সুনামগঞ্জে নদী ভাঙ্গন মেরামত না হলে পাউবো’র বাধঁ কৃষকের কাজে আসবে না
- আপডেট সময় : ০৬:১৮:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩
- / ৭২
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের হাওরের ফসল রক্ষা বাধঁ নিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পাউবো ও উপজেলা প্রশাসন কৃষকদের সাথে কোন ধরনের পূর্ব আলোচনা ছাড়াই ইচ্ছেমত ফসল রক্ষা বাধঁ নির্মানে পিআইসি গঠনের অভিযোগ উঠছে। তেমনি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার কালনী নদীর তীরে বাদালিয়া হাওরের জলডোবা বিলের ভাঙ্গন মেরামত ও সংস্কার নিয়ে হাজার হাজার একর বোরো ফসল রক্ষায় অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ করছেন কৃষকরা। কৃষকরা জানান, যেখানে একটি পিআইসির মাধ্যমে মাত্র আড়াইশ ফুট ভাঙ্গন মেরামত করা যেতো সেখানে ৬টি পিআইসি গঠন করে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যায়ে ১৫শ ফুট বিলের উপর ঘুরিয়ে স্থানীয় কৃষকদের জমি নষ্ট করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যার ফলে হাওরের ফসল ও আশপাশের বাড়ীঘর চরম ঝুকির মধ্যে রয়েছে। প্রকল্প এলাকায় পিআইসিদের নামসহ বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করে সাইন বোর্ড টানানোর কথা থাকলেও পিআইসিতে কাদের সদস্য করা হয়েছে তাও জানেন না স্থানীয় কৃষকরা। ভাঙ্গনকৃত বাধঁ নির্মান করার দাবীতে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করলেও আমলে নিচ্ছে না প্রশাসন। দাবী আদায়ে দিরাই উপজেলার ভাটিধল গ্রামের জলডোবা বিলের ভাঙ্গন এলাকায় পূর্বের বাঁধের উপর বাঁধ পূণ: নির্মানের দাবীতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ভাটিধল গ্রামের কৃষক সাদিকুল ইসলাম, সার্চ মানবাধিকার সোসাইটির দিরাই উপজেলা সভাপতি আবুল হোসাইন শরীফ, সাবেক মেম্বার আলী হোসেন, রেহান উদ্দিন মেম্বার, কৃষক এখলাছুর রহমান, মিজানুর রহমান, বীরমুক্তিযুদ্ধা অনুকুল পুরকায়স্থ, এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রবীন কৃষক ওমর আলী, রেহান উদ্দিন সাবেক মেম্বার, আলী হোসেন, লালমন মিয়া, কৃষক বজলু মিয়া, মোহাম্মদ আলী, ফটিক বাবু, হাবিবুর রহমান, আনোয়ারুল হক, আব্দুল ছত্তার, প্রণতি দাস, দিপক তালুকদারসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা। বক্তারা বলেন, স্থানীয় কৃষকদের সাথে পাউবো’র কর্মকর্তারা কোন ধরনের আলোচনা ছাড়াই পিআইসি গঠন করেছে। পিআইসিতে কাদেরকে রাখা হয়েছে তারও কোন সাইন বোর্ড ঝুলানো হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মুনায়েম এর মাধ্যমে সরকারী অর্থ লুপাটের ফন্দি তৈরী করা হয়েছে। কৃষকদের স্বার্থ বিবেচনা না করে প্রভাবশালী মহলের ইশারায় হাজার হাজার হেক্টর বোরো ফসল ও কয়েকটি গ্রামকে হুমকির মুখে ফেলে কালনী নদীর তীর, সাবেক কবরস্থান ও ডোবা বিলের ভাঙ্গন মেরামত না করে কৃষকের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির উপর দিয়ে নতুন করে বাধঁ দেয়ার পায়তারা করছে। আমরা এই বাধ নির্মান মানি না। আড়াইশ ফুট ভাঙ্গন মেরামত করতে যেখানে সরকারের ২০-২৫ লাখ টাকা খরচ করে টেকসই মজবুত বাধ নির্মিত হতো সেখানে পাচঁগুণ বরাদ্দ দিয়ে ৫-৬টি পিআইসির মাধ্যমে সরকারী অর্থ লুটপাট করছে। সরকার অর্থ বরাদ্দ দেয় কৃষকের ফসল ও সম্পদ রক্ষার্থে কিন্তু পাউবোর কর্মকর্তারা তাদের ইচ্ছামত পিআইসি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা। প্রায় হাজার হেক্টর বোরো ফসল রক্ষার্থে জলডোবা বিলের ভাঙ্গন মেরামত করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন জানিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা বিলের উপর দিয়ে নতুন বাধ নির্মান অব্যাহত রেখেছে। কালনি নদীর তীরের ভাঙ্গন মেরামত করা না হলে কোন বাধঁ কৃষকের কাজে আসবে না। জলডোবার ভাঙ্গণকৃত গর্তটি ভরাট করে পাউবো’র পূর্বের বাধের উপর বাধ নির্মান করা হউক।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ সামসুদ্দোহা জানান, পুর্বের বাধের উপর দিয়ে বাধ নির্মান করা হলে ঝুকি থেকে যায়। কতটি পিআইসি’র মাধ্যমে কত টাকা বরাদ্দ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অফিসের বাইরে আছি। কত টাকা বরাদ্দ মুখস্থ বলতে পারব না। এলাকাবাসীর অভিযোগ বিষয়ে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।