প্রতিষ্ঠার ৮৪ বছর, জরাজীর্ণতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
- আপডেট সময় : ০৬:৪১:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০২৩
- / ৬৭
রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা
নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলাধীন বাউসী ইউনিয়নে ৮৪ বছরের পুরনো একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়’। বাউসী ইউনিয়নের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্বাক্ষী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অনেক পুরাতন এবং শীর্ষ স্থানীয়, উচ্চ শিক্ষার জন্য বিগত ২০০৬ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি মাধ্যমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে।
বারহাট্টা উপজেলার সবচেয়ে পুরাতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বারহাট্টা সি.কে.পি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯১৪ খ্রীঃ প্রতিষ্ঠিত হয়। অপরদিকে বারহাট্টা উপজেলার বুকে দ্বিতীয় পুরাতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি’ বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নে ১৯৩৯ খ্রীঃ প্রতিষ্ঠিত হয়। বারহাট্টা উপজেলার দ্বিতীয় পুরাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি’ অনেক পুরাতন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ‘বাউসী অর্ধচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়’ নামে ‘স্বর্গীয় রাম সুন্দর সাহা’ ১৯৩৯ খ্রীষ্টাবে প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে বিদ্যালয়টি শুধুমাত্র স্কুল শাখা পর্যন্ত ছিল।
পরবর্তীতে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৭ খ্রীষ্টাব্দে সাবেক সচিব মো. এম. এ খালেক নিজ প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টিকে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করেন এবং প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করেন ‘বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়’। এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ে অনেক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং দেশ-বিদেশের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি পড়াশোনা করেছেন।
স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে শ্রীযুক্ত বাবু ইশ্বর চন্দ্র সাহা (১৯৩৯ খ্রীঃ), প্রথম প্রধান শিক্ষক বাবু, রমেশ চন্দ্র রায় (১৯৩৯ খ্রীঃ) নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৯৭ খ্রীঃ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর নন-এমপিও প্রভাষকগণ সরকারী বেতন-ভাতাদি না পাওয়ায় তারা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন বাবদ প্রাপ্ত সামান্য টাকা দিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করতেন। অবশেষ ২০০৪ খ্রীঃ কলেজ পর্যায়ের শিক্ষকরা এমপিওভূক্ত হওয়ার পর শিক্ষকদের কষ্ট লাঘব হয়।
কলেজ প্রতিষ্ঠাতার পর প্রথম সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন সাবেক সচিব মো. এম. এ খালেক এবং অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব পালন করেন মো. আঃ করিম। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি কোন সংষ্কার না হওয়ায় স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস রুম, বিজ্ঞানাগার, এমনকি শিক্ষকদের মিলনায়তনটিও বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়ে গেছে। এমতাবস্থায় ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকগণ ঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছেন।
বর্তমান অধ্যক্ষ তাহেরুল ইসলাম অনেক চেষ্টা তদবির করেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির জন্য কোন সাহায্য সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে পারেননি। তিনি অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলেন, প্রায় ৮৪ বছর চলে গেলেও প্রতিষ্ঠানটির তেমন কোন উন্নয়ন হয় নি। তিনি আরও বলেন, আমার স্বপ্ন অবসরে যাওয়ার আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে এহেন জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে মুক্ত করে একটি আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা। তাই তিনি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।