০৪:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাবাজার ও ডেইলী ইন্ডিপেন্ডেন্টের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৮:৪০:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৫৮

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এ.এম.ইকবাল, টাঙ্গাইল:

আজকাল সমগ্র বাংলাদেশের ছোট বড় কিংবা নামিদামি কিছু সংখ্যক পত্রিকার কর্তৃপক্ষ অবৈধ ইনকামের পথ বেছে নিয়েছে। এ সব পত্রিকার সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, কিংবা বিভাগীয় বুরো চীফ প্রতারণার প্রথম ফাঁদ হিসেবে তারা তাদের পত্রিকার নাম দিয়ে তৈরিকৃত ম্যাসেঞ্জার আইডিকে ব্যবহার করছে। তারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামের সহজ সরল সাংবাদিক মনা মাটির মানুষদের সরল মনকে অনায়াসে আকৃষ্ট করতে ম্যাসেঞ্জারে চোখ ধাঁধানো লোগো সংযুক্ত করেছে।
জানা যায়, ঠিক এমন একটি ম্যাসেঞ্জারের গ্যাঁরাকলে পড়ে টাঙ্গাইল জেলার টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিল ঘারিন্দা নিবাসী ভানু মিয়া বাংলাদেশের স্বনামধন্য পত্রিকা বাংলাবাজারের আকর্ষণীয় ম্যাসেঞ্জার আইডি ” বাংলাবাজার” এর শক্ত ফাঁদে পড়ে সর্বমোট দুই হাজার টাকা গচ্ছা গেছে। এ ঘটনায় মাটির মানুষ গাঁয়ের সহজ সরল বেকার ছেলে ভানু মিয়া টাকা খোয়া যাওয়ার কষ্ট সইতে না পেরে মুমূর্ষু হয়ে পড়েছে। সে এখন সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আস্থা হারিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।
জানা যায়, বাংলাবাজার নামের ম্যাসেঞ্জারে বেশ কয়েকটি নিউজ পাঠানোর পর ভানু মিয়ার কাছে ০১৫৮১৮০০২৯৭ এই মোবাইল নাম্বারে একটি কল আসে। ভানু মিয়া সানন্দে সাগ্রহে কল রিসিভ করলে তার বাংলাবাজার পত্রিকায় প্রতিনিধি হয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে কিনা তা কল দাতা জানতে চায়। বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য পত্রিকায় কাজের অফার পেয়ে ভানু মিয়ার মনজুড়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। সে তৎক্ষণাৎ রাজী হয়। এরপর লাল বৃত্তের ভেতরে সাদা রঙের অক্ষর “বা” লেখা সংবলিত লোগো দেয়া বাংলাবাজার নামক ম্যাসেঞ্জারে ০১৭১৪৩৫৬৭৮০ বিকাশ পারসোনাল নাম্বার পাঠিয়ে দেয় এবং গত ৪/১২/২০২২ তারিখে ওই নাম্বারে বাংলা পত্রিকা বাংলাবাজার এবং ইংলিশ পত্রিকা ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট এই দুই পত্রিকার টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি হয়ে কাজ করার জন্য আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড এবং জারসি বাবদ ২০০০ টাকা পাঠাতে বলে। বিভাগীয় বুরো চীফের প্রস্তাবে টাকা পাঠাতে ভানু মিয়া ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পরে সে প্রস্তাবের পরেরদিন গত ৫/১২/২০২২ তারিখে প্রস্তাবের পুরো টাকাই বাংলাবাজারের বিভাগীয় বুরো প্রধানের পরিচয় দেয়া ব্যক্তির পাঠানো ওই বিকাশ পার্সোনাল নাম্বারে জেলা প্রতিনিধি হওয়ার অনেক আশা নিয়ে পাঠিয়ে দেয়। বিভাগীয় বুরো প্রধান সব টাকা পেয়েছে বলে ফোনে জানায় এবং কালই টাঙ্গাইল সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে কার্ড ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র পাঠিয়ে দিবে বলে জানায়। শুনে ভানু মিয়া খুশি হয় এবং তৎক্ষণাৎ অসীম দয়াময় ও করুণাময় সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহর কথা স্মরণ করে। যথাসময়ে কুরিয়ার সার্ভিসে যোগাযোগ করে ভানু মিয়া। কিন্তু দেখে কার্ড ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের কোনো কিছুই আসে নাই। বাড়ী এসে সন্ধ্যায় সে বার বার ফোন দেয় কিন্তু কেউ রিসিভ করে না। পরে সে ম্যাসেঞ্জারে কার্ড না পাওয়ার বেদনার কথা লিখে জানায়। কয়েকদিন পর ম্যাসেঞ্জারে দেখে “প্রিয় সংবাদকর্মী, একটু অপেক্ষা করুন। খুব শীঘ্রই আপনি আপনার আইডিকার্ড ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেয়ে যাবেন” হুবুহু ঠিক এই কথাগুলোই এভাবেই লেখা। কথাগুলো পড়ে কিছুটা সে আশ্বস্ত হয় এবং কিছুদিন অপেক্ষা করে আবার সে অস্থিরতা নিয়ে ফোন দিতে থাকে, রিং বাজে কিন্তু কেউ ধরে না। আবার ম্যাসেঞ্জারে ভানু মিয়া কার্ড না পাওয়ার কষ্টগুলো বার বার জানাতে থাকে কিন্তু এখন আর কোনো সাড়া পায় না। কিন্তু গেলো কয়েকদিন আগে আচমকা যখন সে দেখে যে, ম্যাসেঞ্জারে কোনো কিছু পাঠানোর অপশনই রিমুভ করা হয়েছে, তখনই তার কাছে দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে সে মস্ত বড় প্রতারণার ফাঁদে পড়ে গেছে। আর তখন থেকেই মাটির এই সহজ সরল মানুষ ভানু মিয়া টাকা গচ্ছা যাওয়ার বেদনা সইতে না পেরে পাগল প্রায় অবস্থায় দিন অতিবাহিত করছে।
উল্লেখ্য, এই প্রতারক চক্র সারা বাংলাদেশে ভানু মিয়ার মতো কোটি কোটি সরল মনা সাংবাদিকদের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা মেরে খাচ্ছে। এখন প্রতারণার শক্ত ফাঁদ থেকে দ্রুত সরল সহজ মানুষদেরকে রেহাই দিতে অতিসত্ত্বর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনের কাছে সবিনয় অনুরোধ জানিয়েছে টাঙ্গাইল জেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

বাংলাবাজার ও ডেইলী ইন্ডিপেন্ডেন্টের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে

আপডেট সময় : ০৮:৪০:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এ.এম.ইকবাল, টাঙ্গাইল:

আজকাল সমগ্র বাংলাদেশের ছোট বড় কিংবা নামিদামি কিছু সংখ্যক পত্রিকার কর্তৃপক্ষ অবৈধ ইনকামের পথ বেছে নিয়েছে। এ সব পত্রিকার সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, কিংবা বিভাগীয় বুরো চীফ প্রতারণার প্রথম ফাঁদ হিসেবে তারা তাদের পত্রিকার নাম দিয়ে তৈরিকৃত ম্যাসেঞ্জার আইডিকে ব্যবহার করছে। তারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামের সহজ সরল সাংবাদিক মনা মাটির মানুষদের সরল মনকে অনায়াসে আকৃষ্ট করতে ম্যাসেঞ্জারে চোখ ধাঁধানো লোগো সংযুক্ত করেছে।
জানা যায়, ঠিক এমন একটি ম্যাসেঞ্জারের গ্যাঁরাকলে পড়ে টাঙ্গাইল জেলার টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিল ঘারিন্দা নিবাসী ভানু মিয়া বাংলাদেশের স্বনামধন্য পত্রিকা বাংলাবাজারের আকর্ষণীয় ম্যাসেঞ্জার আইডি ” বাংলাবাজার” এর শক্ত ফাঁদে পড়ে সর্বমোট দুই হাজার টাকা গচ্ছা গেছে। এ ঘটনায় মাটির মানুষ গাঁয়ের সহজ সরল বেকার ছেলে ভানু মিয়া টাকা খোয়া যাওয়ার কষ্ট সইতে না পেরে মুমূর্ষু হয়ে পড়েছে। সে এখন সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আস্থা হারিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।
জানা যায়, বাংলাবাজার নামের ম্যাসেঞ্জারে বেশ কয়েকটি নিউজ পাঠানোর পর ভানু মিয়ার কাছে ০১৫৮১৮০০২৯৭ এই মোবাইল নাম্বারে একটি কল আসে। ভানু মিয়া সানন্দে সাগ্রহে কল রিসিভ করলে তার বাংলাবাজার পত্রিকায় প্রতিনিধি হয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে কিনা তা কল দাতা জানতে চায়। বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য পত্রিকায় কাজের অফার পেয়ে ভানু মিয়ার মনজুড়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। সে তৎক্ষণাৎ রাজী হয়। এরপর লাল বৃত্তের ভেতরে সাদা রঙের অক্ষর “বা” লেখা সংবলিত লোগো দেয়া বাংলাবাজার নামক ম্যাসেঞ্জারে ০১৭১৪৩৫৬৭৮০ বিকাশ পারসোনাল নাম্বার পাঠিয়ে দেয় এবং গত ৪/১২/২০২২ তারিখে ওই নাম্বারে বাংলা পত্রিকা বাংলাবাজার এবং ইংলিশ পত্রিকা ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট এই দুই পত্রিকার টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি হয়ে কাজ করার জন্য আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড এবং জারসি বাবদ ২০০০ টাকা পাঠাতে বলে। বিভাগীয় বুরো চীফের প্রস্তাবে টাকা পাঠাতে ভানু মিয়া ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পরে সে প্রস্তাবের পরেরদিন গত ৫/১২/২০২২ তারিখে প্রস্তাবের পুরো টাকাই বাংলাবাজারের বিভাগীয় বুরো প্রধানের পরিচয় দেয়া ব্যক্তির পাঠানো ওই বিকাশ পার্সোনাল নাম্বারে জেলা প্রতিনিধি হওয়ার অনেক আশা নিয়ে পাঠিয়ে দেয়। বিভাগীয় বুরো প্রধান সব টাকা পেয়েছে বলে ফোনে জানায় এবং কালই টাঙ্গাইল সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে কার্ড ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র পাঠিয়ে দিবে বলে জানায়। শুনে ভানু মিয়া খুশি হয় এবং তৎক্ষণাৎ অসীম দয়াময় ও করুণাময় সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহর কথা স্মরণ করে। যথাসময়ে কুরিয়ার সার্ভিসে যোগাযোগ করে ভানু মিয়া। কিন্তু দেখে কার্ড ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের কোনো কিছুই আসে নাই। বাড়ী এসে সন্ধ্যায় সে বার বার ফোন দেয় কিন্তু কেউ রিসিভ করে না। পরে সে ম্যাসেঞ্জারে কার্ড না পাওয়ার বেদনার কথা লিখে জানায়। কয়েকদিন পর ম্যাসেঞ্জারে দেখে “প্রিয় সংবাদকর্মী, একটু অপেক্ষা করুন। খুব শীঘ্রই আপনি আপনার আইডিকার্ড ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেয়ে যাবেন” হুবুহু ঠিক এই কথাগুলোই এভাবেই লেখা। কথাগুলো পড়ে কিছুটা সে আশ্বস্ত হয় এবং কিছুদিন অপেক্ষা করে আবার সে অস্থিরতা নিয়ে ফোন দিতে থাকে, রিং বাজে কিন্তু কেউ ধরে না। আবার ম্যাসেঞ্জারে ভানু মিয়া কার্ড না পাওয়ার কষ্টগুলো বার বার জানাতে থাকে কিন্তু এখন আর কোনো সাড়া পায় না। কিন্তু গেলো কয়েকদিন আগে আচমকা যখন সে দেখে যে, ম্যাসেঞ্জারে কোনো কিছু পাঠানোর অপশনই রিমুভ করা হয়েছে, তখনই তার কাছে দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে সে মস্ত বড় প্রতারণার ফাঁদে পড়ে গেছে। আর তখন থেকেই মাটির এই সহজ সরল মানুষ ভানু মিয়া টাকা গচ্ছা যাওয়ার বেদনা সইতে না পেরে পাগল প্রায় অবস্থায় দিন অতিবাহিত করছে।
উল্লেখ্য, এই প্রতারক চক্র সারা বাংলাদেশে ভানু মিয়ার মতো কোটি কোটি সরল মনা সাংবাদিকদের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা মেরে খাচ্ছে। এখন প্রতারণার শক্ত ফাঁদ থেকে দ্রুত সরল সহজ মানুষদেরকে রেহাই দিতে অতিসত্ত্বর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনের কাছে সবিনয় অনুরোধ জানিয়েছে টাঙ্গাইল জেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন