সোনারগাঁয়ে রিক্সা চালক হত্যার দুই আসামি গ্রেফতার
- আপডেট সময় : ০৩:০০:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- / ৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক ক্লু-লেস রিক্সা চালক আব্দুল্লাহ আল মনছুর হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারী সহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ এবং আড়াইহাজার থানা এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় ছিনতাই হওয়া অটোরিক্সাটিও উদ্ধার করে র্যাব। বুধবার র্যাব-১১’র কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার এ কে এম মুনিরুল আলমের গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো আড়াইহাজারের বায়েরচর গ্রামের মৃত আব্দুল হালিমের ছেলে মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু (৪০) এবং ভৈরবদী গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে রমজান আলী (২২)।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিকাল আনুমানিক ৩ টায় একই জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে আব্দুল্লাহ আল মনছুর (২১) নামে এক অটোরিক্সা চালক নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের তিন দিন পরও তাকে পাওয়া না গেলে ভিকটিমের মা ছেমনা খাতুন ৯ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন।
নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরীর সূত্র ধরে র্যাব-১১ ছায়া তদন্ত শুরু করলে ছায়া তদন্ত চলাকালীন সময়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর আনুমানিক ১ টায় সোনারগাঁ থানাধীন বেইলর এলাকার নতুন রাস্তার পাশে একটি ডোবায় অর্ধগলিত ও ভাসমান অবস্থায় ভিকটিমের মৃত দেহ পাওয়া যায়। যা দেখে ভিকটিমের আত্মীয়-স্বজন নিখোঁজ আব্দুল্লা আল মনসুর এর মৃত দেহ বলে সনাক্ত করে এবং সোনারগাঁ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অতঃপর মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-১১ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ১০ টায় এই নৃশংস ক্লু-লেস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামীদের সনাক্ত পূর্বক সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিজমিজি এলাকা হতে অত্র হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারী মঞ্জুর হোসেন মঞ্জুকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার কাদিরদিয়া এলাকা হতে ছিনতাইকৃত অটোরিক্সা ব্যবসায়ী আসামী রমজান আলী গ্রেফতার সহ ভিকটিমের ব্যাটারি চালিত রিক্সাটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
র্যাব আরো জানায়, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড এবং ভিকটিমের ব্যাটারী চালিত রিক্সাটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে গ্রেফতারকৃত আসামী মঞ্জুর ও তার সহযোগীরা হত্যাকান্ডটি ঘটায়। হত্যার সাথে জড়িত আসামীরা ও ভিকটিম একই এলাকায় রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। ঘটনার দিন হত্যার সাথে জড়িত আসামীরা ভিকটিমকে হত্যা পূর্বক তার ব্যাটারী চালিত রিক্সটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাকে সোনারগাঁ থানা এলাকায় নিয়ে যায়। অতঃপর রাত গভীর হলে ভিকটিমকে তারা নির্জন এলাকায় নিয়ে সুযোগ বুঝে পারস্পারিক সহযোগীতায় হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে পাশর্^বর্তী ডোবায় ফেলে কচুরিপানা, ময়লা-আবর্জনা এবং পাশে থাকা একটি নৌকা দিয়ে ঢেকে রাখে এবং ব্যাটারী চালিত রিক্সাটি নিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে ৭ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমের ছিনতাইকৃত ব্যাটারী চালিত রিক্সাটি আসামী রমজানের নিকট হস্তান্তর করে।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতার এড়াতে অত্র হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীরা বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে রয়েছে এবং র্যাব কর্তৃক দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদেরকে গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে র্যাব-১১।