লক্ষ্মীপুরে পলিটেকনিকে অশ্লীল আচারণ অনিয়মিত ক্লাস প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- আপডেট সময় : ০৭:৪৯:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০২৩
- / ৫৯
প্রতিদিনের নিউজ:
শিক্ষকদের অশ্লীল আচারণ,অনিয়মিত ক্লাস করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে বিক্ষোভ করেছে লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন দাবী উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: জহিরুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা বিভিন্ন অযুহাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে অশ্লীল আচরণ করেন।
এবিষয়ে বারবার জানানো হলেও অধ্যক্ষ কোন পদক্ষেপ নেননি। স্মারকলিপিতে আগামী (১৫ মার্চ) এর মধ্যে সমস্যার সমাধান না করলে কঠোর আন্দোলন হুশিয়ারি দেয় ফুঁসে উঠা শিক্ষার্থীরা। এর আগে (১৯ ফেব্রুয়ারী) বিভিন্ন দাবীতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছিলো সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তখনও অধ্যক্ষ তাদের দাবী পুরণের আশ্বাস দিলে তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
স্মারকলিপি সূত্রে জানা গেছে, গত (২ মার্চ) বুধবার ৪র্থ পর্বের ১ম শিফটের প্যাক্টিকাল পরীক্ষা চলছিলো। এসময় হঠাৎ করে কম্পিউটার বিভাগের চীপ ইনস্ট্রাক্টর (টেক) আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ মুসফিকুর রহমান শিক্ষার্থীদের বলেন, তোমরা দেখাদেখি করে লেখো, তোমাদের মা-বাবার (অশ্লীল ভাষা…) সমস্যা ছিলো। তাই তোমরা এমন করো। জন্ম থেকেই তোরা হারাম হয়ে এসেছিস। তোদের বাবা-মা’র রক্ত হারাম। এছাড়া মেয়েদের বাসঘরের গোপনীয়তা নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন তুলেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিষ্ঠানে এসেছি পড়ালেখার পাশাপাশি নৈতিকতা ও শিষ্টাচার শিখতে। কিন্তু ওনার আপত্তিকর এসব মন্তব্যে শিক্ষার্থীদের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত। তারা ক্ষুব্ধ। এজন্য আমরা এই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছি পাশাপাশি তার অব্যহতি ও শিক্ষার্থীদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এজন্য প্রতিষ্ঠান অধ্যক্ষকে আগামী (১৫ মার্চ) পর্যন্ত সময় দিয়েছি। যদি তিনি নির্দিষ্ঠ সময়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করেন তাহলে আমরা ক্লাস বর্জন করে কঠোর আন্দোলনের করবো।
তারা আরও জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়মিত ক্লাস হয়না, শিক্ষকরা ক্লাসে আসে না, প্যাক্টিকেল ক্লাস হয়না বললেই চলে, শিক্ষা উপকরণ ঘাটতি অথচ প্রতি বছর টেন্ডারের মাধ্যমে নতুন সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়, টয়লেট ও শ্রেণী কক্ষ ময়লা আবর্জনা থাকে, পরিস্কার থাকে না, শিক্ষকদের হাতে মার্কস থাকায় অনিয়মের প্রতিবাদ করতে পারে না ছাত্ররা।
অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ মুসফিকুর রহমান জানান, একটি পক্ষ আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। সকালেই ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়টি আমার জানা নেই।
এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: জহিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের একটি স্মারকলিপি পেয়ছি। আমি সমস্যার সমাধান করবো। তবে স্মারকলিপিটি সাংবাদিকদের দেখানো সম্ভব নয়।
উল্লেখ, লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয়ের প্রায় ৩ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার ভাগবাটোয়ারা পায়তারা চালানোর অভিযোগ উঠে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ জহিরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে। ওই প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষককে সাথে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ জহিরুল ইসলাম সরাসরি ভাগবাটোয়ারা পায়তারা করছেন বলে টেন্ডারে অংশগ্রহনকারী একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।