০৪:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

বারহাট্টারে ২৩ বছর খালি পায়ে হাঁটা মুজিব ভক্তের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৯:২৩:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২
  • / ২৯
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ

নেত্রকোনার বারহাট্টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি এবং ১৯৭৫ সালের প্রতিরোধ যোদ্ধা, (বারহাট্টার সিংহ পুরুষ) নামে পরিচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা, সুলতান আহম্মেদ নূরী এর ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আজ (৯ নভেম্বর) বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহম্মেদ নূরীর ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সুলতান আহম্মেদ নূরী স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দিনের শুরুতে, সকাল ৭:০০ ঘটিকায় পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সভাপতি হাবিবুর বাবুল, সাধারণ সম্পাদক, সুভাষ চক্রবর্তী, প্রদীপ কান্তি গুণ, দিপাদ সরকার, দীপা পালসহ আরো অনেকে। পরে তার সহপাঠীদের কবর জিয়ারত করেন নব নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ।
কবর জিয়ারত শেষে, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সুলতান আহম্মেদ নূরী স্মৃতি পরষদের আয়োজনে বিকাল ৪:০০ টায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সুভাষ চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় হাবিবুর রহমান বাবুল এর সভাপতিত্বে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যক্ষ গোলাম রসুল তালুকদার এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বারহাট্টা আওয়ামী লীগের নব নির্বাচিত সভাপতি, খায়রুল কবির খোকন ও সাধারণ সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন। এছাড়াও অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক কমিটির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ গোলাম রসুল তালুকদার মরহুম সুলতান আহম্মেদ নূরী সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, সুলতান আহমেদ নূরী বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আদর্শে গড়া এক মহান পুরুষ এবং ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের বীর সৈনিক। তিনি বারহাট্টা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি নেত্রকোণা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আমি ব্যক্তিগত জীবনে উনার কাছ থেকেই রাজনীতি শিখেছি।

বিশেষ অতিথি খায়রুল কবির খোকন তার বক্তব্যে বলেন, মরহুম সুলতান আহম্মেদ নূরী বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিলো না তখন বিএনপি-জামাত জোটের নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করে দীর্ঘ সময় বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে র্আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে কাউন্সিলের মাধ্যমে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তিনি আমৃত্যু বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। সভাপতি থাকা অবস্থাতেও, তিনি তার পরিবারের জন্য তেমন কিছু করেন নাই বরং নেতাকর্মীদের ভালোর জন্য কাজ করে গেছেন। আমি তার আদর্শকে ধরে রেখে বারহাট্টার নেতাকর্মীদের পাশে বিপদে-আপদে সবসময় থাকবো ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি হাবিবুর রহমান বাবুল আবেগ জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি মরহুম সুলতান আহম্মেদ নূরীর একান্ত কাছের লোক ছিলাম। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ স্ব-পরিবারকে হত্যার প্রতিবাদে ও খুনিদের বিচারের দাবিতে, তিনি জুতা পায়ে না দিয়ে দীর্ঘ ২৩ বছর খালি পায়ে হেঁটেছেন। ১৯৭৫ এর কালো রাতের পর তিনি শপথ করেছিলেন, যেই মাটিতে বঙ্গবন্ধুর রক্তের দাগ লেগে আছে সেই মাটিতে আমি ততদিন খালি পায়ে থাকবো যতদিন আমার নেতা, বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার না হবে।
তিনি আরও বলেন, অবশেষ ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে এবং বঙ্গবন্ধু তনয়া, গণতন্ত্রের মানস কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি তখন জননেতা সুলতান আহমেদ নূরীকে গণভবনে ডেকে নিয়ে বলেন, সুলতান তোমার শপথ তুমি রেখেছো, এখন থেকে তুমি জুতা পায়ে দিবা, এই বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ হাজার টাকা দিয়ে বলেন, এখনি জুতা কিনে এনে পায়ে দাও।

এসময় আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় ও নেত্রকোণা জেলার নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন এবং সঙ্গে আমিও ছিলাম। সেই মূহুর্তে সুলতান আহমেদ নূরীর কান্নায় বঙ্গবন্ধু’র কন্যা, মমতাময়ী নেত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনা সহ সকল নেতৃবৃন্দ অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

বারহাট্টারে ২৩ বছর খালি পায়ে হাঁটা মুজিব ভক্তের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

আপডেট সময় : ০৯:২৩:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ

নেত্রকোনার বারহাট্টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি এবং ১৯৭৫ সালের প্রতিরোধ যোদ্ধা, (বারহাট্টার সিংহ পুরুষ) নামে পরিচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা, সুলতান আহম্মেদ নূরী এর ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আজ (৯ নভেম্বর) বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহম্মেদ নূরীর ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সুলতান আহম্মেদ নূরী স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দিনের শুরুতে, সকাল ৭:০০ ঘটিকায় পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সভাপতি হাবিবুর বাবুল, সাধারণ সম্পাদক, সুভাষ চক্রবর্তী, প্রদীপ কান্তি গুণ, দিপাদ সরকার, দীপা পালসহ আরো অনেকে। পরে তার সহপাঠীদের কবর জিয়ারত করেন নব নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ।
কবর জিয়ারত শেষে, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সুলতান আহম্মেদ নূরী স্মৃতি পরষদের আয়োজনে বিকাল ৪:০০ টায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সুভাষ চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় হাবিবুর রহমান বাবুল এর সভাপতিত্বে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যক্ষ গোলাম রসুল তালুকদার এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বারহাট্টা আওয়ামী লীগের নব নির্বাচিত সভাপতি, খায়রুল কবির খোকন ও সাধারণ সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন। এছাড়াও অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক কমিটির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ গোলাম রসুল তালুকদার মরহুম সুলতান আহম্মেদ নূরী সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, সুলতান আহমেদ নূরী বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আদর্শে গড়া এক মহান পুরুষ এবং ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের বীর সৈনিক। তিনি বারহাট্টা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি নেত্রকোণা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আমি ব্যক্তিগত জীবনে উনার কাছ থেকেই রাজনীতি শিখেছি।

বিশেষ অতিথি খায়রুল কবির খোকন তার বক্তব্যে বলেন, মরহুম সুলতান আহম্মেদ নূরী বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিলো না তখন বিএনপি-জামাত জোটের নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করে দীর্ঘ সময় বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে র্আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে কাউন্সিলের মাধ্যমে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তিনি আমৃত্যু বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। সভাপতি থাকা অবস্থাতেও, তিনি তার পরিবারের জন্য তেমন কিছু করেন নাই বরং নেতাকর্মীদের ভালোর জন্য কাজ করে গেছেন। আমি তার আদর্শকে ধরে রেখে বারহাট্টার নেতাকর্মীদের পাশে বিপদে-আপদে সবসময় থাকবো ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি হাবিবুর রহমান বাবুল আবেগ জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি মরহুম সুলতান আহম্মেদ নূরীর একান্ত কাছের লোক ছিলাম। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ স্ব-পরিবারকে হত্যার প্রতিবাদে ও খুনিদের বিচারের দাবিতে, তিনি জুতা পায়ে না দিয়ে দীর্ঘ ২৩ বছর খালি পায়ে হেঁটেছেন। ১৯৭৫ এর কালো রাতের পর তিনি শপথ করেছিলেন, যেই মাটিতে বঙ্গবন্ধুর রক্তের দাগ লেগে আছে সেই মাটিতে আমি ততদিন খালি পায়ে থাকবো যতদিন আমার নেতা, বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার না হবে।
তিনি আরও বলেন, অবশেষ ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে এবং বঙ্গবন্ধু তনয়া, গণতন্ত্রের মানস কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি তখন জননেতা সুলতান আহমেদ নূরীকে গণভবনে ডেকে নিয়ে বলেন, সুলতান তোমার শপথ তুমি রেখেছো, এখন থেকে তুমি জুতা পায়ে দিবা, এই বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ হাজার টাকা দিয়ে বলেন, এখনি জুতা কিনে এনে পায়ে দাও।

এসময় আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় ও নেত্রকোণা জেলার নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন এবং সঙ্গে আমিও ছিলাম। সেই মূহুর্তে সুলতান আহমেদ নূরীর কান্নায় বঙ্গবন্ধু’র কন্যা, মমতাময়ী নেত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনা সহ সকল নেতৃবৃন্দ অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন