না’গঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটিকে ঘিরে সভাপতি পদে আলোচনায় একে হিরা
- আপডেট সময় : ০৮:০৩:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ৬৮
সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্তর রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন নেতৃত্ব নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। আসন্ন নতুন কমিটিকে ঘিরে ছাত্রদলের পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে কাজ করছে নানা উৎসাহ উদ্দীপনা।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে এরমধ্যে অনেকেই কেন্দ্রের দায়িত্বশীলদের কাছে বিভিন্ন ভাবে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তবে পদ প্রত্যাশীদের ভাষ্য, যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিদের হাতেই ছাত্রদলের নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হবে বলে মনে করেন। সংগঠনটির একাধিক পদ প্রত্যাশীর সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানা যায়। তবে সভাপতি পদে পদ প্রত্যাশীর তালিকা সাধারণ সম্পাদক পদের চেয়ে তিন গুন বেশি। অধিকাংশ সাবেক ছাত্রদল নেতা সবাই সভাপতির পদ পেতে চান। গুটি কয়েকজন নেতা সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সভাপতি হিসেবে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রথম পছন্দের প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের জিলানী হীরা। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মতে, সভাপতি পদে একজনকে বাছাই করলেও প্রার্থী হতে কোনো দোষ নেই।
জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলসহ জেলা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করেন। পাশাপাশি অধীনস্থ সকল উপজেলা-থানা, পৌর, কলেজ, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ছাত্রদলের কমিটিও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শীঘ্রই উক্ত ইউনিটগুলোর নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।
এর আগে, ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের ৬ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছিল রাকিবুর রহমান সাগরকে ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল রাহিদ ইসতিয়াক সিকদারকে। কমিটিতে আরও ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাজাদা রতন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল ইসলাম রাজিব, যুগ্ম সম্পাদক ওসমান প্রীতম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাসেল। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মহানগর ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিকে কমিটি বিলুপ্তের পর তৎপরতা শুরু করেছেন পদ প্রত্যাশীরা। সভাপতি পদে এখন পর্যন্ত ৮ জনের নাম শোনা গেলেও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রথম পছন্দের প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের জিলানী হীরা। হিরা ছাড়াও অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন- মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাজাদা রতন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাহিদ ইসতিয়াক সিকদার, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল ইসলাম রাজিব, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মো. রাজু, বন্দর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রোমান, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাসেল ও সদর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পায়েলের নাম শোনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে এখন পর্যন্ত তিনজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন- মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মুকতাদির হোসাইন হৃদয়, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ওসমান প্রীতম এবং বন্দর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাকিব রায়হান।
সভাপতি পদে দৌড়ে এগিয়ে থাকা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের জিলানী হীরাকে দমাতে আওয়ামী লীগের সময় গডফাদার শামীম ওসমান এবং তার ছেলে অয়ন ওসমানের নির্দেশ ছাত্রলীগ ক্যাডার বাপ্পির নেতৃত্বে হামলা করা হয়। গত ছাত্র আন্দলনে সক্রিয় থাকায় ২০ জুলাই মধ্যরাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের তৎকালিন সভাপতি আব্দুল কাদের জিলানী হীরার ৪নং ওয়ার্ডের আটিগ্রাম বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় হিরাকে না পেয়ে তার ছোট ভাই এইচএসসি পরীক্ষার্থী আবু রায়হানকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর ২১ জুলাই বন্দর এলাকা থেকে হিরাকে আটক করে ৫ দিন অন্যায় ভাবে আটকে রেখে ২৬ জুলাই আদালতের মাধ্যমে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয় ডিবি পুলিশ। ২৯ জুলাই ১টি মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। শুনানী শেষে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে পুলিশ অমানুবিক নির্যাতন করে ছাত্রদল নেতা হিরাকে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানাসহ বিভিন্ন থানায় ৮ টি মামলায় করা হয় আাসামী। ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ৬ আগষ্ট আদালত থেকে জামিনে বের হয় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের তৎকালিন সভাপতি আব্দুল কাদের জিলানী হীরা।
শুধু মাত্র ছাত্রদলের রাজনীতি করার অপরাধে হিরা-ই নয় তার পুরো পরিবার পুলিশ ও ছাত্রলীগ দ্বারা অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, জেল খেটেছেন। সেইসঙ্গে ছাত্রদলের সাবেক নেতারা রয়েছেন বেশ আলোচনায়। তবে প্রার্থী বেশি হওয়ায় সভাপতি পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সভাপতি পদে প্রার্থী বেশি হওয়ায় এদের মধ্য থেকে কেউ সাধারণ সম্পাদক হলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। কারণ তারা সবাই সাংগঠনিকভাবে বেশ যোগ্য।