মতলবে সংবাদ প্রকাশের পরে সমাজচ্যুত পরিবারের পাশে ওসি আলমগীর হোসেন
- আপডেট সময় : ১১:২১:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪
- / ১৩৩
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মুল্লুক মাঝির কান্দি গ্রামের বাসিন্দা অটোরিকশাচালক মইজ উদ্দিনের পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়ে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দৈনিকে ২৮ জুন ‘অমানবিকতার শেষ কোথায়? কথা বললেই ৫ হাজার টাকা জরিমানা’ এই শিরোনাম একটি প্রতিবেদন হয়।
প্রতিবেদনটি মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনির দৃষ্টিগোচর হলে সোমবার (১ জুলাই) সকালে অটোরিকশাচালক মইজ উদ্দিনের বাড়িতে ছুটে যান তিনি। সঙ্গে করে নিয়ে যান চাল, ডাল, তৈল সহ নানান খাদ্য সামগ্রি।
‘অমানবিকতার শেষ কোথায়? কথা বললেই ৫ হাজার টাকা জরিমানা’ শিরোনামে দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ ও সামাজিক অপশাসনের শিকার হয়ে এক ঘরে করে রাখা এই এই পরিবারটিকে নিয়ে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হলে নিন্দার ঝড় উঠে। এই অন্যায়ের বিচার দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে উঠে মতলব উত্তরের সচেতন মহল। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আমলে নেন মতলব উত্তর থানার ওসি আলমগীর হোসেন রনি।
এ বিষয়ে মইজ উদ্দিন জানান, আমাদের স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াকে কেন্দ্র করে কুরবানি ঈদের আগে আমাদের সমাজের কয়েকজন মানুষ তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য আমার ও আমার পরিবারের উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছিলেন এবং কি আমার পরিবারকে সমাজচ্যুত কর দিয়েছিল। সমাজচ্যুত করায় মসজিদে নামাজ পড়া, বাচ্চাদের মক্তবে পড়তে নিষেধসহ কেউ আমারদের সঙ্গে কথা বললে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করার বিধান করা হয়েছেছিল এবং কি সমাজের ভাগের কুরবানির একটুকরো মাংস কেউ দেয়নি। এ ঘটনায় আমি সাংবাদিকদে সাথে যোগাযোগ করেলে তারা আমার বাড়িতে এসে ঘটনার বিস্তারিত জেনে পত্রিকায় ও টিভিতে নিউজ করলে। মতলব উত্তর থানার ওসি সাহেব আমার বাড়িতে চাউল, ডাল, তৈল ও অন্যান্য খাবারের জিনিস পত্র নিয়ে আসেন।
পরে থানায় সবাইকে ডেকে নিয়ে শাসিয়েছেন। এছাড়া যাদের নামে আমি সাধারন ডায়েরি করেছি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন। আমি স্যারে বিচারে খুশি হয়েছি। স্যার আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এখন আমি এবং আমার পরিবার অনেক খুশি।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন রনি জানান, সাংবাদিকের নিউজ ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। এছাড়া ১ জুলাই বুধবার বৃষ্টিস্নাত পরিবেশে অসহায় ঐ পরিবারটির জন্য আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সাধ্য অনুযায়ী চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার নিয়ে পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।
ওসি এ সময় অসহায় এই পরিবারের পাশে আছেন বলে আশ্বাস দেন এবং এই ঘটনায় জড়িতদের কাউন্সিলরকে সাথে নিয়ে থানায় তলব করেন। একই দিন দুপুরে থানা কম্পাউন্ডের বৈঠক খানায় উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেন। এসময় এই অপকর্ম জড়িতদের কড়া হুশিয়ারি জানিয়ে বলেন, এক ঘরে করে রাখার কোন আইন নেই। এটা অমানবিক কাজ। এই কাজে যারা জরিত তারা সভ্য জগতের মানুষ নয় জানিয়ে যাদের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি আছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান। এছাড়া এই পরিবারের কোন অন্যায় জুলুম নির্যাতন হলে উনি ব্যবস্থা নিবেন জানিয়ে সকলকে মিলে মিশে থাকার নির্দেশ দেন।