১০:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বাকেরগঞ্জ ডিসি রোডে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে দুই জেলার মানুষ

মো. রানা সন্যামত, বরিশাল :
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৭:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১৪৫

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মো. রানা সন্যামত, বরিশাল :

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই উনিয়নের ডিসি রোড কারখানা নদীর খেয়া ঘাটে প্রতিদিন হাজারো মানুষ নদী পারাপারে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। নদী পানি যখন ভাটায় শুকিয়ে যায় তখন আরো চরম আকারে ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের।
প্রতিদিন স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ ব্যাংক বীমা হাসপাতা ও জেলা ও উপজেলর অন্তত ৫-৬ হাজার মানুষ এই নদী পাড়ি দিয়ে চলাচল করতে হয়।নদীর এই জায়গাটিতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এলে ও সুফল পায়নি। স্বাধীনতার ৫২ বছরে ও আশার আলো দেখেনি এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। তাই যুগের পর যুগ ধরে বাধ্য হয়েই খেয়া নৌকায় করে মানুষদের নদী পারাপার হতে হচ্ছে।
কবাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: জহিরুল হক বাদল তালুকদার বলেন, একটি সেতুর জন্য দুই উপজেলার মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ফরিদপুর ও দুর্গাপাশা ইউনিয়ন সহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা বাউফল, দশমিনা, প্রায় কয়েকশো গ্রামের লাখ লাখ মানুষ এখন দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি,এখানে সেতুটি খুব জরুরি।
স্থানিয়রা অভিযোগ করে বলেন,কেউ যদি রাতের বেলা অসুস্থ হয় তাহলে তাকে মেডিকেলে নেয়া সম্ভব হয় না। অনেক সময় রুগীরা পথের মধ্যেই মারা যায়। কারণ তখন খেয়াঘাটে নৌকা থাকে না। শুকনো মৌসুম দিনের বেলায় প্রায় ৪ ঘন্টা খেয়া পারাপার বন্ধ থাকে। কারখানা নদীতে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে দুই উপজেলার লাখ লাখ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে,কবাই ইউনিয়নের ডিসি রোড কারখানা নদীতে ভাটা থাকায় দুপুর থেকে শেষ বিকেল অব্দি প্রায় ৪ ঘণ্টা জোয়ারের অপেক্ষায় মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এরপর প্রায় আধা কিলোমিটার কাদামাটির চরের মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেলটি ট্রলারে উঠাতে হয়।
এরকম ঘটনা বাকেরগঞ্জ ডিসি রোড খেয়াঘাটের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কম থাকায় চরের মধ্যকার খালটি শুকিয়ে যায়, প্রায় আধা কিলোমিটার কাদামাটির চর পেরিয়েও অনেকসময় রক্ষা হয় না। ডুবোচর থাকায় হাটুসমান পানির মধ্যেই ট্রলারে ওঠানামা করতে হয় যাত্রীদের। ফরিদপুর ও দূর্গাপাশা ইউনিয়ন,বাউফলের কালিশুরী, ধুলিয়া, কেশবপুর, সূর্যমনি, নূরাইনপুর, কনকদিয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বরিশাল ও বাকেরগঞ্জ সদরের সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই ডিসি রোড খেয়াঘাট।
গত কয়েক বছর চরের মধ্য দিয়ে নদীর পাড় পর্যন্ত কাঠের পুল দিয়ে মানুষের হাটার ব্যবস্থা করা হলেও গত বছর এবং চলতি বছর তা নির্মাণ করা হয়নি। নৌকার মাধ্যমে বাকেরগঞ্জ ও বাউফল, দশমিনা উপজেলার মানুষ কারখানা নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলা শহর ও জেলা শহর বরিশালে আসতে হয়। দুই উপজেলার চলাচলকারী লোকজনের মধ্যে স্কুল-কলেজের অন্তত এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এই নদী পারাপারের সময় ট্রলার ডুবির ঘটনায় সাতক্ষীরার এক শ্রমিকের প্রাণ গিয়েছে দুইদিন পরে লাশ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বলে এলাকা সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া সেতুটি নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ সেতু নির্মাণ হলে দুই উপজেলার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন হবে। আমরা অতীতেও চেষ্টা করেছি জাইকা সংস্থা ও এলজিইডি থেকে বরাদ্দ নিয়ে সেতুটি নির্মাণের। এখনো চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং নদী থেকে যাত্রী পর্যন্ত খালটি পুনরায় খনন করে একটি ঘাটলার ব্যবস্থা করে দিব বলে জানিয়েছেন। যাত্রীদের চলাচলের জন্য যাতে ব্যাঘাত না ঘটে ডিসি রোডের ঘাটের বিষয়ে এমপি সাহেবের সাথে আমাদের আলাপ আলোচনা হয়েছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

বাকেরগঞ্জ ডিসি রোডে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে দুই জেলার মানুষ

আপডেট সময় : ০৬:৩৭:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মো. রানা সন্যামত, বরিশাল :

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই উনিয়নের ডিসি রোড কারখানা নদীর খেয়া ঘাটে প্রতিদিন হাজারো মানুষ নদী পারাপারে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। নদী পানি যখন ভাটায় শুকিয়ে যায় তখন আরো চরম আকারে ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের।
প্রতিদিন স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ ব্যাংক বীমা হাসপাতা ও জেলা ও উপজেলর অন্তত ৫-৬ হাজার মানুষ এই নদী পাড়ি দিয়ে চলাচল করতে হয়।নদীর এই জায়গাটিতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এলে ও সুফল পায়নি। স্বাধীনতার ৫২ বছরে ও আশার আলো দেখেনি এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। তাই যুগের পর যুগ ধরে বাধ্য হয়েই খেয়া নৌকায় করে মানুষদের নদী পারাপার হতে হচ্ছে।
কবাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: জহিরুল হক বাদল তালুকদার বলেন, একটি সেতুর জন্য দুই উপজেলার মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ফরিদপুর ও দুর্গাপাশা ইউনিয়ন সহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা বাউফল, দশমিনা, প্রায় কয়েকশো গ্রামের লাখ লাখ মানুষ এখন দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি,এখানে সেতুটি খুব জরুরি।
স্থানিয়রা অভিযোগ করে বলেন,কেউ যদি রাতের বেলা অসুস্থ হয় তাহলে তাকে মেডিকেলে নেয়া সম্ভব হয় না। অনেক সময় রুগীরা পথের মধ্যেই মারা যায়। কারণ তখন খেয়াঘাটে নৌকা থাকে না। শুকনো মৌসুম দিনের বেলায় প্রায় ৪ ঘন্টা খেয়া পারাপার বন্ধ থাকে। কারখানা নদীতে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে দুই উপজেলার লাখ লাখ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে,কবাই ইউনিয়নের ডিসি রোড কারখানা নদীতে ভাটা থাকায় দুপুর থেকে শেষ বিকেল অব্দি প্রায় ৪ ঘণ্টা জোয়ারের অপেক্ষায় মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এরপর প্রায় আধা কিলোমিটার কাদামাটির চরের মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেলটি ট্রলারে উঠাতে হয়।
এরকম ঘটনা বাকেরগঞ্জ ডিসি রোড খেয়াঘাটের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কম থাকায় চরের মধ্যকার খালটি শুকিয়ে যায়, প্রায় আধা কিলোমিটার কাদামাটির চর পেরিয়েও অনেকসময় রক্ষা হয় না। ডুবোচর থাকায় হাটুসমান পানির মধ্যেই ট্রলারে ওঠানামা করতে হয় যাত্রীদের। ফরিদপুর ও দূর্গাপাশা ইউনিয়ন,বাউফলের কালিশুরী, ধুলিয়া, কেশবপুর, সূর্যমনি, নূরাইনপুর, কনকদিয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বরিশাল ও বাকেরগঞ্জ সদরের সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই ডিসি রোড খেয়াঘাট।
গত কয়েক বছর চরের মধ্য দিয়ে নদীর পাড় পর্যন্ত কাঠের পুল দিয়ে মানুষের হাটার ব্যবস্থা করা হলেও গত বছর এবং চলতি বছর তা নির্মাণ করা হয়নি। নৌকার মাধ্যমে বাকেরগঞ্জ ও বাউফল, দশমিনা উপজেলার মানুষ কারখানা নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলা শহর ও জেলা শহর বরিশালে আসতে হয়। দুই উপজেলার চলাচলকারী লোকজনের মধ্যে স্কুল-কলেজের অন্তত এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এই নদী পারাপারের সময় ট্রলার ডুবির ঘটনায় সাতক্ষীরার এক শ্রমিকের প্রাণ গিয়েছে দুইদিন পরে লাশ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বলে এলাকা সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া সেতুটি নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ সেতু নির্মাণ হলে দুই উপজেলার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন হবে। আমরা অতীতেও চেষ্টা করেছি জাইকা সংস্থা ও এলজিইডি থেকে বরাদ্দ নিয়ে সেতুটি নির্মাণের। এখনো চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং নদী থেকে যাত্রী পর্যন্ত খালটি পুনরায় খনন করে একটি ঘাটলার ব্যবস্থা করে দিব বলে জানিয়েছেন। যাত্রীদের চলাচলের জন্য যাতে ব্যাঘাত না ঘটে ডিসি রোডের ঘাটের বিষয়ে এমপি সাহেবের সাথে আমাদের আলাপ আলোচনা হয়েছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন