১০:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

শিবসা সেতুর টোলে নানা অনিয়ম, টোল অবমুক্ত চায় জনগণ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৬:৫০:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৮৬

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

পাইকগাছা, প্রতিনিধি:

খুলনার পাইকগাছায় শিববাটি শিবসা সেতুর টোলে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে, টোল অবমুক্ত চায় জনগণ। জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার শহীদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। আর এরই মধ্যে জোঁকের মত রক্ত চোষা পাহাড় সমান দুর্নীতিবাজরা আবারও শিবসা সেতুর টোল আদায় শুরু করছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি ও মাস্তানি করে সাধারণ মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে। যারা বলতে পারে দু-চারজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সব সময় তাদের পকেটে থাকে। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন তাদের মত দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতার হাত কত লম্বা! যারা এ সমাজের মানুষ গড়ার কারিগর পিতৃসমতুল্য সেই শিক্ষকদেরকে টোলে বিভিন্ন সময় অপমান,অপদস্ত, লাঞ্চিত ও অশীল ভাষায় গালিগালাজ করতে দ্বিধাবোধ করত না। এমনকি অপমানের সর্বশেষ স্তরে তাদের গাঁয়ে হাত দিতেও ছাড় দেয়নি। এই অত্যাচার ও জুলুমের হাত থেকে একজন ভ্যান চালক থেকে শুরু করে আপামর জনগণ কেউই রেহায় পায়নি। এই টোল আদায়কারীদের পূর্বের ইতিহাস দেখুন।

এলাকাবসীর সূত্রে জানা যায়, যারা পূর্বে ভ্যান, টাবরি, টোলে দোকান ও নৌকা চালিয়ে তিনবেলা তিনমুঠো ভাত খেতে পারত না। তারা আজ আলিশান রাজপ্রাসাদে থাকেন। পূর্বের ঘটনার একটু বর্ণনা দেই, টোলের চার্ট ঝুলিয়ে রাখার কিছুদিন পর সেই চার্টকে ছিড়ে ফেলে অথবা রাতের আঁধারে সরিয়ে ফেলা হতো। এখন প্রশ্ন হল কেন এই টোলের চার্ট সরিয়ে ফেলা হত? দুর্নীতিবাজরা অবৈধ ফায়দা লুটে নেওয়ার জন্য তারা এমন কাজ করত।

১০ চাকার গাড়ির আপডাউনে টোল আদায় করত ১৫০০/২০০০ টাকা। যেখানে গাড়ি আপডাউনের রেট ছিল ১২৫ টাকা করে ২৫০ টাকা। ১৮ চাকার গাড়ির আপ-ডাউনে টোল আদায় করত ২০০০ টাকা, যেখানে আপ-ডাউনের রেট ছিল ২৫০ টাকা। ১ টনি পিকআপ আপ-ডাউনে আদায় করত ৩০০ টাকা, যেখানে আপ-ডাউনের রেট ছিল ১০০ টাকা। ৩ টনি পিকআপ আপ-ডাউনে আদায় করা হত ৪০০ টাকা, যেখানে আপ-ডাউনের রেট ছিল ৮০ টাকা করে ১৬০ টাকা। রিকশা, ভ্যান, অটোটেম্পো,অটোভ্যান, ব্যাটারী চালিত ৩/৪ চাকার যে কোন মোটরযান আপ-ডাউনে আদায় করা হত ৩০ টাকা, যেখানে আপ-ডাউনের রেট ছিল ১০ টাকা। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন এরা কত বড় বাটপার। চট্টগ্রাম থেকে আসা দুটি ১৮ চাকার রডবাহী ট্রাক শিবসা সেতু হয়ে বাইনতলা ব্রিজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল।

