সোনারগাঁয়ে মহাসড়ক ভাড়া দিয়ে সোহেলের মাসে আয় লাখ টাকা!
- আপডেট সময় : ০৯:১১:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩
- / ৯৬
প্রতিদিনের নিউজ:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া বাস স্ট্যান্ডে উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসের সামনের মহাসড়কের একাংশ ভাড়া দিয়ে মাসে লক্ষ টাকা আয় করছে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের গুহাট্টা গ্রামের মৃত মো. নায়েব আলীর ছেলে সোহেল। ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে নিরবে চলছে এ চাঁদাবাজি। শুধু মহাসড়কই নয়, ফুটপাত সম্পূর্ণ দখল করে রেখেছে সোহেল মিয়া। বিষয়টির পুলিশ-প্রশাসন জানে বলেও জানা গেছে।
উপজেলার মোগরাপাড়া বাসস্ট্যান্ড একটি জনবহুল এলাকা। এই এলাকায় ফুটপাত দখল করে হকারদের ভ্রাম্যমাণ দোকান চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। মহাসড়ক ৪লেনে উন্নীত হওয়ার পরে হকারদের কাছে দখল হয়ে গেছে তার অংশ বিশেষ। বাহারী দোকান রয়েছে এই ফুটপাত ও মহাসড়কে। তৈরি পোশাক, স্টেশনারি, কাঁচাবাজার, চায়ের দোকান, খাবার ও ফলের দোকান।
জনবহুল এলাকা হওয়ায় একজন ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী সব দোকানই রয়েছে ফুটপাত ও মহাসড়কে। বিভিন্ন সময় পুলিশ ফুটপাতে অভিযান পরিচালনা করলেও একটি সংঘবদ্ধ চক্রের কারণে সকল অভিযানই ব্যর্থ হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, মহাসড়ক ও ফুটপাত হকারদের দখলে থাকায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছেন পথচারীরা। মোগরাপাড়া চৌরাস্তার বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশে বড় বড় মার্কেট ও বিপনী বিতান গুলো প্রতিমাসে ক্ষতি গুনছে হকারদের কারণে। ফুটপাতে সব ধরনের পণ্য বিক্রি হওয়ায় খদ্দেররা মার্কেটে প্রবেশ না করে ফুটপাত থেকেই কেনাকাটা করে নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুটপাতের সাধারণ হকারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ফুটপাতে দোকানভেদে সোহেলকে অগ্রিম দিতে হয় ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা। এরপর প্রতিদিন একটি দোকান থেকে চাঁদা আদায় করা হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে। এভাবে শুধু মহাসড়কের ১৫থেকে ২০ দোকান থেকে মাসে গড়ে প্রায় লক্ষাদিক টাকা আদায় করে থাকে সোহেল। এতে করে ক্ষীণ হয়ে গেছে মহাসড়ক। প্রতিনিয়ত যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে,ঘটছে দুর্ঘটনা।
সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক মো.নাসির বলেন, মোগরাপাড়া চৌরাস্তার মহাসড়ক, ফুটপাত ও ওভারব্রিজ যেভাবে দখল হয়ে আছে, তাতে জনগণের চলাচলের রাস্তা আছে কিনা তা সন্ধিহান। এ কারণে পথচারীদের চলতে হচ্ছে মহাসড়ক দিয়ে। পথচারীরা মহাসড়ক ব্যবহার করায় প্রতিনিয়ত ট্রাফিক জ্যাম ও সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
উক্ত বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে চাঁদাবাজ সোহেল বলেন, আমি যুবলীগ করি, আমাদের পাটি আফিসের সামনে দোকান পাট আমরাই বসাইছি। এই দোকান পাট বসানোর ব্যাপারে আমাদের পাটি আফিসের নেতারা সবাই জানে। ওই পাটি আফিসের সমস্ত দায়িত্ব আমি পালন করে থাকি। ওই ভাসমান দোকান পাট থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণের চাঁদা তোলা। ওই চাঁদার টাকা তুলে আমাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য খরচ করে থাকি। আমাদের পাটি আফিসের উল্ট পাশের যে দোকান পাট বসানো হয়েছে সে গুলো বিএনপির লোকেরা বসাইছে, তারা ওখান থেকে প্রতিদিন চাঁদা তুলে। চাঁদাবাজ সোহেল আমাদের প্রতিবেদকে বলেন আপনি আমাদের আফিসে আসেন চায়ের দাওয়াত রইল।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল হক বলেন, মোগরাপাড়া বাস স্ট্যান্ডের উভয় পাশের মহাসড়কের বাই লেন দিয়ে যান চলাচল করবে। এ মহাসড়কে কোনো দোকানপাট বসানো যাবেনা। সুনির্দিষ্ট চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যথা শীঘ্রই আবার এসব দোকানপাট উচ্ছেদ করা হবে।