মতলবে তীব্র শীতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ
- আপডেট সময় : ০৬:৪৭:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
- / ২৯
মমিনুল ইসলাম :
গত কয়েক দিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের মত মতলব উত্তর উপজেলায় কমছে তাপমাত্রা। হাড় কাঁপানো শীতে ও কনকনে বাতাসে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। ফলে বাড়ছে ঠান্ডা, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়েরিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগ। এই শীতে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিন দিন বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিশুরা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ঘুরে জানা গেছে, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। অনেক বাবা-মা জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়েরিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। ডাক্তার দেখাতে লাইনে ধরে ভিড় করছে শিশু বিশেষজ্ঞের কক্ষের সামনে। এরপর একে একে অবিভাবকরা শিশুদের ডাক্তার দেখাচ্ছেন। এছাড়া নানা বয়সী মানুষ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে হাসপাতালের আউটডোরে বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির সূত্র জানায়, বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুসহ নানা বয়সী প্রায় ২৬ জন ঠান্ডাজনিত রোগী ভর্তি আছেন। এছাড়া হাসপাতালে ১ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫ শতার্ধিক ঠান্ডাজনিত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে আসা শিশুর মা জাহানারা বেগম বলেন, তার শিশু কন্যার ঠান্ডা লেগেছে। বুধবার সন্ধ্যা থেকে বেশ কয়েকবার পাতলা পায়খানা করে। এরপর তিনি শিশুকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার হাসপাতালে এসে শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে দেখান। ডাক্তার বলেছে শিশুর ডায়রিয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত লিয়াকত হোসাইন বলেন, গত কয়েক দিন আগে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে প্রচুর ঠান্ডা লাগে। এরপর থেকে জ্বর-সর্দি ও কাশি শুরু হয়। এরপর হাসপাতালের এক ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়ে একটু ভালো হয়েছি। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে আবারও হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসেছি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মাজহারুল ইসলাম জনি জানান, বুধবার আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোরে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রায় ৪৫ থেকে ৫৫ জন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছি।
তিনি চাঁদপুর প্রবাহকে জানান, এ সময়ে বয়স্ক ও শিশু উভয়ের ক্ষেত্রে শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি হয়। কারণ শিশু বৃদ্ধদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। দিন দিন শীতে শিশুদের শীতজনিত রোগ থেকে বাঁচাতে পর্যাপ্ত গরম কাপড়সহ হাত-পায়ে মোজা পরিয়ে রাখতে হবে। কোনোভাবেই ঠান্ডা লাগানো যাবে না। গোসলসহ সব ক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) হাসিবুল ইসলাম চাঁদপুর প্রবাহকে জানান, শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকলে ঠান্ডাজনিত সমস্যাও বেশি হয়। এতে নানা বয়সী মানুষ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এর মধ্যে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, শীতের সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শিশুর দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাসায় সবসময় শিশুদের কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখতে হবে। শিশু কোনো অবস্থায় যেন ভেজা না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তা হলে ঠান্ডার সমস্যা থেকে শিশুরা কিছুটা হলেও সুরক্ষা পাবে।