১০:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

সুন্দরবনে বাঘ গণনা শুরু, বরাদ্দ ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৫:০৩:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৭৩

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মোক্তার হোসেন, কয়রা:

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের বাঘ (রয়েল বেঙ্গল টাইগার) গণনার কাজ শুরু হচ্ছে এ মাসের মধ্যে। ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঘ গণনা শুরু হবে বলে খুলনা নগরীতে অবস্থিত সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফ ও) প্রকল্প পরিচালক ড,আবু নাসের মহসিন। তিনি বলেন, বাঘ জরিপের জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকে তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা ছাড়ের বিষয়টি অনুমোদন পাওয়া গেছে এখন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ছাড় হলেই এ মাসে বাঘ গণনা শুরু হবে।এ জন্য বনে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের (ফাঁদ) কাজ শুরু করবে বন বিভাগ। পাশাপাশি গণনা করা হবে বাঘের খাদ্য হিসেবে বিবেচিত বনে থাকা হরিণ ও শূকরের সংখ্যাও।একই সঙ্গে সুন্দরবনের বাঘ স্থানান্তর, অন্তত দুটি বাঘের শরীরে স্যাটেলাইট কলার স্থাপন ও মনিটরিং করা, বাঘের পরজীবীর সংক্রমণ ও অন্যান্য ব্যাধি এবং এর মাত্রা নির্ণয়, উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হবে।সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। বন বিভাগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন বন কর্মকর্তারা।এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা অঞ্চলের প্রধান বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে, সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল ও সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা এম এ হাসান।লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আবু নাসের মোহসিন হোসেন। তিনি বলেন, প্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এতে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে ও নানান বিরূপ মন্তব্য করছে। এ কারণে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর আওতায় সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ ও সুরক্ষার কাজ করা হবে। এর মধ্যে ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ করা হবে বাঘ গণনায়। ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে বাঘ গণনার জন্য বনের বিভিন্ন এলাকায় ২০০টি বিশেষ ক্যাটাগরির ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।সুন্দরবনের বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে ৪৯টি ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের ৩৪০ জন সদস্য ও চারটি রেঞ্জের কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপের ১৮৫ জন সদস্য রয়েছেন। প্রকল্পের আওতায় তাঁদের প্রশিক্ষণ প্রদান, বিশেষ পোশাক সরবরাহ ও প্রতি মাসে বনকর্মীদের সঙ্গে মাসিক সভা করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলেও জানান আবু নাসের মোহসিন হোসেন।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন প্রায় প্রতিবছর আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জন্য প্রকল্পের আওতায় সুন্দরবনের যে অংশে আগুন লাগার প্রবণতা বেশি, সেসব জায়গায় দুটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ করবে এবং আগুন লাগলে যাতে তাৎক্ষণিকভাবে তা নেভানো যায়, সে জন্য যন্ত্রপাতি, পাইপ ও ড্রোন কিনবে বন বিভাগ। বাঘ যেন লোকালয়ে চলে না আসে, সে জন্য জনবসতি আছে এমন ৬০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের বেড়া দেওয়া হবে। ঘূর্ণিঝড় ও উচ্চ জলোচ্ছ্বাসে বাঘ যেন নিরাপদ আশ্রয় পায়, সে জন্য বনের মধ্যে ১২টি মাটির কেল্লা নির্মাণ করা হবে। বন বিভাগের তথ্যমতে ২০০১সাল থেকে ২০২১সাল পর্যন্ত সুন্দরবনে নানাভাবে অর্ধ শতাধিক বাঘের মৃত্যু হয়েছে।এর মধ্যে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে ২২ টি এবং পশ্চিম বিভাগে ১৬ টি বাঘের মৃত্যু হয়। ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে ১১৪টি। ২০১৫ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা পাওয়া গিয়েছিল ১০৬টি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

সুন্দরবনে বাঘ গণনা শুরু, বরাদ্দ ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা

আপডেট সময় : ০৫:০৩:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মোক্তার হোসেন, কয়রা:

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের বাঘ (রয়েল বেঙ্গল টাইগার) গণনার কাজ শুরু হচ্ছে এ মাসের মধ্যে। ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঘ গণনা শুরু হবে বলে খুলনা নগরীতে অবস্থিত সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফ ও) প্রকল্প পরিচালক ড,আবু নাসের মহসিন। তিনি বলেন, বাঘ জরিপের জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকে তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা ছাড়ের বিষয়টি অনুমোদন পাওয়া গেছে এখন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ছাড় হলেই এ মাসে বাঘ গণনা শুরু হবে।এ জন্য বনে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের (ফাঁদ) কাজ শুরু করবে বন বিভাগ। পাশাপাশি গণনা করা হবে বাঘের খাদ্য হিসেবে বিবেচিত বনে থাকা হরিণ ও শূকরের সংখ্যাও।একই সঙ্গে সুন্দরবনের বাঘ স্থানান্তর, অন্তত দুটি বাঘের শরীরে স্যাটেলাইট কলার স্থাপন ও মনিটরিং করা, বাঘের পরজীবীর সংক্রমণ ও অন্যান্য ব্যাধি এবং এর মাত্রা নির্ণয়, উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হবে।সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। বন বিভাগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন বন কর্মকর্তারা।এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা অঞ্চলের প্রধান বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে, সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল ও সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা এম এ হাসান।লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আবু নাসের মোহসিন হোসেন। তিনি বলেন, প্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এতে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে ও নানান বিরূপ মন্তব্য করছে। এ কারণে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর আওতায় সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ ও সুরক্ষার কাজ করা হবে। এর মধ্যে ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ করা হবে বাঘ গণনায়। ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে বাঘ গণনার জন্য বনের বিভিন্ন এলাকায় ২০০টি বিশেষ ক্যাটাগরির ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।সুন্দরবনের বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে ৪৯টি ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের ৩৪০ জন সদস্য ও চারটি রেঞ্জের কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপের ১৮৫ জন সদস্য রয়েছেন। প্রকল্পের আওতায় তাঁদের প্রশিক্ষণ প্রদান, বিশেষ পোশাক সরবরাহ ও প্রতি মাসে বনকর্মীদের সঙ্গে মাসিক সভা করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলেও জানান আবু নাসের মোহসিন হোসেন।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন প্রায় প্রতিবছর আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জন্য প্রকল্পের আওতায় সুন্দরবনের যে অংশে আগুন লাগার প্রবণতা বেশি, সেসব জায়গায় দুটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ করবে এবং আগুন লাগলে যাতে তাৎক্ষণিকভাবে তা নেভানো যায়, সে জন্য যন্ত্রপাতি, পাইপ ও ড্রোন কিনবে বন বিভাগ। বাঘ যেন লোকালয়ে চলে না আসে, সে জন্য জনবসতি আছে এমন ৬০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের বেড়া দেওয়া হবে। ঘূর্ণিঝড় ও উচ্চ জলোচ্ছ্বাসে বাঘ যেন নিরাপদ আশ্রয় পায়, সে জন্য বনের মধ্যে ১২টি মাটির কেল্লা নির্মাণ করা হবে। বন বিভাগের তথ্যমতে ২০০১সাল থেকে ২০২১সাল পর্যন্ত সুন্দরবনে নানাভাবে অর্ধ শতাধিক বাঘের মৃত্যু হয়েছে।এর মধ্যে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে ২২ টি এবং পশ্চিম বিভাগে ১৬ টি বাঘের মৃত্যু হয়। ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে ১১৪টি। ২০১৫ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা পাওয়া গিয়েছিল ১০৬টি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন