সিদ্ধিরগঞ্জে ডাকাতির ঘটনায় আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার
- আপডেট সময় : ০৮:০৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩
- / ৭৪
প্রতিদিনের নিউজ:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ৩৮ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি খেলনা পিস্তল ও বিডি পুলিশ লিখা দুইটি নকল জ্যাকেট। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে মহাসড়কে ডাকাতি করত।
রবিবার, ১২ই মার্চ দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডস্থ জেলা পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান পিবিআই এর পুলিশ সুপার মো: মনিরুল ইসলাম।
গ্রেপ্তাররা হলেন, বরগুনা জেলা সদরের জকিরতব এলাকার শাহআলমের ছেলে সাইফুল ইসলাম স্বপন (৪৯), একই জেলার হলদিবাড়ীয়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে সিদ্ধিরগঞ্জের পূর্ব সানার পাড় এলাকার ভাড়াটিয়া রতন (৩৬) ও তার ভাই বাবুল হোসেন (৪৫), কুমিল্লা জেলার বাঙ্গুরাবাজর থানার পেন্নাইয়া গ্রামের মৃত নয়ন মিয়ার ছেলে নূর ইসলাম (৩৬), চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার কবি রূপসা গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে মোঃ রাসেল(৩৪), একই জেলার কচুয়া থানার সফিবাদ এলাকার মৃত আলি আশরাফের ছেলে শাহরিয়ার ওরফে মোফাজ্জল (৩১) ও আক্তার হোসেনের ছেলে সালাউদ্দিন (২৭)। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জ, ব্রাহ্মনবাড়ীয়া, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পুলিশ সুপার।
তিনি জানান, চট্টগ্রামের লাঙ্গলমোড়ার পরিতোষ চন্দ্র ধর (৫০) নামে একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী গত ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার তাঁতি বাজারে ৬০ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করেন ৩৮ লাখ টাকা। তিনি টাকা নিয়ে সায়েদাবাদ থেকে খাদিজা পরিবহনের গাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। গাড়িটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল কাচপুর সেতুর পশ্চিম পাশ এলাকায় পৌঁছলে একদন ডাকাত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সমস্থ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এঘটনায় ওই ব্যবসায়ী ২৩ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ডাকাতি মামলা করেন।
পুলিশ সুপার জানান, জেলা পুলিশ কর্তৃক আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশের সদর দপ্তরের নির্দেশে একই বছরের ২২ আগস্ট মামলাটি পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলা তনন্তের দায়িত্ব পান। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন এসআই (নিঃ) কামরুল হাসান। দীর্ঘ তদন্তের পর ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গত ২১ ফেব্রুয়ারি একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে বিভিন্ন জেলা থেকে অন্যদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেন। পরে আদালতে হাজির করা হলে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ডাকাতদের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, বাদী স্বর্ণ বিক্রির পর তাঁতী বাজার থেকেই সালাউদ্দীন তাকে অনুসরন করতে থাকে। বাসে উঠার পর সালাউদ্দীন, শাহারিয়ারকে ফোনে বাসের নাম্বারসহ সকল তথ্য জানায়।
খবর পেয়ে শাহারিয়ার, রতন, বাবুল হোসেন,সাইফুল ইসলাম স্বপন ও নূর ইসলাম কাচপুর সেতুর পশ্চিম পাশে অবস্থান নেয়। বাসটি যথা স্থানে পৌঁছলে বাবুল, নূর ইসলাম ও স্বপন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় গাড়ীটি থামায়। তখন অন্যরাসহ গাড়ীতে উঠে বাদীর নিকটে অবৈধ টাকা আছে বলে তাকে জোর পূর্বক টাকার ব্যাগসহ গাড়ী থেকে নামিয়ে টাকার ব্যাগ নিয়ে মোটর সাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। পরে স্বপনের বাড়ীতে গিয়ে লুন্ঠিত টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।