১১:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

ভিক্ষুকের কোলের শিশু বাচ্চার পরিচয় মিলছে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৫:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩
  • / ৬৮

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নাজিম উদ্দিন রানা:

লক্ষ্মীপুরে ঋণের কিস্তি পরিশোধের মানসিক দুঃশ্চিন্তা থেকেই ভুলে বৃদ্ধা ভিক্ষুক সালমা বেগেমের (৭০) কাছে ৩ মাসের শিশু মাহিনকে রেখে যান মা। বৃহস্পতিবার রাতে লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ, পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) লক্ষ্মীপুর জেলা সভানেত্রী সেলিনা মাহফুজ, ডিআইওয়ান মোঃ আজিজুর রহমান মিয়া, লক্ষ্মীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোসলেহ উদ্দিন ও শিশুটির দাদা হাফিজ উল্যার উপস্থিতিতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি এভাবেই বর্ণনা করেছেন শিশুটির মা সুরমা বেগম (৩২)।
শিশু মাহিন রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের পূর্ব চরসীতা গ্রামের সৌদি প্রবাসী মিরন হোসেনের ছেলে। মিরন-সুরমা দম্পতির সংসারে আরও ৩ মেয়ে রয়েছে। তারা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
স্বজনরা জানায়, শিশুটির বাবা মিরন দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে রয়েছেন। ৪ বছর আগে তিনি এসে ধারদেনা ও ঋণ নিয়ে ঘর নির্মাণ করেন। প্রায় ৭-৮ মাস আগে ফের তিনি সৌদি চলে যান। কিন্তু ঠিকমতো ঋণের টাকা পরিশোধ করছিলেন না তিনি। এতে তার স্ত্রী সুরমা ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েন। এনিয়ে প্রায়ই মোবাইলফোনে স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হত।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন,এখনই আমরা শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করছি না। আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে। শিশুটি বেলাল হোসেন ও নিশি আক্তার দম্পতির হেফাজতে রয়েছেন।
সুরমা বেগম জানিয়েছেন, তার বাবার বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের মিয়ারবেড়ি এলাকায়। বুধবার (১ মার্চ) দুপুর ২ টার দিকে বাবার বাড়ি থেকে বাসযোগে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর এলাকার ভাড়া বাসায় আসছিলেন। বাস থেকে তিনি শিশুটিকে নিয়ে লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পৌরসভার মজুপুর এলাকায় আধুনিক হাসপাতালের সামনে নামেন। এর আগে বাসে তার স্বামীর সঙ্গে ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে মোবাইলফোনে কথা কাটাকাটি হয়। এতে দুঃশ্চিন্তা থেকে শিশুটিকে তিনি ভিক্ষুকের কাছে রেখে চলে যান। মানসিক দুঃশ্চিন্তা থেকে তিনি ভুলে শিশুটিকে নেননি বলে জানান।
পরে ভিক্ষুক সালমা বেগমের কাছ থেকে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন মাহমুদের ভাই বেলালের পরিবারের হেফাজতে রাখা হয়।
সংবাদ পেয়ে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং ভিক্ষুকের কোলে রেখে যাওয়া বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করেন। তিনি শিশুটির খোঁজ খবর নেন এবং শিশুটির পরিচয় শনাক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

ভিক্ষুকের কোলের শিশু বাচ্চার পরিচয় মিলছে

আপডেট সময় : ০৪:৩৫:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নাজিম উদ্দিন রানা:

লক্ষ্মীপুরে ঋণের কিস্তি পরিশোধের মানসিক দুঃশ্চিন্তা থেকেই ভুলে বৃদ্ধা ভিক্ষুক সালমা বেগেমের (৭০) কাছে ৩ মাসের শিশু মাহিনকে রেখে যান মা। বৃহস্পতিবার রাতে লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ, পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) লক্ষ্মীপুর জেলা সভানেত্রী সেলিনা মাহফুজ, ডিআইওয়ান মোঃ আজিজুর রহমান মিয়া, লক্ষ্মীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোসলেহ উদ্দিন ও শিশুটির দাদা হাফিজ উল্যার উপস্থিতিতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি এভাবেই বর্ণনা করেছেন শিশুটির মা সুরমা বেগম (৩২)।
শিশু মাহিন রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের পূর্ব চরসীতা গ্রামের সৌদি প্রবাসী মিরন হোসেনের ছেলে। মিরন-সুরমা দম্পতির সংসারে আরও ৩ মেয়ে রয়েছে। তারা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
স্বজনরা জানায়, শিশুটির বাবা মিরন দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে রয়েছেন। ৪ বছর আগে তিনি এসে ধারদেনা ও ঋণ নিয়ে ঘর নির্মাণ করেন। প্রায় ৭-৮ মাস আগে ফের তিনি সৌদি চলে যান। কিন্তু ঠিকমতো ঋণের টাকা পরিশোধ করছিলেন না তিনি। এতে তার স্ত্রী সুরমা ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েন। এনিয়ে প্রায়ই মোবাইলফোনে স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হত।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন,এখনই আমরা শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করছি না। আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে। শিশুটি বেলাল হোসেন ও নিশি আক্তার দম্পতির হেফাজতে রয়েছেন।
সুরমা বেগম জানিয়েছেন, তার বাবার বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের মিয়ারবেড়ি এলাকায়। বুধবার (১ মার্চ) দুপুর ২ টার দিকে বাবার বাড়ি থেকে বাসযোগে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর এলাকার ভাড়া বাসায় আসছিলেন। বাস থেকে তিনি শিশুটিকে নিয়ে লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পৌরসভার মজুপুর এলাকায় আধুনিক হাসপাতালের সামনে নামেন। এর আগে বাসে তার স্বামীর সঙ্গে ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে মোবাইলফোনে কথা কাটাকাটি হয়। এতে দুঃশ্চিন্তা থেকে শিশুটিকে তিনি ভিক্ষুকের কাছে রেখে চলে যান। মানসিক দুঃশ্চিন্তা থেকে তিনি ভুলে শিশুটিকে নেননি বলে জানান।
পরে ভিক্ষুক সালমা বেগমের কাছ থেকে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন মাহমুদের ভাই বেলালের পরিবারের হেফাজতে রাখা হয়।
সংবাদ পেয়ে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং ভিক্ষুকের কোলে রেখে যাওয়া বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করেন। তিনি শিশুটির খোঁজ খবর নেন এবং শিশুটির পরিচয় শনাক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন