০৯:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শেষ মূহুর্তে জমে উঠেছে বারহাট্টার দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী লড়াই

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা :
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৮:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
  • / ৯১

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার দুই হেভিওয়েট প্রার্থী নিজেদের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনের বাকি আর মাত্র মাত্র ২ দিন। দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচনী মাঠে চলছে গরম হাওয়া। চূড়ান্ত লড়াইয়ে নিজেদের স্থান দখলে সরব প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। নির্চনকে সামনে রেখে এলাকার প্রধান সড়ক ও মেঠোপথ প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে। মাইকিং ও গণসংযোগে মুখরিত পুরো উপজেলা।

প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর মধ্যে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল কবির খোকন এবং ঘোড়া প্রতীক নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী সাখাওয়াত হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীই তাদের প্রচারণা চালাতে ছুঁটছেন বিভিন্ন হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লাসহ চষে বেড়াচ্ছেন গ্রামের অলিগলি, রাস্তাঘাট। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে উঠান বৈঠক, গণসংযোগ এবং নির্বাচনী সভা করে ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন আর ভোটারদের দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রার্থীদের সাদাকালো আর রঙ্গিন পোস্টার শোভা পাচ্ছে গ্রামের অলিগলি, হাট বাজার, রাস্তা-ঘাটসহ সর্বত্র। দুই প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকেরা প্রতিদিনই বের করছেন মোটরসাইকেল মহড়া ও মিছিল পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।

চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২০০৯ সালে বারহাট্টা উপজেলাবাসী আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছিলেন। তাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি উপজেলার অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করেছি। আমার জানামতে, উপজেলার ছয় ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যানগণ আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। এতে আমি মোটেও বিচলিত নই। উপজেলাবাসীর দোয়া ও আশীর্বাদ আমার সাথে আছে। আমার দৃঢ বিশ্বাস এই নির্বাচনে জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে ২০০৯ সালের মতো আবার বিপুল ভোটে জয়ী করবেন।’

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান বারহাট্টা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জনগণের ভালবাসায় আমি টানা তিন মেয়াদে বারহাট্টা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে জনগণের পাশে রয়েছি। আমি শুধু সদর ইউনিয়ন পরিষদেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না। এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বারহাট্টা উপজেলার সাত ইউনিয়নের জনগণের পাশে থেকে তাদের সেবা করতে চাই। উপজেলার সাত ইউনিয়নের প্রতি আমার ভালবাসা ও উন্নয়নের স্বপ্নকে সার্থক করতে সহযোদ্ধা হিসাবে বাকি ছয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমার প্রতি আস্থা রেখে তারা আমাকে সমর্থন করেছেন। আমি আশা করছি উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে জয়ী করে আমার উন্নয়নের স্বপ্নকে সার্থক করবেন।’

তিনি আরও বলেন, আমি ফরিদপুরের আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল বিশ্বওলি হযরত শাহ্সূফী খাজাবাবা ফরিদপুরীর ভক্ত। বারহাট্টা উপজেলায় আমার অনেক জাকের ভাই আছেন। তারা আমার পক্ষে দিন-রাত নিরলস ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। খাজা বাবার দোয়া নিয়েই আমি নির্বাচনে নেমেছি, বাবার দোয়ায় আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো ইনশাআল্লাহ্।
সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই খুব কঠিন হবে। কারণ এবার নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে। আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কে শেষ হাসি হাসবেন? তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এই দুই প্রার্থী ভবিষ্যতে বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা উপস্থাপন করে ভোটারদের মন জয়ে ব্যস্ত।

বারহাট্টা সদর উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিমল সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশনের আইনকানুন এবার বেশ কড়া থাকায় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। দুই প্রার্থীই হেবিওয়েট হওয়ায় কে নির্বাচিত হবে তা বলা মুশকিল। নির্বাচনী লড়াইয়ে কেউ কারও থেকে পিছিয়ে নেই। দুই প্রার্থীই আমার ছাত্র দু’জনের প্রতিই আমার আশীর্বাদ রইলো।

উপজেলা সদরের কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীরই জনপ্রিয়তা রয়েছে। এখনও কোন নিশ্চয়তা দেয়া যাচ্ছে না কে হবেন উপজেলা পরিষদের কান্ডারী?
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি জানান, আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

শেষ মূহুর্তে জমে উঠেছে বারহাট্টার দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী লড়াই

আপডেট সময় : ০৫:৩৮:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার দুই হেভিওয়েট প্রার্থী নিজেদের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনের বাকি আর মাত্র মাত্র ২ দিন। দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচনী মাঠে চলছে গরম হাওয়া। চূড়ান্ত লড়াইয়ে নিজেদের স্থান দখলে সরব প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। নির্চনকে সামনে রেখে এলাকার প্রধান সড়ক ও মেঠোপথ প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে। মাইকিং ও গণসংযোগে মুখরিত পুরো উপজেলা।

প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর মধ্যে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল কবির খোকন এবং ঘোড়া প্রতীক নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী সাখাওয়াত হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীই তাদের প্রচারণা চালাতে ছুঁটছেন বিভিন্ন হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লাসহ চষে বেড়াচ্ছেন গ্রামের অলিগলি, রাস্তাঘাট। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে উঠান বৈঠক, গণসংযোগ এবং নির্বাচনী সভা করে ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন আর ভোটারদের দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রার্থীদের সাদাকালো আর রঙ্গিন পোস্টার শোভা পাচ্ছে গ্রামের অলিগলি, হাট বাজার, রাস্তা-ঘাটসহ সর্বত্র। দুই প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকেরা প্রতিদিনই বের করছেন মোটরসাইকেল মহড়া ও মিছিল পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।

চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২০০৯ সালে বারহাট্টা উপজেলাবাসী আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছিলেন। তাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি উপজেলার অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করেছি। আমার জানামতে, উপজেলার ছয় ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যানগণ আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। এতে আমি মোটেও বিচলিত নই। উপজেলাবাসীর দোয়া ও আশীর্বাদ আমার সাথে আছে। আমার দৃঢ বিশ্বাস এই নির্বাচনে জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে ২০০৯ সালের মতো আবার বিপুল ভোটে জয়ী করবেন।’

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান বারহাট্টা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জনগণের ভালবাসায় আমি টানা তিন মেয়াদে বারহাট্টা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে জনগণের পাশে রয়েছি। আমি শুধু সদর ইউনিয়ন পরিষদেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না। এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বারহাট্টা উপজেলার সাত ইউনিয়নের জনগণের পাশে থেকে তাদের সেবা করতে চাই। উপজেলার সাত ইউনিয়নের প্রতি আমার ভালবাসা ও উন্নয়নের স্বপ্নকে সার্থক করতে সহযোদ্ধা হিসাবে বাকি ছয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমার প্রতি আস্থা রেখে তারা আমাকে সমর্থন করেছেন। আমি আশা করছি উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে জয়ী করে আমার উন্নয়নের স্বপ্নকে সার্থক করবেন।’

তিনি আরও বলেন, আমি ফরিদপুরের আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল বিশ্বওলি হযরত শাহ্সূফী খাজাবাবা ফরিদপুরীর ভক্ত। বারহাট্টা উপজেলায় আমার অনেক জাকের ভাই আছেন। তারা আমার পক্ষে দিন-রাত নিরলস ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। খাজা বাবার দোয়া নিয়েই আমি নির্বাচনে নেমেছি, বাবার দোয়ায় আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো ইনশাআল্লাহ্।
সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই খুব কঠিন হবে। কারণ এবার নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে। আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কে শেষ হাসি হাসবেন? তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এই দুই প্রার্থী ভবিষ্যতে বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা উপস্থাপন করে ভোটারদের মন জয়ে ব্যস্ত।

বারহাট্টা সদর উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিমল সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশনের আইনকানুন এবার বেশ কড়া থাকায় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। দুই প্রার্থীই হেবিওয়েট হওয়ায় কে নির্বাচিত হবে তা বলা মুশকিল। নির্বাচনী লড়াইয়ে কেউ কারও থেকে পিছিয়ে নেই। দুই প্রার্থীই আমার ছাত্র দু’জনের প্রতিই আমার আশীর্বাদ রইলো।

উপজেলা সদরের কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীরই জনপ্রিয়তা রয়েছে। এখনও কোন নিশ্চয়তা দেয়া যাচ্ছে না কে হবেন উপজেলা পরিষদের কান্ডারী?
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি জানান, আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন