মুর্যালে বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে এমপি-চেয়ারম্যান এর ছবি
- আপডেট সময় : ০৯:২২:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২
- / ১০৩
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
সুনামগঞ্জের নব-গঠিত মধ্যনগর উপজেলায় সরকারি টাকায় নির্মিত ম্যুরালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দিয়ে বসানো হয়েছে সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তার আপন ভাই ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকনের ছবি। বুধবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্মানাধীন এ মূর্যালের ছবি প্রকাশ্যে আসলে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলের দেয়া তথ্যনুযায়ী, এবছরের ২৩ জুন মেসার্স রানা ট্রেডার্সকে নয় লাখ ৯৯ হাজার ৭২৪ টাকা চুক্তিমূল্যে মূর্যালটি বানাতে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ৩০ দিনের মধ্যে মধ্যনগর ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে ম্যুরাল নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। ম্যুরালের ডিজাইনে একপাশে বঙ্গবন্ধু ও আরেকপাশে কেবল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি থাকার কথা। তবে সেখানে কোন অনুমতি ছাড়াই স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তার ভাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকনের ছবি যুক্ত করা হয়েছে।
মধ্যনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ সরকার বলেন, এখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি সম্বলিত মুর্যাল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন দেখি এখানে এমপি আর তার ভাই চেয়ারম্যানের ছবি। এটা শিষ্টাচার বিরোধী কাজ, বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে দিলেন অথচ তারা সবাই নৌকা মার্কায় ভোট পেয়েই জয়ী হয়েছিলেন। আমি নিজে ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি, তিনিও বলেছেন এখানে এই ডিজাইন ছিল না, তারা নিজ ইচ্ছায় এমন পরিবর্তন করেছে।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট খায়রুল কবির রুমেন বলেন, বিষয়টি আমার নজরেও এসেছে। একজন সরকার দলীয় এমপি ও চেয়ারম্যান এমন কাজ করতে পারেন না, বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে এমপি সাহেবও কিভাবে নিজের ছবি বসালেন সেটা আমার বুঝে আসে না। এ কারণে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হওয়া উচিত এমপি সাহেব ও তার ভাইয়ের।
ধর্মপাশা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির হাসান বলেন, যেহেতু মধ্যনগর নতুন উপজেলা। তবে এখনও প্রশাসনিক দাপ্তরিক সব কাজ হয় ধর্মপাশা থেকেই। মধ্যনগরে যে মুর্যাল তৈরি হচ্ছে, সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি থাকার কথা ছিল। কিন্তু এভাবে সরকারি টাকায় নির্মিত ডিজাইনের পরিবর্তন করা যায় না। এটি এডিপির বরাদ্দে প্রায় ১০ লাখ টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে। এই ডিজাইন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের করা। এটি পরিবর্তন করতে হলে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ডিজাইন পরিবর্তনের অনুমোদনের জন্য লিখতে হবে। ওখান থেকে অনুমতি পাওয়া গেলেই কেবল ডিজাইন পরিবর্তন করা যায়।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এটি জানার পর আজকে আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। কারণ এটা হতে পারে না, সরকারি টাকায় এভাবে ডিজাইন পরিবর্তনের কোন অনুমতি বা কিছুই আমার নলেজে নেই।