০৯:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ফেসবুকে মাদকবিরোধী পোস্ট দেওয়ায় শিক্ষার্থীর ওপর হামলা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৯:১৮:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৯৭

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা :

নেত্রকোনার বারহাট্টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাদক বিরোধী পোস্ট দেওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীদের হামলার শিকার হয়েছেন এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। তাকে মারধর করে তাঁর সাথে থাকা ২টি স্মার্টফোন ভেঙে ফেলে এবং পকেটে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।

এঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বারহাট্টা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পাশাপাশি স্থানীয় সেনা ক্যাম্পেও লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান খান পিয়াস একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) এ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

মনিরুজ্জামান খান বারহাট্টা উপজেলার গুহিয়ালা গ্রামের দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার বারহাট্টা উপজেলা প্রতিনিধি মো. রুকনুজ্জামান খানের ছেলে।

হামলাকারীদের মধ্যে মো. আইনাল হক নামে একজনকে চিনতে পেরে তাঁর নাম উল্লেখ করেছেন মনিরুজ্জামান। বাকিদের তিনি চিনেন না বলে জানান। অভিযুক্ত আইনাল হক বারহাট্টা শহরের মহাজনপাড়ার মৃত আ. ছাত্তারের ছেলে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান খান জানান, ঢাকায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিলে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেছি। সরকার পতনের পর সম্প্রতি এলাকায় এসেছি। নিজের এলাকায় মাদকের ব্যাপক বিস্তার দেখে আমি গত ২৮ আগস্ট ফেসবুকে পোস্টে লিখি- ‘বারহাট্টায় মাদক ব্যবসা চলবে না আমরা সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা মানবো না’। এর দুইদিন পর গত ৩১ আগস্ট সন্ধ্যায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী মো. আইনাল হকসহ তার সঙ্গীরা আমার ওপর হামলা চালায়। মারধর করার পাশাপাশি আমার সঙ্গে থাকা দুটি স্মার্টফোন ভেঙে ফেলে এবং পকেটে মানিব্যাগে থাকা আটারো হাজার পাঁচশত টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

ঘটনার বিবরণীতে মনিরুজ্জামান খান জানান, ঘটনার দিন বিকাল ৫টার দিকে আমি বাজার থেকে বাসায় ফিরছিলাম। পথে উপজেলা সদরের বৃকালিকা এলাকায় রেললাইনের পাশে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী মো. আইনাল হকসহ ৫-৬ জন আমার পথরোধ করে কিল ঘুষি মারতে থাকে। কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলে- ‘শালারপুত (শালার ছেলে) তুই মাদকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেস, তোর পোস্ট দেওয়া বের করতাছি।’ এসব অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করতে থাকে এবং আমার পকেটে থাকা মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এ সময় স্মার্টফোন বের করে ভিডিও করার চেষ্টা করলে মোবাইল কেড়ে নিয়ে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলে। অপর একটি স্মার্টফোন পকেটে ছিল সেটিও লাথি মেরে ভেঙে ফেলে। আমার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন চলে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় ও সেনাক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামানের বাবা সাংবাদিক রুকনুজ্জামান বলেন,আমার ছেলে ইউনির্ভাসিটিতে পড়ে। সে দেশের জন্য স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামে যুক্ত থেকে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছে। অথচ নিজের এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ে কথা বলায় হামলার শিকার হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। হামলাকারী মাদক ব্যবসায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামানের ওপর হামলার ঘটনাটি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা জানান অনেকে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।

এবিষয়ে বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামানের উপর হামলার অভিযোগটি পেয়েছি। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ডভুক্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে ধরতে দুই দফা অভিযান চলানো হয়েছে কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

ফেসবুকে মাদকবিরোধী পোস্ট দেওয়ায় শিক্ষার্থীর ওপর হামলা

আপডেট সময় : ০৯:১৮:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা :

নেত্রকোনার বারহাট্টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাদক বিরোধী পোস্ট দেওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীদের হামলার শিকার হয়েছেন এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। তাকে মারধর করে তাঁর সাথে থাকা ২টি স্মার্টফোন ভেঙে ফেলে এবং পকেটে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।

এঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বারহাট্টা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পাশাপাশি স্থানীয় সেনা ক্যাম্পেও লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান খান পিয়াস একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) এ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

মনিরুজ্জামান খান বারহাট্টা উপজেলার গুহিয়ালা গ্রামের দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার বারহাট্টা উপজেলা প্রতিনিধি মো. রুকনুজ্জামান খানের ছেলে।

হামলাকারীদের মধ্যে মো. আইনাল হক নামে একজনকে চিনতে পেরে তাঁর নাম উল্লেখ করেছেন মনিরুজ্জামান। বাকিদের তিনি চিনেন না বলে জানান। অভিযুক্ত আইনাল হক বারহাট্টা শহরের মহাজনপাড়ার মৃত আ. ছাত্তারের ছেলে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান খান জানান, ঢাকায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিলে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেছি। সরকার পতনের পর সম্প্রতি এলাকায় এসেছি। নিজের এলাকায় মাদকের ব্যাপক বিস্তার দেখে আমি গত ২৮ আগস্ট ফেসবুকে পোস্টে লিখি- ‘বারহাট্টায় মাদক ব্যবসা চলবে না আমরা সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা মানবো না’। এর দুইদিন পর গত ৩১ আগস্ট সন্ধ্যায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী মো. আইনাল হকসহ তার সঙ্গীরা আমার ওপর হামলা চালায়। মারধর করার পাশাপাশি আমার সঙ্গে থাকা দুটি স্মার্টফোন ভেঙে ফেলে এবং পকেটে মানিব্যাগে থাকা আটারো হাজার পাঁচশত টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

ঘটনার বিবরণীতে মনিরুজ্জামান খান জানান, ঘটনার দিন বিকাল ৫টার দিকে আমি বাজার থেকে বাসায় ফিরছিলাম। পথে উপজেলা সদরের বৃকালিকা এলাকায় রেললাইনের পাশে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী মো. আইনাল হকসহ ৫-৬ জন আমার পথরোধ করে কিল ঘুষি মারতে থাকে। কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলে- ‘শালারপুত (শালার ছেলে) তুই মাদকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেস, তোর পোস্ট দেওয়া বের করতাছি।’ এসব অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করতে থাকে এবং আমার পকেটে থাকা মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এ সময় স্মার্টফোন বের করে ভিডিও করার চেষ্টা করলে মোবাইল কেড়ে নিয়ে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলে। অপর একটি স্মার্টফোন পকেটে ছিল সেটিও লাথি মেরে ভেঙে ফেলে। আমার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন চলে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় ও সেনাক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামানের বাবা সাংবাদিক রুকনুজ্জামান বলেন,আমার ছেলে ইউনির্ভাসিটিতে পড়ে। সে দেশের জন্য স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামে যুক্ত থেকে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছে। অথচ নিজের এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ে কথা বলায় হামলার শিকার হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। হামলাকারী মাদক ব্যবসায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামানের ওপর হামলার ঘটনাটি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা জানান অনেকে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।

এবিষয়ে বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামানের উপর হামলার অভিযোগটি পেয়েছি। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ডভুক্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে ধরতে দুই দফা অভিযান চলানো হয়েছে কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন