বন বিভাগে মাঠ পর্যায়ে পদোন্নতি না দিয়ে নতুন নিয়োগ প্রদানে বাড়ছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা
- আপডেট সময় : ১০:৫৯:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ২০২৩
- / ৬২
প্রতিদিনের নিউজ:
বন বিভাগ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ। বিশ্বের পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ভুমিকা রাখছেন বর্তমান বাংলাদেশের বন বিভাগ। কিন্ত যারা বছরের পর বছর বন বিভাগকে বিশুদ্ব সেবা দিয়ে যাচ্ছেন মাঠ পযায়ে তাদেরকে একই পদে রেখে নতুন করে নিয়োগ দিচ্ছেন অধিদপ্তর। এতে বন অধিদপ্তরে মাঠ পর্যায়ে বাড়ছে ক্ষোভ ও হতাশ। অভিযোগের তীর কিছু সংখ্যক সিনিয়র কর্মকর্তাদের দিকে ।
অনুসন্ধানে জানা যায়,বন অধিদপ্তরের ১৯৯৫ সনের নিয়োগবিধি (সংশোধিত) অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্তদের পদোন্নতিযোগ্য পদ ফরেস্ট রেঞ্জার পদে কোন পদোন্নতি প্রদান না করেই বন অধিদপ্তরে পুনরায় ২০১৯ সনে নিয়োগবিধি প্রনয়ন করা হয়েছে। ১৯৯৫ সনের নিয়োগবিধিতে ফরেস্টার পদ থেকে ফরেস্ট রেঞ্জার পদের ১০০% পদোন্নতির সুযোগ ছিল, ২০১৯ সনে প্রনীত বন অধিদপ্তরেরর নিয়োগ বিধিতে ফরেস্টার পদ থেকে ফরেস্ট রেঞ্জার পদে ৭০% পদোন্নতির সুযোগ রাখা হয়েছে। অথচ ১৯৯৫ সনের নিয়োগপ্রাপ্তদের পদোন্নতির সুযোগ বঞ্চিত করে পদোন্নতি না দিয়েই ২০১৯ সনে নিয়োগবিধি সংশোধন করে ফরেস্ট রেঞ্জার পদে পদোন্নতির সুযোগ অবগত করা হয়েছে। আইনগত ভাবে পদোন্নতি প্রত্যাশীদের পদোন্নতি না দিয়ে নিয়োগবিধি পরিবর্তন করে পদোন্নতি বঞ্চিত করার কোন সুযোগ নাই।
বন অধিদপ্তরে বর্তমানে কর্মরত ফরেস্টারগন ১৯৯৫ সালের নিয়োগ বিধি অনুযায়ী নিয়োগ প্রাপ্ত। ২০১৭ সালে ফরেস্টারদের রেঞ্জার পদে পদোন্নতি না দিয়ে সরাসরি ফরেস্ট রেঞ্জার নিয়োগের প্রক্রিয়াকালে নিয়োগের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট মামলা দায়ের করে। ঐ রিট মামলায় রুল জারি থাকলেও বন অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তা তা আমলে না নিয়ে সরাসরি ফরেস্ট রেঞ্জার পদে নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছেন ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য অভিযোগ উঠেছে।
মাঠ পর্যায়ের একজন ফরেস্টার জানান ফরেস্টারদের সিনিয়রিটির বিষয়ে চলমান সকল মামলার বাদীগন বন বিভাগে কর্মরত সকল ফরেস্টারগন এক হয়ে প্রধান বন সংরক্ষক মহোদয়কে অনুরোধ করা হয়েছে যে, মামলায় যাই থাকুক না কেন আমরা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে মেনে নেব। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রধান বন সংরক্ষক মহোদয়কে সলিসিটর এর কার্যালয়ের মতামত নিয়ে বিধি অনুযায়ী যাকে সিনিয়র করা যায় তাকে সিনিয়র করে পদোন্নতি দেয়ার ব্যাপারে অনেক বার অনুরোধ করেছি। কোন পদক্ষেপ এখনো নেননি।
বন বিভাগের নিয়মিত পদোন্নতি হচ্ছেনা প্রায় দুই যুগ ধরে কোন প্রধান বন সংরক্ষকই এই ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহন করেনি বলে জানা যায়।
অনুসন্ধানে আরো যানা যায় ডিপ্লোমা ইন ফরেস্ট্রি সরাসরি এবং ইন সার্ভিস সম্পন্ন করা ফরেস্টাররা ডিপ্পোমা স্কেল থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত হচ্ছেন। একই শিক্ষাক্রম একই মানের লেখাপড়া করে একই যোগ্যতায় বিভিন্ন বিভাগের চেয়ে অনেক পিছিয়ে ডিপ্লোমা ফরেস্টারগনরা। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফরেস্টার জানান যে ডিপার্টমেন্টের কর্তারাই আমাদের পিছনে টেনে ধরে রেখেছে। সততা আর মেধার মুল্যায়ন নাই। স্কেলের জটিলতা নিরসনে অধিদপ্তরের সৎ ইচ্ছে নেই।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায় তৎকালীন প্রধান বন সংরক্ষক মরহুম মোতালেব মিয়া এবং ইশতিয়াক উদ্দিনের পর আর কোনও প্রধান বন সংরক্ষক মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের পদোন্নতি এবং ডিপ্লোমা স্কেল নিয়ে লেখালেখি করেননি। ইউনুছ আলী প্রথমে লেখালেখি করলেও পরবর্তীতে দ্বিস্তর নিয়োগবিধি ভাঙ্গার প্রস্তার তিনি শুরু করেন। আর সফিউল আলম চৌধুরী মাঠ পর্যায়ে ফরেস্টার এবং বন প্রহরীদের দেখভাল এবং লেখালেখি করেননি।
এই ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফরেস্টার জানান শিগগিরই সমস্ত ফরেস্টাররা প্রধানমন্ত্রী , মন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি পেশ করবেন এবং প্রধান বন সংরক্ষককের সাথে দেখা করবেন। সরাসরি ফরেস্ট রেঞ্জার নিয়োগ বন্ধ না হলে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবেন।