১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

মৌসুম শেষেও ইলিশের খরা কাটল না, হতাশ জেলেরা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৪:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৮১

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মমিনুল ইসলাম:

ইলিশ শিকারের চলমান মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এর মধ্যে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে জাল নিয়ে শিকারে নামতে পারছেন না জেলেরা। এতে তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের ভাষায়, মৌসুমজুড়ে যেন ইলিশের খরা চলেছে। শেষ সময়ে এসেও তা আর কাটেনি।
মতলব উত্তরের বাবুর বাজার ইলিশ মোকামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক দিন বাদে এখানে ইলিশ আসা শুরু হয়েছিল। নদীর মাছও ধরা পড়ছিল। মোকামে প্রতিদিন ১০০-১৫০ মণ কেনাবেচা চলছিল। দামও কিছুটা কমেছিল। কিš‘ এখন আবার সরবরাহ কমে দাম বেড়ে গেছে।
ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, রপ্তানিযোগ্য এলসি আকারের (প্রতিটি ৬০০-৯০০ গ্রাম) ইলিশ কেজি প্রতি ১ হাজার ২০০-১ হাজার ৩০০ টাকা, এক কেজি আকারের ১ হাজার ৪০০-১ হাজার ৫০০ টাকা এবং আধা কেজির আকারের ইলিশ ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যদিও গত শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত কেজিতে দাম ২০০-২৫০ টাকা কম ছিল।
আড়ৎদার সুমন বেপারী বলেন, দাম আবার বেড়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় সাগরে যেতে পারছেন না জেলেরা। যে কারণে সাগরের মাছ আসছে না। আগে ৭০০ গ্রাম আকারের সাগরের ইলিশ কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ৬০০-৭০০ টাকায়। যে কারণে নদীর ইলিশের দামও ছিল কম।
এদিকে পাইকারি দাম বেশি হওয়ায় খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। ছেংগারচর বাজার ঘুরে ইলিশের দাম পাইকারি অপেক্ষা ২০০ টাকা বেশি দেখা গেছে।
বাজারে মাছ কিনতে আসা চাকরিজীবী সামছুল হক বলেন, ইলিশের স্বাদ এ বছর আর পাননি সাধারণ মানুষ। আকাশচুম্বী দামের কারণে মধ্যবিত্তরা তো ইলিশ কিনতে সাহসই পাচ্ছেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে মেঘনা নদীর পাড়ে সারি সারি ট্রলার এসে ভিড়েছে নিষেধাজ্ঞার আগমুহূর্তেও ইলিশ না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন মতলব উত্তরের উপজেলার জেলেরা।
ষাটনলের জেলে হরি বর্মন ও ব্রজ গোপাল বর্মন জানান, এবার ইলিশের খরার মৌসুম গেছে। নদীতে মাছ নেই। তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আসছে। একই কথা জানিয়েছেন এখলাছপুর ইউনিয়নের জেলে রোমান মিয়া ও সুজন বর্মন।
মৌসুম জুড়ে ইলিশে কেন খরা গেল এর নির্দিষ্ট কোনো কারণ দেখাতে পারেনি মৎস্য অধিদপ্তর। মতলব উত্তর সিনিযর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম বলেন, এই জেলাতে ইলিশ ভালোই পাওয়া গিয়েছিল। এখন হঠাৎ আমদানি কমায় দাম কিছুটা বেড়েছে। এই কর্মকর্তা জানান, এবার বৃষ্টিও সময়মতো হয়নি। তবে এখন বৃষ্টি হওয়ায় ইলিশ কিন্ত কম-বেশি ধরা পড়ছে। নিষেধাজ্ঞার আগ পর্যন্ত আহরণ বাড়বে। নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গবেষকেরা যাচাই-বাছাই করে দেখেছেন, মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের বিধিনিষেধ ফলপ্রসূ হয়।
উল্লেখ,ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। এটি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে চাঁদপুর জেলা টাস্কফোর্স কমিটির প্রস্থতিসভা হয়েছে। এতে ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

মৌসুম শেষেও ইলিশের খরা কাটল না, হতাশ জেলেরা

আপডেট সময় : ০৮:৩৪:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মমিনুল ইসলাম:

ইলিশ শিকারের চলমান মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এর মধ্যে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে জাল নিয়ে শিকারে নামতে পারছেন না জেলেরা। এতে তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের ভাষায়, মৌসুমজুড়ে যেন ইলিশের খরা চলেছে। শেষ সময়ে এসেও তা আর কাটেনি।
মতলব উত্তরের বাবুর বাজার ইলিশ মোকামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক দিন বাদে এখানে ইলিশ আসা শুরু হয়েছিল। নদীর মাছও ধরা পড়ছিল। মোকামে প্রতিদিন ১০০-১৫০ মণ কেনাবেচা চলছিল। দামও কিছুটা কমেছিল। কিš‘ এখন আবার সরবরাহ কমে দাম বেড়ে গেছে।
ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, রপ্তানিযোগ্য এলসি আকারের (প্রতিটি ৬০০-৯০০ গ্রাম) ইলিশ কেজি প্রতি ১ হাজার ২০০-১ হাজার ৩০০ টাকা, এক কেজি আকারের ১ হাজার ৪০০-১ হাজার ৫০০ টাকা এবং আধা কেজির আকারের ইলিশ ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যদিও গত শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত কেজিতে দাম ২০০-২৫০ টাকা কম ছিল।
আড়ৎদার সুমন বেপারী বলেন, দাম আবার বেড়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় সাগরে যেতে পারছেন না জেলেরা। যে কারণে সাগরের মাছ আসছে না। আগে ৭০০ গ্রাম আকারের সাগরের ইলিশ কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ৬০০-৭০০ টাকায়। যে কারণে নদীর ইলিশের দামও ছিল কম।
এদিকে পাইকারি দাম বেশি হওয়ায় খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। ছেংগারচর বাজার ঘুরে ইলিশের দাম পাইকারি অপেক্ষা ২০০ টাকা বেশি দেখা গেছে।
বাজারে মাছ কিনতে আসা চাকরিজীবী সামছুল হক বলেন, ইলিশের স্বাদ এ বছর আর পাননি সাধারণ মানুষ। আকাশচুম্বী দামের কারণে মধ্যবিত্তরা তো ইলিশ কিনতে সাহসই পাচ্ছেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে মেঘনা নদীর পাড়ে সারি সারি ট্রলার এসে ভিড়েছে নিষেধাজ্ঞার আগমুহূর্তেও ইলিশ না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন মতলব উত্তরের উপজেলার জেলেরা।
ষাটনলের জেলে হরি বর্মন ও ব্রজ গোপাল বর্মন জানান, এবার ইলিশের খরার মৌসুম গেছে। নদীতে মাছ নেই। তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আসছে। একই কথা জানিয়েছেন এখলাছপুর ইউনিয়নের জেলে রোমান মিয়া ও সুজন বর্মন।
মৌসুম জুড়ে ইলিশে কেন খরা গেল এর নির্দিষ্ট কোনো কারণ দেখাতে পারেনি মৎস্য অধিদপ্তর। মতলব উত্তর সিনিযর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম বলেন, এই জেলাতে ইলিশ ভালোই পাওয়া গিয়েছিল। এখন হঠাৎ আমদানি কমায় দাম কিছুটা বেড়েছে। এই কর্মকর্তা জানান, এবার বৃষ্টিও সময়মতো হয়নি। তবে এখন বৃষ্টি হওয়ায় ইলিশ কিন্ত কম-বেশি ধরা পড়ছে। নিষেধাজ্ঞার আগ পর্যন্ত আহরণ বাড়বে। নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গবেষকেরা যাচাই-বাছাই করে দেখেছেন, মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের বিধিনিষেধ ফলপ্রসূ হয়।
উল্লেখ,ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। এটি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে চাঁদপুর জেলা টাস্কফোর্স কমিটির প্রস্থতিসভা হয়েছে। এতে ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন