০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

দুইমাস মাছ ধরা নিষেধ মেঘনা নদীতে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৬:০৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩
  • / ৮২

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নাজিম উদ্দিন রানা:

লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীতে বুধবার ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সময় ওই এলাকায় নদীর মাছ কেনাবেচা, মজুত ও পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
‘মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী মৎস্য অধিদপ্তর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ উপলক্ষে জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় ইলিশ সম্পদ রক্ষায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানানো হয়, ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশ মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে জেলার রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত মেঘনার নদীর ১’শত কিলোমিটার ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মেঘনার অভয়াশ্রমে মাছ ধরা বন্ধ রাখার জন্য জেলেপল্লীসহ মাছঘাট এবং নদীর তীরবর্তী এলাকায় বিভিন্ন হাটবাজারে সচেতনতামূলক সভা, লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার ও মাইকিং করার মাধ্যমে এলাকায় প্রচার-প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। এছাড়া মাছ ধরা প্রতিরোধের জন্য মোবাইল কোর্টও পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস উল্লিখিত অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকে।এসময় ইলিশের অভয়াশ্রমসমূহে ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। মৎস্য সুরক্ষা ও আইন ১৯৫০ এর ধারা ৩ এর উপধারা ৫ আইন অমান্যকারীকে কমপক্ষে ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে ফেব্রুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত ৪ মাস জেলে পরিবার গুলোকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। জেলার নিবন্ধিত ২৮ হাজর ৩৪৪ জেলে পরিবারের জন্য ৪ হাজার ৫৩৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এছাড়া নিষিদ্ধ কালীন সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে ২০ টি আদর্শ গ্রামে জেলেদের ২০টি গ্রুপ করে গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রত্যোক গ্রুপকে ১০ লাখ টাকা করে সুদ মক্ত ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া হয়েছে।
ইলিশ জেলেদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ইতিমধ্যে ১৬০টি বকনা গরু বিতরণ করা হয়েছে এবং আরো ৫ শতাধিক বকনা গরু বিতরণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, প্রশাসন ও কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশ ও মৎস্য বিভাগ যৌথ ভাবে নদীতে অভিযান পরিচালনা করবে।
জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, আগামী দুই মাস লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রাখার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আইন ভঙ্গ করে নদীতে মাছ শিকার করলে অভিযান করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতে বিতরণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

দুইমাস মাছ ধরা নিষেধ মেঘনা নদীতে

আপডেট সময় : ০৬:০৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নাজিম উদ্দিন রানা:

লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীতে বুধবার ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সময় ওই এলাকায় নদীর মাছ কেনাবেচা, মজুত ও পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
‘মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী মৎস্য অধিদপ্তর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ উপলক্ষে জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় ইলিশ সম্পদ রক্ষায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানানো হয়, ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশ মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে জেলার রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত মেঘনার নদীর ১’শত কিলোমিটার ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মেঘনার অভয়াশ্রমে মাছ ধরা বন্ধ রাখার জন্য জেলেপল্লীসহ মাছঘাট এবং নদীর তীরবর্তী এলাকায় বিভিন্ন হাটবাজারে সচেতনতামূলক সভা, লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার ও মাইকিং করার মাধ্যমে এলাকায় প্রচার-প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। এছাড়া মাছ ধরা প্রতিরোধের জন্য মোবাইল কোর্টও পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস উল্লিখিত অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকে।এসময় ইলিশের অভয়াশ্রমসমূহে ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। মৎস্য সুরক্ষা ও আইন ১৯৫০ এর ধারা ৩ এর উপধারা ৫ আইন অমান্যকারীকে কমপক্ষে ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে ফেব্রুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত ৪ মাস জেলে পরিবার গুলোকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। জেলার নিবন্ধিত ২৮ হাজর ৩৪৪ জেলে পরিবারের জন্য ৪ হাজার ৫৩৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এছাড়া নিষিদ্ধ কালীন সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে ২০ টি আদর্শ গ্রামে জেলেদের ২০টি গ্রুপ করে গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রত্যোক গ্রুপকে ১০ লাখ টাকা করে সুদ মক্ত ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া হয়েছে।
ইলিশ জেলেদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ইতিমধ্যে ১৬০টি বকনা গরু বিতরণ করা হয়েছে এবং আরো ৫ শতাধিক বকনা গরু বিতরণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, প্রশাসন ও কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশ ও মৎস্য বিভাগ যৌথ ভাবে নদীতে অভিযান পরিচালনা করবে।
জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, আগামী দুই মাস লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রাখার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আইন ভঙ্গ করে নদীতে মাছ শিকার করলে অভিযান করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতে বিতরণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন