রামগঞ্জে পানির অভাবে ১ হাজার হেক্টর জমির ধানগাছ নিয়ে আশঙ্কায় শত শত কৃষক
- আপডেট সময় : ১০:৪৪:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪
- / ১২৩
মোহাম্মদ আলী :
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ও চন্ডিপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর সেচ প্রকল্প ও বিএডিসির আংশিক খালে পানি না থাকায় ইছাপুর ইউনিয়নের নয়নপুর, নারায়নপুর, শ্যামদানপুরসহ কয়েকটি বিলের ১হাজার হেক্টর চাষকৃত ধানক্ষেতের চারা পুড়ে ছাই হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে।
আজ দুপুরে সরেজমিনে উল্লেখিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ চাষাবাদের জমি শুকনো। রোপনকৃত জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে আছে, কোথাও কোথাও ধানগাছ পানির অভাবে হলুদ বর্ন ধারণ করেছে। জমির পাশ্ববর্তি মূল খালটিতেও পানি নেই।
কৃষক এরশাদ হোসেন (অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট) এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, আমার ১৫ গন্ডা জমি চাষ করেছি। এখন পানি না পেয়ে ধানের চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপর থেকে (চাঁদপুর সেচ প্রকল্প) পানি পাচ্ছি না।
ধারদেনা করে জমিতে ধান রোপন করেছেন স্বপন ও কৃষক আবদুল হান্নান। তারা জানান, ধান রোপনের শুরুতে পানি পেয়ে আমরা আশায় বুক বেঁধেছি। নবদ্দোমে কাজ শুরু করি। কিন্তু ধানের চারা সবুজ হওয়ার কিছুদিন পরেই আমাদের আশার রঙ হলুদ হতে থাকে। খালে পানি না থাকায় জমিতে সেচ দেয়া যাচ্ছে না। চোঁখে অন্ধকার দেখছি এখন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় ঐ এলাকার নয়নপুর হাওরে এবার সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর ধানসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করেছেন কৃষকরা। তার মধ্যে ১ হাজার হেক্টর ধানক্ষেত পানির অভাবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শ্যামদানপুর এলাকার বিএডিসির প্রজেক্ট ম্যানেজার আবদুল মান্নান জানান, আমি বিএডিসি ম্যানেজার-পানি না পাওয়ার কারনে কৃষকের হাতে পিটুনি খাওয়ার জোগাড় হয়েছে। দ্রুত পানির ব্যবস্থা না করলে লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হতে পারে।
কথা হয় কয়েকজন চাষির সাথে- তারা জানান, চলতি মৌসুমে ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে বোরো ধান আবাদ করেছেন তারা। কিন্তু চাঁদপুর সেচ প্রকল্পে পানি সঙ্কট দেখা দেয়ায় রামগঞ্জ খালে পানি সরবরাহ বন্ধ রাখে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানির অভাবে জমিতে সেচ দিতে পারছেন না তারা। দুই একদিনের মধ্যে যদি পানি না পাওয়া যায় তাহলে কাঙ্খিত উৎপাদন নিয়েও তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
নয়নপুর এলাকার বিএডিসির প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. সবুজ জানান, খালে পানি নাই। পানি আসলেও আমরা পানি তুলতে পারিনা-জায়গায় জায়গায় বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার ফলে পানি এ বিল পর্যন্ত আসতে পারেনা। উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে আমরা চাষাবাদ করতে পারবো।
কথা হয় স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সবুজ হোসেনের সাথে। তিনি জানান, আমাদের বাঁচান-আমাদের জমি বাঁচান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পানি না পেলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
এ ব্যপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার জানান, আমি বিগত সমন্ময়সভায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন অল্প কিছুদিনের মধ্যে পানির ব্যবস্থা করা হবে। আশা করছি আমরা নিরাশ হবো না।