০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গাজী টাইয়ারস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড

রূপগঞ্জে নিখোঁজদের সন্তানের দাবিতে স্বজনদের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৭:৩১:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৯

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মো. নুর আলম, রূপগঞ্জ :

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসীতে অবস্থিত গাজী টায়ারস কারখানায় ৬ তলা ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজদের স্বজনদের নিয়ে গণশুনানি করেছেন উপজেলা প্রশাসন। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত ৮ সদস্য কমিটি এ গণশুনানি করেন। তিন দফায় নিখোজদের নাম লিপিবদ্ধ করতে গিয়ে এবং নিখোঁজদের সন্ধানের দাবিতে স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে দুপুরে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় সড়কের উভয়দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটে সৃষ্টি হয়।

নিখোঁজদের স্বজনরা জানান, গত (২৫ আগষ্ট) রোববার রাতে গাজী টায়ারস কারখানার ছয় তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই ভবনের ভেতরে বিভিন্ন এলাক প্রায় দুইশতাধিক লোকজন ঢুকে আটকা পড়ে যান। এরপর তাদের আর খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনার প্রায় ২২ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হাওয়ায় উদ্ধার কার্যক্রমে ব্যর্থ হন ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসন।

প্রথমে ফায়ার সার্ভিস এর কাছে ১৭৬ জন নিখোঁজদের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করেন স্বজনরা। পরে ফায়ার সার্ভিস নিখোঁজের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ তালিকাটি অস্বীকার করেন। পরে দ্বিতীয় দফায় পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতায় ছাত্র-ছাত্রীরা ১২৮ জন নিখোঁজের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করেন। তৃতীয় দফায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত ৮ সদস্য তদন্ত কমিটি রোববার সকালে গণ শুনানির আয়োজন করেন। গণ শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন তদন্ত কমিটি আহবায়ক নারায়ণ জেলা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেলসহ আরো অনেকে।

ওই শুনানিতেও নিখোঁজদের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ শুরু করেন। প্রায় ৮০ জনের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করার এক পর্যায়ে নিখোঁজদের স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। স্বজনরা তখন কমিটির সদস্যদের বলেন, আপনারা আর কতবার নিখোঁজের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করবেন? যারা নিখোঁজ রয়েছে তাদের সন্ধান দিন। এরপর স্বজনরা কারখানার সামনের ঢাকা ছিলেন মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে উপজেলা প্রশাসন এবং কমিটির সদস্যরা স্বজনদের বুঝিয়ে শুনিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। পরে নিখোঁজদের সন্ধানে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ঐ ভবনে বেশ কয়েকজন স্বজন ঢুকে পড়েন। সেখান থেকে বেশ কয়েকটি মাথার খুলি ও হাড়গোড় পায়।

জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার রুপসী এলাকায় অবস্থিত সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন রুপসি এলাকায় অবস্থিত গাজী টায়ার ফ্যাক্টরিতে দ্বিতীয় বারের মতো আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত (২৫ আগস্ট) রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফ্যাক্টরির ভেতরে থাকা ৬তলা বিশিষ্ট একটি ভবনে আগুন লাগে। আগুন লাগার প্রায় ২২ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিখোঁজদের স্বজনদের নিয়ে গণ শুনানি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি বিষয়টি দেখছেন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

গাজী টাইয়ারস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড

রূপগঞ্জে নিখোঁজদের সন্তানের দাবিতে স্বজনদের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

আপডেট সময় : ০৭:৩১:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মো. নুর আলম, রূপগঞ্জ :

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসীতে অবস্থিত গাজী টায়ারস কারখানায় ৬ তলা ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজদের স্বজনদের নিয়ে গণশুনানি করেছেন উপজেলা প্রশাসন। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত ৮ সদস্য কমিটি এ গণশুনানি করেন। তিন দফায় নিখোজদের নাম লিপিবদ্ধ করতে গিয়ে এবং নিখোঁজদের সন্ধানের দাবিতে স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে দুপুরে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় সড়কের উভয়দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটে সৃষ্টি হয়।

নিখোঁজদের স্বজনরা জানান, গত (২৫ আগষ্ট) রোববার রাতে গাজী টায়ারস কারখানার ছয় তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই ভবনের ভেতরে বিভিন্ন এলাক প্রায় দুইশতাধিক লোকজন ঢুকে আটকা পড়ে যান। এরপর তাদের আর খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনার প্রায় ২২ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হাওয়ায় উদ্ধার কার্যক্রমে ব্যর্থ হন ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসন।

প্রথমে ফায়ার সার্ভিস এর কাছে ১৭৬ জন নিখোঁজদের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করেন স্বজনরা। পরে ফায়ার সার্ভিস নিখোঁজের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ তালিকাটি অস্বীকার করেন। পরে দ্বিতীয় দফায় পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতায় ছাত্র-ছাত্রীরা ১২৮ জন নিখোঁজের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করেন। তৃতীয় দফায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত ৮ সদস্য তদন্ত কমিটি রোববার সকালে গণ শুনানির আয়োজন করেন। গণ শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন তদন্ত কমিটি আহবায়ক নারায়ণ জেলা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেলসহ আরো অনেকে।

ওই শুনানিতেও নিখোঁজদের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ শুরু করেন। প্রায় ৮০ জনের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করার এক পর্যায়ে নিখোঁজদের স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। স্বজনরা তখন কমিটির সদস্যদের বলেন, আপনারা আর কতবার নিখোঁজের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করবেন? যারা নিখোঁজ রয়েছে তাদের সন্ধান দিন। এরপর স্বজনরা কারখানার সামনের ঢাকা ছিলেন মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে উপজেলা প্রশাসন এবং কমিটির সদস্যরা স্বজনদের বুঝিয়ে শুনিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। পরে নিখোঁজদের সন্ধানে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ঐ ভবনে বেশ কয়েকজন স্বজন ঢুকে পড়েন। সেখান থেকে বেশ কয়েকটি মাথার খুলি ও হাড়গোড় পায়।

জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার রুপসী এলাকায় অবস্থিত সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন রুপসি এলাকায় অবস্থিত গাজী টায়ার ফ্যাক্টরিতে দ্বিতীয় বারের মতো আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত (২৫ আগস্ট) রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফ্যাক্টরির ভেতরে থাকা ৬তলা বিশিষ্ট একটি ভবনে আগুন লাগে। আগুন লাগার প্রায় ২২ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিখোঁজদের স্বজনদের নিয়ে গণ শুনানি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি বিষয়টি দেখছেন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন