রংপুরে চিকলী নদীর মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০৮:০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৩
- / ৫৯
রংপুর সংবাদদাতা:
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় চিকলী নদীর পাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় চিকলী নদীর পাড়ের মাটি অবৈধভাবে কেটে নিচ্ছেন দুই ব্যক্তি। এতে হুমকির মুখে পড়েছে চম্পাতলী সেতু, একটি বিদ্যালয় ও আশপাশের আবাদি জমি। এসব মাটি স্থানীয় ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে স্থানীয় দের অভিযোগ। চম্পাতলী এলাকার দুলাল মণ্ডল ও পাঠানেরহাট এলাকার ছাদেক খান দীর্ঘদিন ধরে নদীপাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চম্পাতলী সেতু থেকে ৫০-৬০ গজ দূরে নদীপাড়ের মাটি কেটে তিনটি ট্রাক্টরে ভর্তি করা হচ্ছে।
এ সময় ট্রাক্টর চালক সুকুমার রায় বলেন, নদীর পাড়ের পাশে ছাদেক খানের জমি রয়েছে। তাঁর কাছ থেকে প্রতি গাড়ি মাটি ২০০ টাকা দরে স্থানীয় একটি ইটভাটার মালিক কিনে নিয়েছেন। এখন ছাদেক খান যেভাবে মাটি কাটতে বলছেন, তাঁরা সেভাবেই মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ছাদেক খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নদীর পাড় যেটা, সেটাও আমার জমির ভেতরে। এ কারণে পাড় কিছুটা কেটে জমি সমান করছি।
দুলাল মণ্ডল বলেন, নদী খননের সময় তাঁর জমিতে মাটি ফেলা হয়েছিল। এখন তা কেটে নিয়ে জমি সমান করছেন। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে (২০১০) বলা হয়েছে, বিক্রির উদ্দেশ্যে বালু বা মাটি উত্তোলনের ফলে কোনো নদীর তীর ভাঙনের শিকার হলে সে ক্ষেত্রে বালু বা মাটি তোলা যাবে না। অন্যদিকে, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।
স্থানীয় লোকজন বলেন, ওই স্থানে নদীর পাড় কেটে মাটি তোলা হলে সামান্য বন্যায় চম্পাতলী সেতু ও পাশে অবস্থিত চম্পাতলী উচ্চবিদ্যালয় হুমকির মুখে পড়তে পারে। এ ছাড়া আশপাশের আবাদি জমিতে নদীর পানি অনায়াসে ঢুকে ফসল নষ্ট হবে।
চম্পাতলী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আতাউর রহমান বলেন, মাটিভর্তি করে ট্রাক্টরগুলো দিন–রাত বিদ্যালয়ের সামনের কাঁচা রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
চম্পাতলী গ্রামের কৃষক বিশ্বনাথ রায় বলেন,নদীর বান্দন (বাঁধা) হওচে নদীর পাড়। সেই পাড় কাটিয়া ইটভাটাত বেচাওচে তা–ও কাঁয়ও কিছু কওছে না। আগামীবার বান (বন্যা) হইলে নদীর পানি যায়া জমিত ঢুকপে। তখন আবাদ নষ্ট হয়া যাইবে। হামার কপালোত দুঃখ আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ এর সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে, নদীর পাড় যাঁরা কাটছেন, খোঁজ নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।