১০:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারা প্রাথমিকের সেই শিক্ষক বরখাস্ত

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৯:০২:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ নভেম্বর ২০২২
  • / ৭১

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যশোর সংবাদদাতা

যশোরের চৌগাছায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারায় বহিলাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক নারগিস পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অপর এক অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেনকেও। বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

জানা যায়, গত রোববার (৬ নভেম্বর) দুপুরে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুর রহমান ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। তিনি যখন অফিসে বসে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন সহকারী শিক্ষক নারগিস পারভীন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী পান্না খাতুনকে একটি ঝাটা এনে দিতে এবং আরেক শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের সিঁড়ি ঘর ঝাড়ু দিতে বলেন। তবে পান্না ঝাটা এনে রাখলেও অন্য শিক্ষার্থী ঝাড়ু দেয়নি। পান্নাকে ডেকে শিক্ষক নার্গিস বলেন, ঝাড়ু দিসনি ঝাটা দিয়ে তোর মুখ ভেঙে দেব। তখন পান্না বলে, ‘আপনি কি আমার মুখ বানিয়ে দিয়েছেন? ঝাটা দিয়ে ভেঙে দেবেন?’ তখন শিক্ষক নার্গিস মেয়েটির বাম কানে তিনটি থাপ্পড় মারেন। এসময় মেয়েটি কান্নাকাটি করলে নার্গিস পারভীন তাকে আরও কয়েকটি থাপ্পড় মেরে বলেন, ‘লাগেনি, অভিনয় করছে।’ পরে মেয়েটি বাড়ি গিয়ে না বললেও সোমবার সন্ধ্যার দিকে মেয়ের গায়ে জ্বর এবং কানে যন্ত্রণার কথা শুনে তার মা জানতে চাইলে সে সব খুলে বলে।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার পান্নাকে তার মা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করতে গেলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মঙ্গলবার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় পঞ্চম ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এবং তাদের অভিভাবকেরা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেন ও নারগিস পারভীন প্রতিনিয়তই শিক্ষার্থীদের কারণে-অকারণে মারধর করেন এবং প্রধান শিক্ষকসহ ওই দুই সহকারী শিক্ষক অশ্লীল ভাষায় শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেন প্রতিনিয়তই তাদের মারপিট করেন এবং পানি মুখে নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির মেয়ে শিক্ষার্থীদের গায়ে কুলি করেন। এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে বলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। উল্টো তিনিও তাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বুধবার সকালে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নারগিস পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পূর্বের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেনকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারা প্রাথমিকের সেই শিক্ষক বরখাস্ত

আপডেট সময় : ০৯:০২:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ নভেম্বর ২০২২
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যশোর সংবাদদাতা

যশোরের চৌগাছায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারায় বহিলাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক নারগিস পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অপর এক অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেনকেও। বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

জানা যায়, গত রোববার (৬ নভেম্বর) দুপুরে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুর রহমান ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। তিনি যখন অফিসে বসে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন সহকারী শিক্ষক নারগিস পারভীন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী পান্না খাতুনকে একটি ঝাটা এনে দিতে এবং আরেক শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের সিঁড়ি ঘর ঝাড়ু দিতে বলেন। তবে পান্না ঝাটা এনে রাখলেও অন্য শিক্ষার্থী ঝাড়ু দেয়নি। পান্নাকে ডেকে শিক্ষক নার্গিস বলেন, ঝাড়ু দিসনি ঝাটা দিয়ে তোর মুখ ভেঙে দেব। তখন পান্না বলে, ‘আপনি কি আমার মুখ বানিয়ে দিয়েছেন? ঝাটা দিয়ে ভেঙে দেবেন?’ তখন শিক্ষক নার্গিস মেয়েটির বাম কানে তিনটি থাপ্পড় মারেন। এসময় মেয়েটি কান্নাকাটি করলে নার্গিস পারভীন তাকে আরও কয়েকটি থাপ্পড় মেরে বলেন, ‘লাগেনি, অভিনয় করছে।’ পরে মেয়েটি বাড়ি গিয়ে না বললেও সোমবার সন্ধ্যার দিকে মেয়ের গায়ে জ্বর এবং কানে যন্ত্রণার কথা শুনে তার মা জানতে চাইলে সে সব খুলে বলে।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার পান্নাকে তার মা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করতে গেলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মঙ্গলবার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় পঞ্চম ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এবং তাদের অভিভাবকেরা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেন ও নারগিস পারভীন প্রতিনিয়তই শিক্ষার্থীদের কারণে-অকারণে মারধর করেন এবং প্রধান শিক্ষকসহ ওই দুই সহকারী শিক্ষক অশ্লীল ভাষায় শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেন প্রতিনিয়তই তাদের মারপিট করেন এবং পানি মুখে নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির মেয়ে শিক্ষার্থীদের গায়ে কুলি করেন। এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে বলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। উল্টো তিনিও তাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বুধবার সকালে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নারগিস পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পূর্বের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সহকারী শিক্ষক আসলাম হোসেনকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন