০৪:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

হঠাৎ ঝড়ে দুমড়ে মুচড়ে একাকার ঘর, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

মো. রাছেল, কচুয়া :
  • আপডেট সময় : ০৪:২৯:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
  • / ৪০
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মো. রাছেল, কচুয়া :

হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট বড় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি।
রবিবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন সহ সদর উত্তর ও দক্ষিন ইউনিয়নের গ্রামের উপর দিয়ে টর্নেডো আঘাত আনে। এসময় বহু ঘরের চাল ও টিন উরে গেছে। শতশত গাছ উপড়ে গেছে ডালা-পালা তছনছ হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের ঝড়ে ও তুমল বৃষ্টির মধ্যে বয়ে যাওয়া ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার মধ্যে থাকা ঘর-বাড়ি, গাছপালা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পার্শ্চবর্তী গ্রাম গুলোতে বৃষ্টি হয়েছে কিন্তু তেমন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
প্রত্যক্ষর্দশীরা জানান, ঘুর্ণিঝড়টি পশ্চিম-উত্তর দিক থেকে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। যে দিকে ঝড় গেছে সে দিকে গাছপালা, বাড়ি-ঘর, মুরগী খামার, টিনসেটের মসজিদ ঘর ও ফসলী জমি ভূট্টা এবং বোরধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হঠাৎ ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের জিলহজ¦ বেগম, এমরান হোসেন, হক মিয়া, আলী আহমেদ, লতিফপুর গ্রামের উত্তর-পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদটি, নোয়াগাঁও গ্রামের ওহাবা বেগম, তেতৈয়া সোহরাব হোসেন মেম্বার, কাউছার আলম, জলা তেতৈয়া অরুণ বৈদের দোকান ঘর, সিংড্ডা, খিড্ডা, সদর দক্ষিন ইউনিয়ন ধলি কচুয়া, কোমরকাশা, রাজাপুর গ্রামের ব্যাপক বিভিন্ন পরিবারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, গত রাতে হঠাৎ করে গ্রামের উপর বয়ে যাওয়া ঝড়ে গ্রামকে লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে। অনেকেরই ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। শুধু তাই নয় ফল গাছ ও ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বিধবা জিলহজ¦ বেগম বলেন, হঠাৎ পশ্চিম দিক থেকে শোঁ শোঁ শব্দ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার একমাত্র বসতঘর বাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমার স্বামী ও কোনো ছেলে সন্তান নেই, আল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নেই। ভিক্ষা করে রাস্তার পাশে ছোট ঘরটা করেছি, ঝড়ে আমার সবকিছু নিয়ে যায়। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।
একই উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের সোহরাব হোসেন বলেন, রাতে কোনো কিছু বোঝার আগেই হঠাৎ বিকট শব্দ হয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই থেমে যায়। ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখি আমার পোল্ট্রি র্ফামের ঘর ভেঙ্গে পুকুরে পরে অনেক মুরগী মারা গেছে । এতে আমার প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কচুয়া পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম বেলায়াত হোসেন বলেন, সন্ধ্যার ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। তবে এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বা কত সংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, হঠাৎ ঝড়ে ফসলী জমি বিশেষ করে ভূট্টা ও বোরধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে খবর পেয়েছি।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছে।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসান বলেন, হঠাৎ ঝড়ে উপজেলার বিশেষ করে ২টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পেয়েছি।
ইউপি সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করা হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

হঠাৎ ঝড়ে দুমড়ে মুচড়ে একাকার ঘর, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

আপডেট সময় : ০৪:২৯:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মো. রাছেল, কচুয়া :

হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট বড় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি।
রবিবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন সহ সদর উত্তর ও দক্ষিন ইউনিয়নের গ্রামের উপর দিয়ে টর্নেডো আঘাত আনে। এসময় বহু ঘরের চাল ও টিন উরে গেছে। শতশত গাছ উপড়ে গেছে ডালা-পালা তছনছ হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের ঝড়ে ও তুমল বৃষ্টির মধ্যে বয়ে যাওয়া ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার মধ্যে থাকা ঘর-বাড়ি, গাছপালা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পার্শ্চবর্তী গ্রাম গুলোতে বৃষ্টি হয়েছে কিন্তু তেমন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
প্রত্যক্ষর্দশীরা জানান, ঘুর্ণিঝড়টি পশ্চিম-উত্তর দিক থেকে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। যে দিকে ঝড় গেছে সে দিকে গাছপালা, বাড়ি-ঘর, মুরগী খামার, টিনসেটের মসজিদ ঘর ও ফসলী জমি ভূট্টা এবং বোরধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হঠাৎ ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের জিলহজ¦ বেগম, এমরান হোসেন, হক মিয়া, আলী আহমেদ, লতিফপুর গ্রামের উত্তর-পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদটি, নোয়াগাঁও গ্রামের ওহাবা বেগম, তেতৈয়া সোহরাব হোসেন মেম্বার, কাউছার আলম, জলা তেতৈয়া অরুণ বৈদের দোকান ঘর, সিংড্ডা, খিড্ডা, সদর দক্ষিন ইউনিয়ন ধলি কচুয়া, কোমরকাশা, রাজাপুর গ্রামের ব্যাপক বিভিন্ন পরিবারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, গত রাতে হঠাৎ করে গ্রামের উপর বয়ে যাওয়া ঝড়ে গ্রামকে লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে। অনেকেরই ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। শুধু তাই নয় ফল গাছ ও ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বিধবা জিলহজ¦ বেগম বলেন, হঠাৎ পশ্চিম দিক থেকে শোঁ শোঁ শব্দ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার একমাত্র বসতঘর বাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমার স্বামী ও কোনো ছেলে সন্তান নেই, আল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নেই। ভিক্ষা করে রাস্তার পাশে ছোট ঘরটা করেছি, ঝড়ে আমার সবকিছু নিয়ে যায়। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।
একই উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের সোহরাব হোসেন বলেন, রাতে কোনো কিছু বোঝার আগেই হঠাৎ বিকট শব্দ হয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই থেমে যায়। ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখি আমার পোল্ট্রি র্ফামের ঘর ভেঙ্গে পুকুরে পরে অনেক মুরগী মারা গেছে । এতে আমার প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কচুয়া পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম বেলায়াত হোসেন বলেন, সন্ধ্যার ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। তবে এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বা কত সংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, হঠাৎ ঝড়ে ফসলী জমি বিশেষ করে ভূট্টা ও বোরধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে খবর পেয়েছি।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছে।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসান বলেন, হঠাৎ ঝড়ে উপজেলার বিশেষ করে ২টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পেয়েছি।
ইউপি সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করা হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন