লালমনিরহাটে আকাশ ক্লিনিকের মত অলিতে-গলিতে অবৈধ ক্লিনিক ছড়াছড়ি দেখার কেউ নেই!
- আপডেট সময় : ০৫:০৭:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩
- / ৫৩
আশরাফুল হক, লালমনিরহাট:
সারা দেশের ন্যায় লালমনিরহাটেও অলিতে-গলিতে চিকিৎসা সেবার নামে অবাধে অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছে অসংখ্য অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা গ্রহণ নিয়ে অনেকটা চোর-পুলিশ খেলা চলছে। জেলা জুড়ে ব্যাংগের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অসংখ্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক। যার অধিকাংশ নেই বৈধ কাগজপাতি। ডাক্তারদের সাথে যোগসাজশে ক্লিনিক মালিকগন চিকিৎসা সেবাকে পরিনত করেছে ব্যবসা নীতিতে।
স্বাস্হ্য প্রশাসন এগুলো ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। এমন অবস্হার মধ্যে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন স্হানীয় অনেকে। বেশির ভাগ অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করেন না। এ সব অবৈধ ক্লিনিকে প্রায়ই ভুল চিকিৎসার ঘটনা ঘটছে। সিজার দরকার নেই, কিন্তু তারপরও সিজার হচ্ছে। নবজাতক শিশুকে টেনেহিঁচড়ে বের করা হচ্ছে। সিজার করতে গিয়ে বিভিন্ন অঙ্গহানির ঘটনাও ঘটছে। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো অনেকটা কসাইখানার মতো। অনেক ক্লিনিকে বসেন ভুয়া ডাক্তার। আবার বিশেষজ্ঞ কোনো ডাক্তার থাকে না। তাদের ভুল চিকিৎসায় অনেকে মারা গেছেন। এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টাকা বেশি নিলেও সেবার মান খুবই নিম্নমানের। কোটি কোটি টাকা তারা কামিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কেউ তাদের কিছুই করতে পারছে না। তাদের খুঁটির জোর কোথায়? তাই এসব
অবৈধ ক্লিনিক গুলোকে মানুষ মারার ক্লিনিক হিসেবে আখ্যায়িত করেন অনেকে। এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তারা নিয়মিত মাসোহারা পেয়ে থাকেন অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিকের কাছ থেকে। সরকারি হাসপাতালে রোগী গেলে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় বেসরকারি ক্লিনিকে ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। অথচ সরকারি হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা আছে। যা অবৈধ ক্লিনিকে ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেই। তারপরও সেখানে পাঠানো হয়। এক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালে আগত রোগীদের পাঠিয়ে ৫০ ভাগ কমিশন পান এক শ্রেণির ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ানসহ কর্মচারীরা। তেমনি একটা ক্লিনিকের নাম আকাশ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সেখানে প্রতিনিয়ত ভুল চিকিৎসায়, ভুল অপারেশন করে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে আসছে। রবিবার (১২ ই মার্চ) দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে অপারেশন টেবিলে মৃত্যু হয় সুমতি রানীর। সুমতি রানী’র মৃত্যুকে ধাপাচাপা দেওয়ার জন্যই রাতেই মৃত্যু ব্যক্তির পরিবারের সাথে রফাদফা করে ফেলেন ক্লিনিক কতৃপক্ষ। শুধু এ ঘটনায় নয়-গত মাসেও ভুল চিকিৎসায় ওই আকাশ ক্লিনিকে বানভাসা এলাকার আরও একজন জীবন দিয়েছে। সেটিও তরিঘরি করে অর্থের বিনিময়ে রফাদফা করে ধামাচাপা দিয়েছেন ক্লিনিক কতৃপক্ষ।
এ বিষয়ে আকাশ ক্লিনিকের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন,বিষয়টি অনাঙ্ক্ষিত,আমার পরিচিত হওয়ায় রাতেই মৃত্যু ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে আপোষ মিমাংসা করেছি।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ নির্মলেন্ধু রায় বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, আমরা সমস্ত জেলা জুড়ে অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবো। তিনি আরও বলেন, আকাশ ক্লিনিকের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।