গাড়ি নং চট্ট মেট্রো -৮১-৪৪৬১ ও ৮১- ৪৫৭০ থেকে প্রতিটি গাড়ি থেকে ২০০০ টাকা করে টোল আদায় করা হয়। এরা টোল আদায়ের জন্য দুই প্রকার রশিদ বই তৈরি করেন। কেউ যদি তাদেরকে চার্জ করতে যায় তখন প্রকৃত টোল রেটের বইটি দেখান। ১০ চাকার গাড়ি কিংবা ১৮ চাকার গাড়ি আসা ও যাওয়ার জন্য ১২৫ টাকা করে দুটো রশিদ দেওয়ার কথা সেখানে ২৫০ টাকার রশিদ দেন। এখানে শুভংকর ফাকিটা হল ২৫০ টাকার কোন রশিদ তৈরি করার বিধান নেই। অথচ দুটি রশিদ দিতেন না কেউ ধরাধরি করলে আপ-ডাউনের দুটি রশিদের পরিবর্তে একটি রশিদে ২৫০ টাকা দিয়েছি এমন মন্তব্য তাদের ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছাত্ররাও রেহায় পায়নি তাদের হাত থেকে।

২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে বেধড় মেরে হাসপাতালে পাঠায়। হাজার হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করলাম তবে সেই স্বাধীনতা কি বৃথা যাবে? আমরা আবার টোলের ইজারাদারদের দুর্নীতি করার লাইসেন্স দিচ্ছি না তো? শিববাটি অবস্থিত শিবসা সেতুর প্রকৃত ইজারাদার এস এম আলি আকবার এন্টারপ্রাইজ।

চুক্তি পত্রের ৪ নং পৃষ্ঠার ১৪ নং ক্রমিকে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, কোন অবস্থায় টোল আদায়ের জন্য ইজারাদার কর্তৃক অন্য কোন ব্যক্তির নিকট সাব ইজারা দেওয়া যাবে না এবং এটা প্রমাণিত হলে মূল ইজারা বাতিল করে সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন ও জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হবে।

এই এলাকার জনসাধারণের প্রাণের দাবি পাইকগাছা শিবসা সেতুর টোল সরকার বাহাদুর যাতে অনতিবিলম্বে অবমুক্ত ঘোষণা করেন সেই জন্য সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

শিবসা সেতুর টোলে নানা অনিয়ম, টোল অবমুক্ত চায় জনগণ

আপডেট সময় : ০৬:৫০:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

পাইকগাছা, প্রতিনিধি:

খুলনার পাইকগাছায় শিববাটি শিবসা সেতুর টোলে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে, টোল অবমুক্ত চায় জনগণ। জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার শহীদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। আর এরই মধ্যে জোঁকের মত রক্ত চোষা পাহাড় সমান দুর্নীতিবাজরা আবারও শিবসা সেতুর টোল আদায় শুরু করছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি ও মাস্তানি করে সাধারণ মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে। যারা বলতে পারে দু-চারজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সব সময় তাদের পকেটে থাকে। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন তাদের মত দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতার হাত কত লম্বা! যারা এ সমাজের মানুষ গড়ার কারিগর পিতৃসমতুল্য সেই শিক্ষকদেরকে টোলে বিভিন্ন সময় অপমান,অপদস্ত, লাঞ্চিত ও অশীল ভাষায় গালিগালাজ করতে দ্বিধাবোধ করত না। এমনকি অপমানের সর্বশেষ স্তরে তাদের গাঁয়ে হাত দিতেও ছাড় দেয়নি। এই অত্যাচার ও জুলুমের হাত থেকে একজন ভ্যান চালক থেকে শুরু করে আপামর জনগণ কেউই রেহায় পায়নি। এই টোল আদায়কারীদের পূর্বের ইতিহাস দেখুন।

এলাকাবসীর সূত্রে জানা যায়, যারা পূর্বে ভ্যান, টাবরি, টোলে দোকান ও নৌকা চালিয়ে তিনবেলা তিনমুঠো ভাত খেতে পারত না। তারা আজ আলিশান রাজপ্রাসাদে থাকেন। পূর্বের ঘটনার একটু বর্ণনা দেই, টোলের চার্ট ঝুলিয়ে রাখার কিছুদিন পর সেই চার্টকে ছিড়ে ফেলে অথবা রাতের আঁধারে সরিয়ে ফেলা হতো। এখন প্রশ্ন হল কেন এই টোলের চার্ট সরিয়ে ফেলা হত? দুর্নীতিবাজরা অবৈধ ফায়দা লুটে নেওয়ার জন্য তারা এমন কাজ করত।

১০ চাকার গাড়ির আপডাউনে টোল আদায় করত ১৫০০/২০০০ টাকা। যেখানে গাড়ি আপডাউনের রেট ছিল ১২৫ টাকা করে ২৫০ টাকা। ১৮ চাকার গাড়ির আপ-ডাউনে টোল আদায় করত ২০০০ টাকা, যেখানে আপ-ডাউনের রেট ছিল ২৫০ টাকা। ১ টনি পিকআপ আপ-ডাউনে আদায় করত ৩০০ টাকা, যেখানে আপ-ডাউনের রেট ছিল ১০০ টাকা। ৩ টনি পিকআপ আপ-ডাউনে আদায় করা হত ৪০০ টাকা, যেখানে আপ-ডাউনের রেট ছিল ৮০ টাকা করে ১৬০ টাকা। রিকশা, ভ্যান, অটোটেম্পো,অটোভ্যান, ব্যাটারী চালিত ৩/৪ চাকার যে কোন মোটরযান আপ-ডাউনে আদায় করা হত ৩০ টাকা, যেখানে আপ-ডাউনের রেট ছিল ১০ টাকা। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন এরা কত বড় বাটপার। চট্টগ্রাম থেকে আসা দুটি ১৮ চাকার রডবাহী ট্রাক শিবসা সেতু হয়ে বাইনতলা ব্রিজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল।

গাড়ি নং চট্ট মেট্রো -৮১-৪৪৬১ ও ৮১- ৪৫৭০ থেকে প্রতিটি গাড়ি থেকে ২০০০ টাকা করে টোল আদায় করা হয়। এরা টোল আদায়ের জন্য দুই প্রকার রশিদ বই তৈরি করেন। কেউ যদি তাদেরকে চার্জ করতে যায় তখন প্রকৃত টোল রেটের বইটি দেখান। ১০ চাকার গাড়ি কিংবা ১৮ চাকার গাড়ি আসা ও যাওয়ার জন্য ১২৫ টাকা করে দুটো রশিদ দেওয়ার কথা সেখানে ২৫০ টাকার রশিদ দেন। এখানে শুভংকর ফাকিটা হল ২৫০ টাকার কোন রশিদ তৈরি করার বিধান নেই। অথচ দুটি রশিদ দিতেন না কেউ ধরাধরি করলে আপ-ডাউনের দুটি রশিদের পরিবর্তে একটি রশিদে ২৫০ টাকা দিয়েছি এমন মন্তব্য তাদের ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছাত্ররাও রেহায় পায়নি তাদের হাত থেকে।

২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে বেধড় মেরে হাসপাতালে পাঠায়। হাজার হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করলাম তবে সেই স্বাধীনতা কি বৃথা যাবে? আমরা আবার টোলের ইজারাদারদের দুর্নীতি করার লাইসেন্স দিচ্ছি না তো? শিববাটি অবস্থিত শিবসা সেতুর প্রকৃত ইজারাদার এস এম আলি আকবার এন্টারপ্রাইজ।

চুক্তি পত্রের ৪ নং পৃষ্ঠার ১৪ নং ক্রমিকে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, কোন অবস্থায় টোল আদায়ের জন্য ইজারাদার কর্তৃক অন্য কোন ব্যক্তির নিকট সাব ইজারা দেওয়া যাবে না এবং এটা প্রমাণিত হলে মূল ইজারা বাতিল করে সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন ও জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হবে।

এই এলাকার জনসাধারণের প্রাণের দাবি পাইকগাছা শিবসা সেতুর টোল সরকার বাহাদুর যাতে অনতিবিলম্বে অবমুক্ত ঘোষণা করেন সেই জন্য সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন