০৩:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ময়মনসিংহে ভূমি কর্মকর্তা জবেদ আলীর সম্পদের উৎস নিয়ে সমালোচনা বিভিন্ন মহলে তদন্তের দাবী

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০২:০৯:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৪০

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার :

ময়মনসিংহের সদর উপজেলার সিরতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জবেদ আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলেও অভিযোগে জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে,গত ১৯৯৬ সালে ১৭তম গ্রেডে মাত্র ২/৩ হাজার টাকার বেতনে সহকারী তহসিলদার হিসাবে চাকরিতে যোগ করেন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জবেদ আলি। পরে ২০০৬ সালে জেলার হালুয়াঘাট উপজেলায় বদলি করা হলে সেখানে তিনি কর্মরত অবস্থায় ঘুষ গ্রহণের দায়ে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হয়ে তিনি দীর্ঘদিন সাময়িক বরখাস্ত থাকেন এবং দুর্ণীতির দায়ে দুর্ণীতি দমন কমিশনে তার নামে মামলা হয়,উক্ত মামলার সুবাদে দুর্ণীতি দমন কমিশনের অনেক কর্মকর্তাদের সাথে তার সক্ষতা গড়ে উঠায় ফের চাকরীতে যোগদান করে টাকার নেশায় আবার বেপরোয়া হয়ে উঠেন। শুরু হয় বেপরোয়া ঘুষ-দুর্নীতির বিজনেস। ঘুষের এই ব্যবসার মাধ্যমেই তিনি হয়ে উঠেন কোটি কোটি টাকার মালিক। শহরের প্রাণকেন্দ্র ৩০৭/১ মাসকান্দা আমিরাবাদ মোড়ে গড়ে তোলেন বিলাস বহুল ভবন, ৮৮ সেহড়া রোডে সিটি কনস্ট্রাকশন, বদরের মোড় সংলগ্ন এলাকায় ড্রিম টাওয়ার (হান্নান সাহেবের গ্যারেজ), ১৩নং আর কে মিশন রোড মোড় সংলগ্ন বাউন্ডারি খালী জায়গায় জমি ক্রয়,১৬৫/ আর কে মিশন রোড জি এম টাওয়ার, ২৩/ক নতুন বাজার ট্রাফিক মোড় মিনা বাজারে বহুতল ভবন,কেওয়াট খালী ময়নার মোড় এলাকায় রয়েছে তার বিলাস বহুল ৬তলা ভবনের বাড়ী, তবে নতুন বাজার মোড়ে মিনা বাজার এলাকায় অবস্থিত বিল্ডিং এর ৮ম তলায় তিনি নিজে বসবাস করেন। প্রায় ৩-৪ কোটি টাকার আসবাবপত্র ও ডেকোরেশনে সজ্জিত বিদেশি স্টাইলে সাজানো-গোছানো এই বাড়ীটি মন্ত্রী এমপিদের বাড়ীকেও হার মানিয়েছে যা স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি তার চলাফেরায় যে বিলাস বহুল গাড়িটি ব্যবহার করেন তা প্রশাসনে কর্মরত উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত গাড়ীকেও হার মানাবে।

সুত্র জানিয়েছে-শশুড় বাড়ীসহ পরিবারের বিভিন্ন লোকজনের নামে রয়েছে এসকল সম্পদ,এই সুযোগে তিনি অস্বীকার করেন এসব সম্পদের পরিমাণ। আর এসব অনিয়ম দুর্নীতি থেকে পার পেতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে তার কিছু অশুভ শক্তি ও সিন্ডিকেট বাহীনী। খুটির জোড় হিসাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করেন জবেদ আলী। এসব সম্পদ ছাড়াও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে তার বহু অবৈধ সম্পদের পাহাড়। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বেনামে রয়েছে অবৈধ অর্থ,যা তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে বলে দাবী উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, জবেদ আলী চাকুরীতে যোগদানের পুর্বে তার পারিবারিক ভাবে তেমন সম্পদ,টাকা-পয়সা ছিলোনা, যা তার বর্তমানে রয়েছে। ময়মনসিংহে বর্তমানে সবচেয়ে বড় ডেবেলাপার ব্যবসায়ী হিসাবেও পরিচিত রয়েছে জবেদ আলী। চাকরীতে যোগদান করেই তিনি কিভাবে এতসব সম্পদের মালিক হলেন এ নিয়ে ময়মনসিংহে বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর ব্যক্তিদের মাঝেও চলছে নানা আলোচনা -সমালোচনা। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে এই সম্পদের উৎস কি?

সিরতা ইউনিয়নে খোজ নিয়ে জানা গেছে-তার পালিত একাধিক দালাল বাহিনী দিয়েই পরিচালিত হয় সিরতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কার্যক্রম। নামজারি জমা খারিজ বা ভূমি সংক্রান্ত যে কোন কাজে আগে এসব দালানদের সাথেই কথা বলতে হয়,দিতে হয় মোটা অংকের অর্থ।

স্থানীয়রা জানান, নায়েব সাহেব টাকা ছাড়া কিছুই বুঝেন না,আর টাকা দিলেও অফিসে তার অনিয়মিত উপস্থিতির কারণে দিনের পর দিন ঘুরে হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীরা। তারা আরো জানায়- সিরতা ইউনিয়নে নাইব জবেদ আলীর যোগদানের পর থেকে সেবা নিতে আসা লোকজনের কাছ থেকে নামজারি, দাখিলাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।

আরও জানা যায়, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (সহকারী তহশিলদার) জবেদ আলীর বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নাম জারি জমা খারিজসহ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি খাস জমির দাখিলা প্রদান করেন এমন অভিযোগও উঠেছে।

এব্যাপারে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জবেদ আলীর বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

ময়মনসিংহে ভূমি কর্মকর্তা জবেদ আলীর সম্পদের উৎস নিয়ে সমালোচনা বিভিন্ন মহলে তদন্তের দাবী

আপডেট সময় : ০২:০৯:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার :

ময়মনসিংহের সদর উপজেলার সিরতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জবেদ আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলেও অভিযোগে জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে,গত ১৯৯৬ সালে ১৭তম গ্রেডে মাত্র ২/৩ হাজার টাকার বেতনে সহকারী তহসিলদার হিসাবে চাকরিতে যোগ করেন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জবেদ আলি। পরে ২০০৬ সালে জেলার হালুয়াঘাট উপজেলায় বদলি করা হলে সেখানে তিনি কর্মরত অবস্থায় ঘুষ গ্রহণের দায়ে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হয়ে তিনি দীর্ঘদিন সাময়িক বরখাস্ত থাকেন এবং দুর্ণীতির দায়ে দুর্ণীতি দমন কমিশনে তার নামে মামলা হয়,উক্ত মামলার সুবাদে দুর্ণীতি দমন কমিশনের অনেক কর্মকর্তাদের সাথে তার সক্ষতা গড়ে উঠায় ফের চাকরীতে যোগদান করে টাকার নেশায় আবার বেপরোয়া হয়ে উঠেন। শুরু হয় বেপরোয়া ঘুষ-দুর্নীতির বিজনেস। ঘুষের এই ব্যবসার মাধ্যমেই তিনি হয়ে উঠেন কোটি কোটি টাকার মালিক। শহরের প্রাণকেন্দ্র ৩০৭/১ মাসকান্দা আমিরাবাদ মোড়ে গড়ে তোলেন বিলাস বহুল ভবন, ৮৮ সেহড়া রোডে সিটি কনস্ট্রাকশন, বদরের মোড় সংলগ্ন এলাকায় ড্রিম টাওয়ার (হান্নান সাহেবের গ্যারেজ), ১৩নং আর কে মিশন রোড মোড় সংলগ্ন বাউন্ডারি খালী জায়গায় জমি ক্রয়,১৬৫/ আর কে মিশন রোড জি এম টাওয়ার, ২৩/ক নতুন বাজার ট্রাফিক মোড় মিনা বাজারে বহুতল ভবন,কেওয়াট খালী ময়নার মোড় এলাকায় রয়েছে তার বিলাস বহুল ৬তলা ভবনের বাড়ী, তবে নতুন বাজার মোড়ে মিনা বাজার এলাকায় অবস্থিত বিল্ডিং এর ৮ম তলায় তিনি নিজে বসবাস করেন। প্রায় ৩-৪ কোটি টাকার আসবাবপত্র ও ডেকোরেশনে সজ্জিত বিদেশি স্টাইলে সাজানো-গোছানো এই বাড়ীটি মন্ত্রী এমপিদের বাড়ীকেও হার মানিয়েছে যা স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি তার চলাফেরায় যে বিলাস বহুল গাড়িটি ব্যবহার করেন তা প্রশাসনে কর্মরত উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত গাড়ীকেও হার মানাবে।

সুত্র জানিয়েছে-শশুড় বাড়ীসহ পরিবারের বিভিন্ন লোকজনের নামে রয়েছে এসকল সম্পদ,এই সুযোগে তিনি অস্বীকার করেন এসব সম্পদের পরিমাণ। আর এসব অনিয়ম দুর্নীতি থেকে পার পেতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে তার কিছু অশুভ শক্তি ও সিন্ডিকেট বাহীনী। খুটির জোড় হিসাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করেন জবেদ আলী। এসব সম্পদ ছাড়াও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে তার বহু অবৈধ সম্পদের পাহাড়। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বেনামে রয়েছে অবৈধ অর্থ,যা তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে বলে দাবী উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, জবেদ আলী চাকুরীতে যোগদানের পুর্বে তার পারিবারিক ভাবে তেমন সম্পদ,টাকা-পয়সা ছিলোনা, যা তার বর্তমানে রয়েছে। ময়মনসিংহে বর্তমানে সবচেয়ে বড় ডেবেলাপার ব্যবসায়ী হিসাবেও পরিচিত রয়েছে জবেদ আলী। চাকরীতে যোগদান করেই তিনি কিভাবে এতসব সম্পদের মালিক হলেন এ নিয়ে ময়মনসিংহে বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর ব্যক্তিদের মাঝেও চলছে নানা আলোচনা -সমালোচনা। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে এই সম্পদের উৎস কি?

সিরতা ইউনিয়নে খোজ নিয়ে জানা গেছে-তার পালিত একাধিক দালাল বাহিনী দিয়েই পরিচালিত হয় সিরতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কার্যক্রম। নামজারি জমা খারিজ বা ভূমি সংক্রান্ত যে কোন কাজে আগে এসব দালানদের সাথেই কথা বলতে হয়,দিতে হয় মোটা অংকের অর্থ।

স্থানীয়রা জানান, নায়েব সাহেব টাকা ছাড়া কিছুই বুঝেন না,আর টাকা দিলেও অফিসে তার অনিয়মিত উপস্থিতির কারণে দিনের পর দিন ঘুরে হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীরা। তারা আরো জানায়- সিরতা ইউনিয়নে নাইব জবেদ আলীর যোগদানের পর থেকে সেবা নিতে আসা লোকজনের কাছ থেকে নামজারি, দাখিলাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।

আরও জানা যায়, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (সহকারী তহশিলদার) জবেদ আলীর বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নাম জারি জমা খারিজসহ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি খাস জমির দাখিলা প্রদান করেন এমন অভিযোগও উঠেছে।

এব্যাপারে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জবেদ আলীর বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন