ইউপি সদস্য বাউল ছালমা বিটিভি ও বেতারের তালিকাভুক্ত কণ্ঠশিল্পী
- আপডেট সময় : ০৩:২২:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪
- / ১৩০
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল বড়ইয়া ইউনিয়নের মেয়ে ছালমা বেগম। বিশখালি নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় বেড়ে ওঠা ছালমার, স্বামীর বাড়িও একই এলাকায়। দরিদ্র ঘরে জন্ম নেয়া ছালমা বেগমের লেখাপড়ার দৌড় তেমন না হলেও গানের প্রতি ভালোবাসা কমাতে পারেনি শত দারিদ্রতা। আর সেই শক্তি দিয়েই ১১ ডিসেম্বর-২০২৩ এর ফাইনাল অডিশনে সে পল্লীগীতির তালিকাভুক্ত নিয়মিত শিল্পী হয়েছেন বাংলাদেশ টেলিভিশনে এবং বাউল গানের নিয়মিত কণ্ঠশিল্পী হয়েছেন বাংলাদেশ বেতারের।
উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কৃষক মরহুম ইয়াকুব আলীর ২য় মেয়ে এবং ৯নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় সমাজকর্মী ও সাংবাদিক আলমগীর শরিফের স্ত্রী এবং ইউনিয়নের ৭,৮,৯ ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য। সালমা বেগম ইউপি সদস্য হিসেবেও এলাকায় বেশ জনপ্রিয়। মানব সেবায় তার প্রতিনিয়ত ছুটে চলাই এই জনপ্রিয়তার কারন। মানব সেবার পাশাপাশি প্রতিনিয়তই করে থাকেন কন্ঠের সেবা। তাইতো আজ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের মত জায়গায় অবস্থান করে নিয়েছেন তিনি।
বাউল ছালমা নামে পরিচিতি লাভ করা ছালমা বেগমের গানে যেমন দক্ষতা তেমন সামাজিক বিভিন্ন ভালো কর্মকান্ডের কারনেও আলোচিত। অদম্য মনোবল নিয়ে এগিয়ে চলার কারনে আজকে তিনি হয়েছেন রাজাপুর উপজেলা ও ঝালকাঠি জেলার শ্রেষ্ঠ জয়ীতা। পেয়েছেন-২০২৩ সালের আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবসে জেলার অপরাজিতা নেটওয়ার্ক’র সম্মাননা স্মারক। গান গেয়ে তিনি অর্জন করেছেন একাধিক সনদ ও সম্মাননা স্মারক। এছাড়াও নিজেকে সাবলম্ভী হিসেবে গড়ে তুলতে সেলাই কাজ, কৃষি কাজ, হাস মুরগী ও গবাদিপশু পালন, মাছ চাষ সহ একাধিক প্রশিক্ষণের সনদ আছে তার দক্ষতার ঝুলিতে।
গানের প্রতি তার টান এবং ভালোবাসা দেখে স্থানীয় সংগীতশিল্পী আব্দুর রাজ্জাক তাকে গান শেখানোর দায়িত্ব নেন স্থানিয় স্কুলে ৪র্থ শ্রেণীতে পড়া অবস্থায়। ২০০৮ ইং সন থেকে এর পাশাপাশি গানে যথেষ্ট সহযোগীতা করেছেন রাজাপুর সদরের মাঈনুল মৃধা, বরিশালের সংগীত পরিচালক ঈমন খান, রাজাপুরের আসলাম হোসেন মৃধা ও সিরাজুল ইসলাম। এছাড়াও সকল ভালো কর্মে উৎসাহিত করেছে জেলা উপজেলার সাংবাদিকরাসহ সকল পদমর্যাদার কর্মকর্তারা। গুরুজনের শিক্ষা পেয়ে তিনি উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অনেক পুরস্কার জিতে নেন। এরপরে স্বমীর ইচ্ছা এবং প্রচেষ্টায় আজকে ছালমা বেগম এ পর্যন্ত এসেছেন। ছোটবেলা থেকেই সংগীতপ্রেমী হওয়ায় নিজেই অর্ধশতাধিক গান রচনা, সুর দেওয়া ও সংগীত পরিবেশন করে সুনাম অর্জন করেছেন। জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমন্ত্রিত হয়ে দেশাত্মবোধক, বাউল, পল্লীগীতি, লোকগীতি, ভাওয়াইয়া,ছায়াছবি ও ফোক গান গেয়ে থাকেন ছালমা। তিনি এখন সবার কাছে বাউল ছালমা নামেই পরিচিত।