০১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ফায়ার সার্ভিসে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিলো রউফ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০১:৪৫:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৬৮

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট:

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে চাকুরীর জন্য টাকা দিয়েও মেলেনি চাকুরী। টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে পেলেন গাড়ি চালকের মারপিট। থানায় অভিযোগের ৩ সপ্তাহেও কোন প্রতিকার মেলেনি ভুক্তভোগী সিরাজ ইসলামের। তিনি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ব্যাংকান্দা গ্রামের মমিনুর ইসলামের ছেলে। অভিযুক্ত গাড়ি চালক আব্দুর রউফ আদিতমারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের গাড়ি চালক পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি কুড়িগ্রামের বাসিন্দা।
অভিযোগে জানা গেছে, পাটগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে কর্মরত ছিলেন গাড়ি চালক আব্দুর রউফ। গত ২০২০ সালে সিরাজ ইসলামকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চালক পদে চাকুরী দেয়ার নাম করে ১১লাখ ১০ হাজার টাকা গ্রহন করেন আব্দুর রউফ। চালক হিসেবে লাইসেন্স ছিল না সিরাজের। ভাড়ি যান চালনার বৈধ লাইসেন্স পেতে ফরিদপুর নিয়ে যান এবং কোন রকম পরীক্ষা ছাড়াই লাইসেন্স পাইয়ে দেন। পরবর্তিতে নিজ গাড়িতেই সিরাজকে গাড়ি চালানো শিখান রউফ।
লাইসেন্স ও গাড়ি চালানো শিখে দিলেও কাংখিত চাকুরী নিয়ে দিতে পারেননি আব্দুর রউফ। চাকুরীর জন্য রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান তিনি। কিন্তু কোন ভাবেই চাকুরী দিতে পারেননি। অবশেষে টাকা ফেরত চাইলে টালবাহনা শুরু করেন। শুধু সিরাজকেই নয়, অনেককে চাকুরী দিতে চেয়ে টাকা নিয়ে প্রতারনা করেছেন গাড়ি চালক রউফ। বিষয়টি নিয়ে পাটগ্রামের সুধিজন আলোচনায় বসলে টাকা ফেরত দিতে চেয়ে রাতের আঁধারে বদলি নিয়ে আদিতমারী চলে যান আব্দুর রউফ।

এরপর আদিতমারী ফায়ার স্টেশনে গিয়েও তার স্বাক্ষাত পাননি সিরাজসহ অন্য চাকুরী প্রত্যাশীরা। তার স্বাক্ষাতে আসা লোকদের অধিকাংশ টাকা লেনদেনের। অফিসের ঝামেলা এড়াতে অফিসে থাকলেও তার সহকর্মীরা জানান রউফ অফিসে নেই। তার বাসায় গিয়েও গেট না খোলায় তার স্বাক্ষাত মেলেনি কখনই।
গত ১১ জানুয়ারি রউফের দেখা করতে সকাল থেকে বিকেল অবদি আদিতমারী ফায়ার সার্ভিসের গেটেই বসে ছিলেন সিরাজ ও তার ভগ্নিপতি আলামিন ইসলাম। এক পর্যয়ে বিকেলে অফিসের গেটেই রউফের সাথে তাদের স্বাক্ষাত হয়। এ সময় চাকুরীর জন্য দেয়া ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে ছিনতাইকারী বলে চিৎকার দিয়ে এলোপাতারী মারপিট শুরু করে। পরে স্থানীয়রা এসে তাদেরকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ওই দিন রাতে আদিতমারী থানায় আব্দর রউফের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সিরাজ ইসলাম। অভিযোগের ২৪ দিনেও থানা পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে ভুক্তভোগি সিরাজের অভিযোগ।
ভুক্তভোগি সিরাজ ইসলাম বলেন, চাকুরী দিতে চেয়ে ১১লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন রউফ। কিন্তু চাকুরী তো দিলই না। টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে পিটুনী খেতে হয়েছে। কোন রকম পরীক্ষা ছাড়াই ড্রাভিং লাইসেন্সও নিয়ে দিয়েছেন। এখন চাকুরীও নেই, টাকাও নেই। উল্টো পিটুনী খেতে হলো। অভিযোগ দিলাম সেটারও কোন প্রতিকার মেলেনি।
অভিযুক্ত আদিতমারী ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চালক আব্দুর রউফ বলেন, তাকে চাকুরী নয়, লাইসেন্স পেতে সহায়তা করেছি। লাইসেন্স পেতে বিলম্ব হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের নিয়োগ পরীক্ষায় সিরাজ অংশ গ্রহন করতে পারেনি। মুলত তাদের অত্যাচারে আমি পাটগ্রাম থেকে বদলি নিয়ে আদিতমারী এসেছি। এখানেও তারা অত্যাচার শুরু করেছে।
আদিতমারী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার (ভার) মনির উদ্দিন সরকার বলেন, রউফের বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ও অবগত রয়েছেন। তবে ১১ জানুয়ারি অফিসে ছিলাম না তাই ওই দিনের ঘটনা আমার জানা নেই।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোক্তারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি তদন্তনাধিন রয়েছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

ফায়ার সার্ভিসে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিলো রউফ

আপডেট সময় : ০১:৪৫:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট:

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে চাকুরীর জন্য টাকা দিয়েও মেলেনি চাকুরী। টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে পেলেন গাড়ি চালকের মারপিট। থানায় অভিযোগের ৩ সপ্তাহেও কোন প্রতিকার মেলেনি ভুক্তভোগী সিরাজ ইসলামের। তিনি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ব্যাংকান্দা গ্রামের মমিনুর ইসলামের ছেলে। অভিযুক্ত গাড়ি চালক আব্দুর রউফ আদিতমারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের গাড়ি চালক পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি কুড়িগ্রামের বাসিন্দা।
অভিযোগে জানা গেছে, পাটগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে কর্মরত ছিলেন গাড়ি চালক আব্দুর রউফ। গত ২০২০ সালে সিরাজ ইসলামকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চালক পদে চাকুরী দেয়ার নাম করে ১১লাখ ১০ হাজার টাকা গ্রহন করেন আব্দুর রউফ। চালক হিসেবে লাইসেন্স ছিল না সিরাজের। ভাড়ি যান চালনার বৈধ লাইসেন্স পেতে ফরিদপুর নিয়ে যান এবং কোন রকম পরীক্ষা ছাড়াই লাইসেন্স পাইয়ে দেন। পরবর্তিতে নিজ গাড়িতেই সিরাজকে গাড়ি চালানো শিখান রউফ।
লাইসেন্স ও গাড়ি চালানো শিখে দিলেও কাংখিত চাকুরী নিয়ে দিতে পারেননি আব্দুর রউফ। চাকুরীর জন্য রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান তিনি। কিন্তু কোন ভাবেই চাকুরী দিতে পারেননি। অবশেষে টাকা ফেরত চাইলে টালবাহনা শুরু করেন। শুধু সিরাজকেই নয়, অনেককে চাকুরী দিতে চেয়ে টাকা নিয়ে প্রতারনা করেছেন গাড়ি চালক রউফ। বিষয়টি নিয়ে পাটগ্রামের সুধিজন আলোচনায় বসলে টাকা ফেরত দিতে চেয়ে রাতের আঁধারে বদলি নিয়ে আদিতমারী চলে যান আব্দুর রউফ।

এরপর আদিতমারী ফায়ার স্টেশনে গিয়েও তার স্বাক্ষাত পাননি সিরাজসহ অন্য চাকুরী প্রত্যাশীরা। তার স্বাক্ষাতে আসা লোকদের অধিকাংশ টাকা লেনদেনের। অফিসের ঝামেলা এড়াতে অফিসে থাকলেও তার সহকর্মীরা জানান রউফ অফিসে নেই। তার বাসায় গিয়েও গেট না খোলায় তার স্বাক্ষাত মেলেনি কখনই।
গত ১১ জানুয়ারি রউফের দেখা করতে সকাল থেকে বিকেল অবদি আদিতমারী ফায়ার সার্ভিসের গেটেই বসে ছিলেন সিরাজ ও তার ভগ্নিপতি আলামিন ইসলাম। এক পর্যয়ে বিকেলে অফিসের গেটেই রউফের সাথে তাদের স্বাক্ষাত হয়। এ সময় চাকুরীর জন্য দেয়া ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে ছিনতাইকারী বলে চিৎকার দিয়ে এলোপাতারী মারপিট শুরু করে। পরে স্থানীয়রা এসে তাদেরকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ওই দিন রাতে আদিতমারী থানায় আব্দর রউফের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সিরাজ ইসলাম। অভিযোগের ২৪ দিনেও থানা পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে ভুক্তভোগি সিরাজের অভিযোগ।
ভুক্তভোগি সিরাজ ইসলাম বলেন, চাকুরী দিতে চেয়ে ১১লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন রউফ। কিন্তু চাকুরী তো দিলই না। টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে পিটুনী খেতে হয়েছে। কোন রকম পরীক্ষা ছাড়াই ড্রাভিং লাইসেন্সও নিয়ে দিয়েছেন। এখন চাকুরীও নেই, টাকাও নেই। উল্টো পিটুনী খেতে হলো। অভিযোগ দিলাম সেটারও কোন প্রতিকার মেলেনি।
অভিযুক্ত আদিতমারী ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চালক আব্দুর রউফ বলেন, তাকে চাকুরী নয়, লাইসেন্স পেতে সহায়তা করেছি। লাইসেন্স পেতে বিলম্ব হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের নিয়োগ পরীক্ষায় সিরাজ অংশ গ্রহন করতে পারেনি। মুলত তাদের অত্যাচারে আমি পাটগ্রাম থেকে বদলি নিয়ে আদিতমারী এসেছি। এখানেও তারা অত্যাচার শুরু করেছে।
আদিতমারী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার (ভার) মনির উদ্দিন সরকার বলেন, রউফের বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ও অবগত রয়েছেন। তবে ১১ জানুয়ারি অফিসে ছিলাম না তাই ওই দিনের ঘটনা আমার জানা নেই।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোক্তারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি তদন্তনাধিন রয়েছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন