কিংবদন্তি হুমায়ুন ফরিদীর মৃত্যুবার্ষিকী
![](https://protidinernews.com/wp-content/uploads/2024/04/cropped-logo-1-2.jpg)
- আপডেট সময় : ১০:১৪:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৩০
![](https://protidinernews.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
প্রতিদিনের নিউজ :
আজ বাংলাদেশের প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীর ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের আজকের দিনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই অভিনেতা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। তার এই অকাল মৃত্যুতে অভিনয় জগতে যেই শূন্যতা তৈরি হয় তা কখনো পূরণ হয়নি, না কখনো হবে । ‘হোক সে ব্যক্তিজীবন কিংবা কামেরার সামনের রঙিন জীবন’- উভয় জীবনেই তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি নিজেই।
১৯৫২ সালের ২৯ মে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুমুলিয়া ইউনিয়নের চুয়ারিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই অসাধারণ প্রতিভাবান অভিনেতা। তার পিতা এটিএম নূরুল ইসলাম এবং মাতা বেগম ফরিদা ইসলাম। তিনি ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করার পর, পিতার চাকরির সূত্রে চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে ঢাকার জৈব-রসায়ন বিভাগে ভর্তি হলেও মুক্তিযুদ্ধের কারণে তার পড়াশোনা বাধাগ্রস্ত হয় এবং সে সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধশেষে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
নাট্যশিল্পে তার আগমন ঘটে ১৯৭৬ সালে, যখন তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্য উৎসবে সংগঠক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। তার নাট্যজীবন শুরু হয় ঢাকা থিয়েটারে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে। ১৯৮০-এর দশকে হুমায়ুন ফরীদি তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। ‘মাতৃত্ব’ চলচ্চিত্রে তার অভিনয় তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে পুরস্কৃত করে। তিন দশকের বর্ণিল ক্যারিয়ারে একাধিক দর্শকনন্দিত মঞ্চ নাটক, মেগাসিরিয়াল এবং সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। বাণিজ্যিক এবং বিকল্প ধারা মিলিয়ে প্রায় ২৫০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। কখনো হিরো, কখনো ভিলেন, আবার কখনো পুরোদস্তুর কমেডিয়ান-গল্পের প্রয়োজনে নিজেকে নতুন রুপে উপস্থাপন করাই ছিল যেন অভিনয়ের এই জাদুকরের মূল মন্ত্র ।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও নাট্যাঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ৪০ বছরপূর্তি উপলক্ষে তাকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে। ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ুন ফরিদী দু’বার বিয়ে করেছিলেন। প্রথম বিয়ে করেছিলেন ১৯৮০-এর দশকে, তার শারারাত ইসলাম দেবযানী নামের এক মেয়ে রয়েছে। পরে তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফাকে, কিন্তু ২০০৮ সালে তাদের সম্পর্ক বিচ্ছেদ ঘটে।
২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি, হুমায়ুন ফরিদী ঢাকার ধানমন্ডিতে তার নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসার পর, এক দুর্ঘটনায় বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান এবং তার সেই আঘাতেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
হুমায়ুন ফরিদী আজ আমাদের মাঝে নেই তবে তার অভিনিত অসংখ্য নাটক ও চলচ্চিত্রের চরিত্র হয়ে বাঙালি দর্শকদের মনে চিরকাল রাজ করে যাবেন তিনি ।