চোরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে চোরের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে সাবেক মেয়রের ব্যানার
- আপডেট সময় : ০৫:১০:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩
- / ৫৮
রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা:
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে চোরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের জন্য জানানো হয় থানা-পুলিশকে। এর পরও কোন লাভ হয়নি। কক্ষ খালি রেখে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে গেলেও ঘটে চুরির ঘটনা। অবশেষে শেষ অবলম্বন হিসাবে বাড়ির সামনে বড় ব্যানার টানিয়ে চোরের প্রতি সদয় হওয়ার অনুরোধ জানালেন সাবেক পৌর মেয়র মো. মাহবুবুন নবী।
সম্প্রতি মোহনগঞ্জ পৌর শহরের দক্ষিণ দৌলতপুর এলাকার শেখবাড়ীর বাসিন্দা সাবেক পৌর মেয়র মো. মাহবুবুন নবী শেখ এ ব্যানার টানিয়েছেন। পরে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
সাবেক এই পৌর মেয়র মো. মাহবুবুন নবী শেখ প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের মামা। ব্যানারে মাহবুবুন নবী শেখ লেখেন, ‘চুরির সঙ্গে সম্পৃক্তদের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমাদের বাড়িতে চুরি করার মতো মূল্যবান কোনো সম্পদ নেই। তাই আমাদের বাড়িতে চুরির চেষ্টা করা আপনাদের মূল্যবান সময়ের অপচয়। অপরদিকে চুরির পর ঘর গোছানো আমাদের জন্য কষ্টের কাজ। ভবিষ্যতে চুরির পরিকল্পনায় বিষয়গুলি আমলে নেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল।
সাবেক মেয়র বলেন, মোহনগঞ্জ পৌর শহরে চুরির ঘটনা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। প্রতিদিনই বেশ কয়েকটা বাসায় চুরির ঘটনা ঘটছে। আমার বাসায় এই কয়েক দিনে চারবার চুরি হয়েছে। চোরেরা এতটাই কৌশলী যে, একমুহূর্তের জন্য ঘরের বাইরে গেলে সব চুরি করে নিয়ে যায়। তারা এতটাই ধূর্ত যে, ঘরে তালা দিয়েও চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশে জানিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। পুলিশ চোর ধরে আদালতে পাঠালে পরদিনই জামিনে এসে আবার চুরি করতে শুরু করে। চোরের কাছে আমরা অসহায়। তাই ব্যানারে লিখে চোরের কাছেই অনুরোধ জানিয়েছি।
ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে মোহনগঞ্জ পৌর শহরে চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই শহরের তিন-চারটি বাসায় চুরির ঘটনা ঘটছে। শহরের বাসিন্দারা চোর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায়ও ঘরে প্রবেশ করে চুরি করছে। গ্রিল কেটে ও শক্ত তালা ভেঙে চোর ঢোকে।
মোহনগঞ্জ পৌর শহরের গার্মেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবু সাঈদ বলেন, মাস খানেকের মধ্যে বাজারের চার-পাঁচটি দোকানে চুরি হয়েছে। প্রায় কয়েক লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। চুরি রোধে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ীরা সমন্বয় করে পাহারাদার টিম করা প্রয়োজন। পুলিশ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে এবং তারাও পুলিশের সঙ্গে তথ্য বিনিয়ম করতে পারবে। তাহলে চুরি রোধ করা সম্ভব।
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটা চুরির ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। চুরির ঘটনায় গত কয়েক মাসে অনেক গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ছাড়া বাজারে চুরির ঘটনায় একটি বড় চোর চক্রকে গ্রেপ্তার করে মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। কিছুদিন পর জামিনে এসে আবার চুরি শুরু করলে ফের তাঁদের গ্রেপ্তার করেছি।
ওসি আরও বলেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাতের পাহারাও বাড়ানো হয়েছে। চুরি রোধে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। জনগণকেও চুরি রোধে সতর্ক থাকতে হবে।