০৯:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত নেত্রকোনায় জনজীবন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৫:৩০:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৭৪

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা:

হাওর ও পাহাড় বেষ্টিত জেলা নেত্রকোনা। শীতের দাপটে জনজীবন বিপর্যস্ত, ভোগান্তিতে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। অতিরিক্ত ঠাণ্ডার প্রভাবে কাজে যেতে পারছেন না খেটে খাওয়া মানুষগুলো। ঠান্ডার প্রভাবে বেড়ে চলেছে ঠাণ্ডজনিত বিভিন্ন রোগ।
পৌষের শুরুতে প্রথম সপ্তাহ থেকেই হাড় কাঁপানো শীত জেঁকে বসেছিল। পৌষের মাঝামাঝি থেকে শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বুধবার পর্যন্ত জেলায় একই অবস্থা বিরাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিনই জেলার সকল উপজেলায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে। ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল পার হয়ে দুপুরে মাঝে মাঝে সুর্যের দেখা মিললেও রোদের তাপমাত্রা খুবই কম। বিশেষ করে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া লোকজন অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে, শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। শহরে মানুষের চলাচল অনেকটাই কমে গেছে। তবে শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন চরম বেকায়দায়। ঘন কুয়াশার কারণে, দিনের বেলাতেও রাস্তায় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দোখাগেছে।
বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, শীতের প্রকোপ বাড়ায় গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছে ক্রেতারা। বিক্রেতারও এ সুযোগে বেশি দামে বিক্রি করছে শীতবস্ত্র। নিম্ন আয়ের ক্রেতারা বেশি ভিড় করছেন ফুটপাতের পুরোনো কাপড়ের দোকানে। কেউ কেউ শীতের পিঠা খেতেও দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন।
পুরো জেলা কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকার কারণে, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, রাজমিস্ত্রীসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুযেরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

নিন্ম আয়ের মানুষেরা জানান, তীব্র কুয়াশা আর শীতের কারণে মানুষ ঘরের বাইরে কম বের হচ্ছে। জরুরী প্রয়োজন ও অফিসগামী মানুষ ছাড়া বাইরে তেমন লোকজনের আনাগোনা নেই।
রিক্সাচালক রফিজ উদ্দিন বলেন, দিন কিংবা রাত অধিকাংশ সময়েই ঘন কুয়াশা থাকছে। এ কারণে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া যাত্রীরা কেউ রাস্তায় বের হচ্ছে না। ফলে আমাদের দিনের অনেকটা সময় যাত্রী অভাবে বসে থাকতে হচ্ছে। ভাড়ার রিক্সা নিয়ে তেমন আয় করতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে আছি।
খেটে খাওয়া মানুষ ঠান্ডা বেশী হওয়ার কারনে কাজে যেতে পারছেন না। এদিকে, বৃদ্ধ ও শিশুরা ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে হাসপাতালে। একইভাবে সড়ক ও রেলপথে যানবাহন চলাচলেও বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। হেডলাইট জ্বালিয়ে যাতায়াত করছে চালকরা।
শীর্তাতদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন, জেলা প্রশাসন। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার কম্বল নিয়ে, তিনি মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন সময়ে, জেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন বস্তিসহ বিভিন্ন স্থানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজ হাতে ছিন্নমূল মানুষের হাতে কম্বল তুলে দেন।
এসময় তিনি বলেন, প্রশাসনের পাশাপাশি যদি সমাজের বিত্তশালীরা এগিয়ে আসেন তবে, শীতার্ত ছিন্নমূল মানষগুলোর দুঃখ-কষ্ট লাঘব করা সহজ হবে।
কম্বল বিতরণকালে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব জিয়া আহমেদ সুমন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনির হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(আইসিটি) অনিমেষ সোম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তারসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত নেত্রকোনায় জনজীবন

আপডেট সময় : ০৫:৩০:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা:

হাওর ও পাহাড় বেষ্টিত জেলা নেত্রকোনা। শীতের দাপটে জনজীবন বিপর্যস্ত, ভোগান্তিতে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। অতিরিক্ত ঠাণ্ডার প্রভাবে কাজে যেতে পারছেন না খেটে খাওয়া মানুষগুলো। ঠান্ডার প্রভাবে বেড়ে চলেছে ঠাণ্ডজনিত বিভিন্ন রোগ।
পৌষের শুরুতে প্রথম সপ্তাহ থেকেই হাড় কাঁপানো শীত জেঁকে বসেছিল। পৌষের মাঝামাঝি থেকে শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বুধবার পর্যন্ত জেলায় একই অবস্থা বিরাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিনই জেলার সকল উপজেলায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে। ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল পার হয়ে দুপুরে মাঝে মাঝে সুর্যের দেখা মিললেও রোদের তাপমাত্রা খুবই কম। বিশেষ করে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া লোকজন অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে, শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। শহরে মানুষের চলাচল অনেকটাই কমে গেছে। তবে শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন চরম বেকায়দায়। ঘন কুয়াশার কারণে, দিনের বেলাতেও রাস্তায় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দোখাগেছে।
বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, শীতের প্রকোপ বাড়ায় গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছে ক্রেতারা। বিক্রেতারও এ সুযোগে বেশি দামে বিক্রি করছে শীতবস্ত্র। নিম্ন আয়ের ক্রেতারা বেশি ভিড় করছেন ফুটপাতের পুরোনো কাপড়ের দোকানে। কেউ কেউ শীতের পিঠা খেতেও দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন।
পুরো জেলা কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকার কারণে, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, রাজমিস্ত্রীসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুযেরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

নিন্ম আয়ের মানুষেরা জানান, তীব্র কুয়াশা আর শীতের কারণে মানুষ ঘরের বাইরে কম বের হচ্ছে। জরুরী প্রয়োজন ও অফিসগামী মানুষ ছাড়া বাইরে তেমন লোকজনের আনাগোনা নেই।
রিক্সাচালক রফিজ উদ্দিন বলেন, দিন কিংবা রাত অধিকাংশ সময়েই ঘন কুয়াশা থাকছে। এ কারণে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া যাত্রীরা কেউ রাস্তায় বের হচ্ছে না। ফলে আমাদের দিনের অনেকটা সময় যাত্রী অভাবে বসে থাকতে হচ্ছে। ভাড়ার রিক্সা নিয়ে তেমন আয় করতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে আছি।
খেটে খাওয়া মানুষ ঠান্ডা বেশী হওয়ার কারনে কাজে যেতে পারছেন না। এদিকে, বৃদ্ধ ও শিশুরা ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে হাসপাতালে। একইভাবে সড়ক ও রেলপথে যানবাহন চলাচলেও বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। হেডলাইট জ্বালিয়ে যাতায়াত করছে চালকরা।
শীর্তাতদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন, জেলা প্রশাসন। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার কম্বল নিয়ে, তিনি মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন সময়ে, জেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন বস্তিসহ বিভিন্ন স্থানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজ হাতে ছিন্নমূল মানুষের হাতে কম্বল তুলে দেন।
এসময় তিনি বলেন, প্রশাসনের পাশাপাশি যদি সমাজের বিত্তশালীরা এগিয়ে আসেন তবে, শীতার্ত ছিন্নমূল মানষগুলোর দুঃখ-কষ্ট লাঘব করা সহজ হবে।
কম্বল বিতরণকালে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব জিয়া আহমেদ সুমন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনির হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(আইসিটি) অনিমেষ সোম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তারসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন