১০:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রয়াত বাবার ইচ্ছে পূরণে, হেলিকপ্টারে চড়ে বউ নিয়ে বাড়ি ফিরলেন অপু

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৭:১২:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৬৫

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা:

নেত্রকোনায় প্রয়াত বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টারে চড়ে কুড়িগ্রামে মেয়ের বাড়িতে বিয়ে করতে যান। হরিজন সম্প্রদায়ের অপু বাসফোরন জেলা প্রশাসনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। বিয়ে করে হেলিকপ্টারে চড়ে বউ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত বুধবার দুপুরে বরযাত্রীসহ হেলিকপ্টারটি জেলা স্টেডিয়ামে নামে। এ সময় হেলিকপ্টার ও বর দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করে। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুরে হেলিকপ্টারে করে নববধূকে নিয়ে নেত্রকোনায় নিজ বাড়িতে ফিরে যান বর। কনে শনিতা রানী কুড়িগ্রাম পৌর শহরের পাওয়ারহাউস পাড়ার ভুট্টু হরিজনের মেয়ে। বর হরিজন অপু বাঁশফোর নেত্রকোনা সদরের জয়নগর হাসপাতাল কোয়ার্টার এলাকার প্রয়াত দিলীপ বাঁশফোরের ছেলে। তিনি জেলা প্রশাসনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী।
অপু বাঁশফোড়ের মা শ্যামলী বাঁশফোড় বলেন, ‘অপুর বাবার খুব শখ ছিল, হেলিকপ্টারে করে তাঁর পুত্রবধূকে ঘরে আনবে। আর এই শখ পূরণ করতেই ছেলে তাঁর বউকে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসে। বিয়ের যাবতীয় খরচ তার বড় ভাই দীপু বাঁশফোড় বহন করেছেন। হেলিকপ্টারে কনে নিতে যাওয়ার বিষয়ে অপু বাঁশফোর বলেন, আমার বাবা দু’বছর আগে মারা যান। বেঁচে থাকাকালীন সময়ে তার প্রবল ইচ্ছা ছিল, ধনী ব্যক্তিদের মতো বড়সড় আয়োজন করে ছেলের বিয়ে দেওয়ার। এবং তিনি ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তার পুত্রবধূকে যেন হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাই অপু বাসফোর বাবার আত্মার শান্তি ও স্বপ্ন পূরণের জন্য, ঘণ্টাপ্রতি ৮০ হাজার টাকা খরচ করে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করে নববধূকে বাড়িতে নিয়ে ফিরেছেন। তবে মোট কত টাকা ব্যয় হয়েছে, তা জানা যায়নি।

এমন পরিস্থিতিতে কনে শনিতা রানীর বাবা ভুট্ট বাঁশফোর বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। বর পক্ষ আমাদের মেয়েকে পছন্দ করেছে। মেয়েকে বউ করে কেউ হেলিকপ্টারে নিয়ে যাবে, এটা কখনো চিন্তাও করি নাই। আজ যখন সত্যি সত্যি হেলিকপ্টারে করে মেয়ে গেল, তখন আনন্দে বুকটা ভরে গেছে।’

হেলিকপ্টার দেখতে আসা রহিম শেখ বলেন, ‘আমি কখনো হেলিকপ্টারে বরযাত্রী যেতে দেখিনি। আজ স্টেডিয়ামে এত মানুষের ভিড়ে হেলিকপ্টার দেখলাম। দোয়া করি বর-বউ যেন ভালো থাকে।’

ঘটনাস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজেদ বলেন, আমরা শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে আছি। কোন ঝামেলা ছাড়াই খুব সুন্দরভাবে হেলিকপ্টার অবতরণ করে বিয়ে শেষে বরযাত্রীরা আবার হেলিকপ্টার চড়ে চলে গেছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

প্রয়াত বাবার ইচ্ছে পূরণে, হেলিকপ্টারে চড়ে বউ নিয়ে বাড়ি ফিরলেন অপু

আপডেট সময় : ০৭:১২:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা:

নেত্রকোনায় প্রয়াত বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টারে চড়ে কুড়িগ্রামে মেয়ের বাড়িতে বিয়ে করতে যান। হরিজন সম্প্রদায়ের অপু বাসফোরন জেলা প্রশাসনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। বিয়ে করে হেলিকপ্টারে চড়ে বউ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত বুধবার দুপুরে বরযাত্রীসহ হেলিকপ্টারটি জেলা স্টেডিয়ামে নামে। এ সময় হেলিকপ্টার ও বর দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করে। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুরে হেলিকপ্টারে করে নববধূকে নিয়ে নেত্রকোনায় নিজ বাড়িতে ফিরে যান বর। কনে শনিতা রানী কুড়িগ্রাম পৌর শহরের পাওয়ারহাউস পাড়ার ভুট্টু হরিজনের মেয়ে। বর হরিজন অপু বাঁশফোর নেত্রকোনা সদরের জয়নগর হাসপাতাল কোয়ার্টার এলাকার প্রয়াত দিলীপ বাঁশফোরের ছেলে। তিনি জেলা প্রশাসনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী।
অপু বাঁশফোড়ের মা শ্যামলী বাঁশফোড় বলেন, ‘অপুর বাবার খুব শখ ছিল, হেলিকপ্টারে করে তাঁর পুত্রবধূকে ঘরে আনবে। আর এই শখ পূরণ করতেই ছেলে তাঁর বউকে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসে। বিয়ের যাবতীয় খরচ তার বড় ভাই দীপু বাঁশফোড় বহন করেছেন। হেলিকপ্টারে কনে নিতে যাওয়ার বিষয়ে অপু বাঁশফোর বলেন, আমার বাবা দু’বছর আগে মারা যান। বেঁচে থাকাকালীন সময়ে তার প্রবল ইচ্ছা ছিল, ধনী ব্যক্তিদের মতো বড়সড় আয়োজন করে ছেলের বিয়ে দেওয়ার। এবং তিনি ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তার পুত্রবধূকে যেন হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাই অপু বাসফোর বাবার আত্মার শান্তি ও স্বপ্ন পূরণের জন্য, ঘণ্টাপ্রতি ৮০ হাজার টাকা খরচ করে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করে নববধূকে বাড়িতে নিয়ে ফিরেছেন। তবে মোট কত টাকা ব্যয় হয়েছে, তা জানা যায়নি।

এমন পরিস্থিতিতে কনে শনিতা রানীর বাবা ভুট্ট বাঁশফোর বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। বর পক্ষ আমাদের মেয়েকে পছন্দ করেছে। মেয়েকে বউ করে কেউ হেলিকপ্টারে নিয়ে যাবে, এটা কখনো চিন্তাও করি নাই। আজ যখন সত্যি সত্যি হেলিকপ্টারে করে মেয়ে গেল, তখন আনন্দে বুকটা ভরে গেছে।’

হেলিকপ্টার দেখতে আসা রহিম শেখ বলেন, ‘আমি কখনো হেলিকপ্টারে বরযাত্রী যেতে দেখিনি। আজ স্টেডিয়ামে এত মানুষের ভিড়ে হেলিকপ্টার দেখলাম। দোয়া করি বর-বউ যেন ভালো থাকে।’

ঘটনাস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজেদ বলেন, আমরা শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে আছি। কোন ঝামেলা ছাড়াই খুব সুন্দরভাবে হেলিকপ্টার অবতরণ করে বিয়ে শেষে বরযাত্রীরা আবার হেলিকপ্টার চড়ে চলে গেছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন