০২:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

সড়ক সংস্কারের এক সপ্তাহের মধ্যে উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং এলাকাবাসির ক্ষোভ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৬:২৭:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩
  • / ৬৭

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মাহমুদ হাসান রনি, দামুড়হুদা:

দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই উপজেলার কোমরপুরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীরমুক্তিযুদ্ধা এম মফিজুর রহমান সড়কে হাত দিতেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার কার্পেটিং। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুরু থেকে সড়কটিতে নিম্নমানের কাজ হচ্ছিল। সকল বাধা উপেক্ষা করে ঠিকাদার কাজ অব্যাহত রাখেন।তবে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, কার্যাদেশ অনুযায়ীই ঠিকাদার কাজ করেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সড়কের বিটুমিন ও কার্পেটিং তুলে এনে আমাদের ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে।
চুয়াডাঙ্গাএলজিইডি সূত্রে জানাগেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের কোমরপুর সড়কের ৯শ১৪ মিটার পুনঃসংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ কাজটি পান চুয়াডাঙ্গার ঠিকাদার শেখ ট্রেডার্স। ২০২৩ সালের শুরুতেই কাজ শুরু শুরু হয়। চলতি মাসের ১০ মার্চ কাজ শেষ হয়েছে। এলজিইউডি কার্যাদেশ অনুযায়ী চলতি বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের আওতায় সড়ক সংস্কারের কাজটি দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি দামুড়হুদা )।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংস্কার কাজ শুরুর পর থেকেই নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন একাধিকার উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের পাথর, ইট, বালু, খোয়া ও ম্যাকাডম দিয়ে কাজ করছিলেন ঠিকাদার। বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ জানালেও ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ শেষ করেছেন। এর ফলে কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে আসছে সড়কের পিচ। নিম্নমানের এই কাজ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তারা বলেন নতুন সড়কের বিভিন্ন স্থানের কিছু অংশে পাতলা পিচ উঠে যাচ্ছে।কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মন্টু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যখন এই সড়কের খুঁড়াখুঁড়ির কাজ চলে, তখন আমি কাজের অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে কাজের তদারকি করতে আসি। এসে রাস্তা সংস্কারের কাজে নিন্মমানের ইট-পাথর বিটুমিন দেওয়ার সত্যতা পায়। পরে বিষয়টি নিয়ে রাস্তাটি সংস্কার কাজের ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলি। পরে তারা জানায়- এখনও কাজ শেষ হয়নি। সঠিকমানে কাজ বুঝে না পেলে আমার থেকে কাজ বুঝে নিবেন। কিন্তুু সময়ের আগেই ঠিকাদার কাজ শেষ করে চলে গিয়েছে।কোমর পুর গ্রামের বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক রবিউল হক, হাবিবুর রহমান,খবির উদ্দিন, আবু জাফর, শিরিন, আক্তারুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,সরকার এতো টাকা খরচ করে রাস্তা করেছে, সেখানে ঠিকাদারদের দূর্নীতির কারণে সব টাকা জলে গেল। হাত দিয়ে রাস্তার কার্পেট তোলা যাচ্ছে, সেখানে ভারি যানবাহন কিভাবে চলাচল করবে। সরকার রাস্তা করতে কি কম টাকা দিয়েছে? এমন কাজের ফলে ঠিকাদারের জন্য সরকারের বদনাম হচ্ছে। নিন্মমানের পাথর, ইট, বালু, খোয়া ব্যবহার করে আমাদের এই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী করে ঠিকাদার চলে গেছে। আমরা সরকারের কাছে এতো বড় অনিয়মের বিচার চাই।এই বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা এলজিইডি উপ-সহকারী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, এই সড়কের দেখভালের দায়িত্বে আমি না। এই সড়কের দায়িত্বে উপ সহকারী প্রকৌশলী আক্তারুল ইসলাম।আমরা সরেজমিনে যাবো, দেখার পর ব্যবস্হা নিবো। ঠিকাদার হাফিজুর রহমান হাপু জানান আমাদের কাছে থেকে দামুড়হুদা উপজেলা এলজিইডি কাজ বুঝে নিয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ জানান সড়কটি পরিদর্শন করার পর ব্যবস্হা নেয়া হবে। এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা জানান বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করার পর, কাজের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্হা নেয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

সড়ক সংস্কারের এক সপ্তাহের মধ্যে উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং এলাকাবাসির ক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৬:২৭:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মাহমুদ হাসান রনি, দামুড়হুদা:

দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই উপজেলার কোমরপুরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীরমুক্তিযুদ্ধা এম মফিজুর রহমান সড়কে হাত দিতেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার কার্পেটিং। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুরু থেকে সড়কটিতে নিম্নমানের কাজ হচ্ছিল। সকল বাধা উপেক্ষা করে ঠিকাদার কাজ অব্যাহত রাখেন।তবে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, কার্যাদেশ অনুযায়ীই ঠিকাদার কাজ করেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সড়কের বিটুমিন ও কার্পেটিং তুলে এনে আমাদের ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে।
চুয়াডাঙ্গাএলজিইডি সূত্রে জানাগেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের কোমরপুর সড়কের ৯শ১৪ মিটার পুনঃসংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ কাজটি পান চুয়াডাঙ্গার ঠিকাদার শেখ ট্রেডার্স। ২০২৩ সালের শুরুতেই কাজ শুরু শুরু হয়। চলতি মাসের ১০ মার্চ কাজ শেষ হয়েছে। এলজিইউডি কার্যাদেশ অনুযায়ী চলতি বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের আওতায় সড়ক সংস্কারের কাজটি দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি দামুড়হুদা )।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংস্কার কাজ শুরুর পর থেকেই নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন একাধিকার উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের পাথর, ইট, বালু, খোয়া ও ম্যাকাডম দিয়ে কাজ করছিলেন ঠিকাদার। বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ জানালেও ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ শেষ করেছেন। এর ফলে কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে আসছে সড়কের পিচ। নিম্নমানের এই কাজ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তারা বলেন নতুন সড়কের বিভিন্ন স্থানের কিছু অংশে পাতলা পিচ উঠে যাচ্ছে।কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মন্টু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যখন এই সড়কের খুঁড়াখুঁড়ির কাজ চলে, তখন আমি কাজের অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে কাজের তদারকি করতে আসি। এসে রাস্তা সংস্কারের কাজে নিন্মমানের ইট-পাথর বিটুমিন দেওয়ার সত্যতা পায়। পরে বিষয়টি নিয়ে রাস্তাটি সংস্কার কাজের ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলি। পরে তারা জানায়- এখনও কাজ শেষ হয়নি। সঠিকমানে কাজ বুঝে না পেলে আমার থেকে কাজ বুঝে নিবেন। কিন্তুু সময়ের আগেই ঠিকাদার কাজ শেষ করে চলে গিয়েছে।কোমর পুর গ্রামের বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক রবিউল হক, হাবিবুর রহমান,খবির উদ্দিন, আবু জাফর, শিরিন, আক্তারুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,সরকার এতো টাকা খরচ করে রাস্তা করেছে, সেখানে ঠিকাদারদের দূর্নীতির কারণে সব টাকা জলে গেল। হাত দিয়ে রাস্তার কার্পেট তোলা যাচ্ছে, সেখানে ভারি যানবাহন কিভাবে চলাচল করবে। সরকার রাস্তা করতে কি কম টাকা দিয়েছে? এমন কাজের ফলে ঠিকাদারের জন্য সরকারের বদনাম হচ্ছে। নিন্মমানের পাথর, ইট, বালু, খোয়া ব্যবহার করে আমাদের এই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী করে ঠিকাদার চলে গেছে। আমরা সরকারের কাছে এতো বড় অনিয়মের বিচার চাই।এই বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা এলজিইডি উপ-সহকারী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, এই সড়কের দেখভালের দায়িত্বে আমি না। এই সড়কের দায়িত্বে উপ সহকারী প্রকৌশলী আক্তারুল ইসলাম।আমরা সরেজমিনে যাবো, দেখার পর ব্যবস্হা নিবো। ঠিকাদার হাফিজুর রহমান হাপু জানান আমাদের কাছে থেকে দামুড়হুদা উপজেলা এলজিইডি কাজ বুঝে নিয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ জানান সড়কটি পরিদর্শন করার পর ব্যবস্হা নেয়া হবে। এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা জানান বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করার পর, কাজের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্হা নেয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন