কার্ডধারী সুবিধা ভোগী অভিযোগকারী কালীগঞ্জ উপজেলার মাদাতি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়াডের গুডুর গোড় উত্তর মোসত গ্রামের মোছাঃ উম্মুল হাসানের স্বামী শাজাহান আলী (৫২) কার্ড নং- ২৬৫ বলেন, আমরা এখানে কার্ডধারী সুবিধা ভোগী রয়েছি ৪০৭ জন। ডিলার (পরিবেশক) ওয়ারেজ আলী বুলুর কাছে চাউল নিতে হলে জনপ্রতি দিতে হচ্ছে ১০ (দশ) টাকা বিশেষ ফান্ডে। চাউল বাছাই (পরিস্কার) করা বাবদ দিতে হচ্ছে জনপ্রতি ২০ (বিশ) টাকা। আবার ৩০ কেজি চাউল দেওয়ার নিয়ম থাকলেও দিচ্ছেন ২৪/২৫ কেজি।

ডিলার (পরিবেশক) ওয়ারেজ আলী বুলু হাজরানী এলাকার স্হানীয় বসবাসকারী হওয়ায় ও দলীয় পরিচিতি থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বিভিন্ন অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করেছেন তিনি।
ভুক্তভোগী শাহজাহান আলী আরও বলেন, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে যে চাউল আমি পেয়েছি, তা মাথায় নিয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক ও কালীগঞ্জের ইউএনও মহোদয়কে বাস্তবে দেখিয়েছি। আমি ওই ডিলার (পরিবেশক) ওয়ারেজ আলী বুলু’র ডিলার সীপ বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ডিলার (পরিবেশক) ওয়ারেজ আলী বুলু বলেন, আমি শাহাজান আলীকে চাউল দিয়েছি ২০ (বিশ) তারিখে। এতদিন পর অভিযোগ কেন! টাকা নেওয়ার বিষটি স্বীকার করে বলেন, মসজিদ ফান্ডে ১০ টাকা করে নেওয়া হয়, এর বেশি নয়। তিনি আরও বলেন, আমি সব নিয়মকানুন মেনে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি পরিচালনা করছি।
কালীগঞ্জ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম বলেন, আমরা যে চাউল বিতরণ করেছি তা একটু ঘোলা মাত্র। নিচের বস্তায় থাকার কারণে হয়তো ও রকম ঘোলা হয়েছে। তবে গন্ধ বাসনা কিছুই হবেনা। ১ বছর আগে চাউল কেনা হয়েছে তাই একটু ঘোলা।
কালীগঞ্জ ইউএনও এ বিষয়ে বলেন, আমি বদলিকৃত চার্জে দায়িত্ব পালন করছি, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। তবে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি হয়তো বিষয়টা জানেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, আমরা যে চাউল ডিলার (পরিবেশক) কে বিতরণ করার জন্য দেই তা আমাদের কাছে নমুনা থাকে। আমি এখন কিছু বলতে পারবো না চাউল দেখবো তারপর বক্তব্য দিবো। ইউএনও স্যারও আমাকে বিষয়টা বলেছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

লালমনিরহাটে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে চলছে হরিলুট! দেখার কেউ নেই

আপডেট সময় : ০৭:০৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আশরাফুল হক:

শেখ হাসিনার বাংলাদেশ-ক্ষুদা হবে নিরুদ্দেশ-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায় লালমনিরহাটে ও দীর্ঘদিন থেকে চলছে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি।
খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার সয়সম্বলহীন অসহায় লোকদের তালিকা প্রনয়ন করে একটি কার্ডের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়নে বাৎসরিক ২ বার করে সরকারের পক্ষ থেকে, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সহায়তায়, ডিলার (পরিবেশক) নিয়োগের মাধ্যমে ৩০ কেজি করে চাউল অসহায় গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
চাউল বিতরণে দেখা যায়, ডিলাদের অনিয়ম, শুধু অনিয়ম নয়, গরীবদের চোখে ধুলা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে বিনা মূল্যে চাউল দেওয়ার নিয়ম থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে ডিলারগন (পরিবেশক) টাকা নিয়ে চাউল দিচ্ছেন। শুধু টাকায় সীমাবদ্ধ নয়, বিতরণ করছেন বাজারের নিন্মমানের চাউল যা খাবার উপযুক্ত নয়। এমন ঘটনা ঘটেছে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মাদাতি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে।
জেলা ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা’র যোগসাজসে ডিলারগন (পরিবেশক) বাজারের নিন্মমানের চাউল ক্রয় করে তা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে গরীবদের মাঝে চালিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এমনি একজন কার্ডধারী সুবিধা ভোগী অভিযোগকারী কালীগঞ্জ উপজেলার মাদাতি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়াডের গুডুর গোড় উত্তর মোসত গ্রামের মোছাঃ উম্মুল হাসানের স্বামী শাজাহান আলী (৫২) কার্ড নং- ২৬৫ বলেন, আমরা এখানে কার্ডধারী সুবিধা ভোগী রয়েছি ৪০৭ জন। ডিলার (পরিবেশক) ওয়ারেজ আলী বুলুর কাছে চাউল নিতে হলে জনপ্রতি দিতে হচ্ছে ১০ (দশ) টাকা বিশেষ ফান্ডে। চাউল বাছাই (পরিস্কার) করা বাবদ দিতে হচ্ছে জনপ্রতি ২০ (বিশ) টাকা। আবার ৩০ কেজি চাউল দেওয়ার নিয়ম থাকলেও দিচ্ছেন ২৪/২৫ কেজি।

ডিলার (পরিবেশক) ওয়ারেজ আলী বুলু হাজরানী এলাকার স্হানীয় বসবাসকারী হওয়ায় ও দলীয় পরিচিতি থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বিভিন্ন অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করেছেন তিনি।
ভুক্তভোগী শাহজাহান আলী আরও বলেন, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে যে চাউল আমি পেয়েছি, তা মাথায় নিয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক ও কালীগঞ্জের ইউএনও মহোদয়কে বাস্তবে দেখিয়েছি। আমি ওই ডিলার (পরিবেশক) ওয়ারেজ আলী বুলু’র ডিলার সীপ বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ডিলার (পরিবেশক) ওয়ারেজ আলী বুলু বলেন, আমি শাহাজান আলীকে চাউল দিয়েছি ২০ (বিশ) তারিখে। এতদিন পর অভিযোগ কেন! টাকা নেওয়ার বিষটি স্বীকার করে বলেন, মসজিদ ফান্ডে ১০ টাকা করে নেওয়া হয়, এর বেশি নয়। তিনি আরও বলেন, আমি সব নিয়মকানুন মেনে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি পরিচালনা করছি।
কালীগঞ্জ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম বলেন, আমরা যে চাউল বিতরণ করেছি তা একটু ঘোলা মাত্র। নিচের বস্তায় থাকার কারণে হয়তো ও রকম ঘোলা হয়েছে। তবে গন্ধ বাসনা কিছুই হবেনা। ১ বছর আগে চাউল কেনা হয়েছে তাই একটু ঘোলা।
কালীগঞ্জ ইউএনও এ বিষয়ে বলেন, আমি বদলিকৃত চার্জে দায়িত্ব পালন করছি, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। তবে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি হয়তো বিষয়টা জানেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, আমরা যে চাউল ডিলার (পরিবেশক) কে বিতরণ করার জন্য দেই তা আমাদের কাছে নমুনা থাকে। আমি এখন কিছু বলতে পারবো না চাউল দেখবো তারপর বক্তব্য দিবো। ইউএনও স্যারও আমাকে বিষয়টা বলেছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন