প্রথমবারের মতো দেশে পালিত হবে ‘বিশ্ব মেছোবিড়াল দিবস’
- আপডেট সময় : ১০:১৩:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
- / ২১
প্রতিদিনের নিউজ:
প্রথমবারের মতো দেশে পালিত হবে ‘বিশ্ব মেছোবিড়াল দিবস’। বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি দিবসটি পালন করা হবে। ‘বন অধিদপ্তর’ পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির স্থলচলন্ত এই প্রাণীকে সংরক্ষণ ও অস্তিত্ব রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি করতে এ উদ্যোগ নিয়েছে। দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে-‘জনগণ যদি হয় সচেতন, মেছোবিড়াল হবে সংরক্ষণ’।
সম্প্রতি বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ ঢাকা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে দিবসটি ঘিরে পোস্টার ডিজাইন প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এতে জানানো হয়, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ‘বিশ্ব মেছোবিড়াল দিবস ২০২৫’ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে বন অধিদপ্তর শিক্ষার্থীদের জন্য পোস্টার ডিজাইন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। প্রতিযোগিতাটি ২টি গ্রুপে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ‘ক’ গ্রুপে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবে। এই গ্রুপের পোস্টার ডিজাইনের বিষয় হচ্ছে- ‘প্রকৃতিতে মেছো বিড়ালের গুরুত্ব’।
আর ‘খ’ গ্রুপে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবেন। এই গ্রুপের পোস্টার ডিজাইনের বিষয় হচ্ছে – ‘মেছোবিড়াল সংরক্ষণে আমাদের করণীয়’।
তবে পোস্টার ডিজাইন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-
১. পোস্টারের সাইজ ২৪ী৩৬ ইঞ্চি কিংবা ২ হাজার ৭৪০ ইঞ্চি (পোর্ট্রেট) হতে হবে।
২. পোস্টারটি জেপিইজি বা পিএনজি এবং এআই ফরমেটে সাবমিট করতে হবে।
৩. পোস্টারে উল্লেখ করা তথ্যগুলো সঠিক হতে হবে এবং ডিজাইনস্বত্ব নিজস্ব হতে হবে।
৪. প্রতিযোগীর নাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা, শ্রেণি, পিতা, মাতা বা অভিভাবকের নাম ও যোগাযোগের ঠিকানা, মোবাইল নম্বর পোস্টারের সঙ্গে ই-মেইলের মাধ্যমে জমা দিতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি যুক্ত করতে হবে।
৫. পোস্টার observation. wildlife@gmail.com ই-মেইলে পাঠাতে হবে ২৪ জানুয়ারি রাত ১০টার মধ্যে। এছাড়া পোস্টার ডিজাইন প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত জিজ্ঞাসার জন্য ০১৬৮০৫৪৭৯৯৪ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, এই প্রতিযোগিতায় ২টি গ্রুপে তিনজন করে মোট ৬ শিক্ষার্থীকে পুরস্কার দেওয়া হবে। আর প্রতিযোগিতার পোস্টারগুলো বন অধিদপ্তরের বিভিন্ন কার্যক্রমে ব্যবহার করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, এরা একেবারেই হিংস্র নয় বরং মানুষের সামনে পড়লে পালিয়ে যায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে জনসংখ্যা বাড়ার কারণে দেশের গ্রামীণ বনাঞ্চলগুলো ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। পরিবেশ দূষণ ও অনিয়ন্ত্রিত ভরাটের কারণে কমে প্রাকৃতিক জলাশয়গুলোর মাছের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। যার ফলে মেছোবিড়াল সহজেই মানুষের সামনে এসে পড়ছে। ফলে সংঘাত বাড়ছে। সাধারণ জনগণ একে চিতাবাঘের বাচ্চা, বাঘ ইত্যাদি মনে করে অহেতুক ভীতিজনিত কারণে মেরে ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, তাছাড়া খাবারের অভাবে মেছো বিড়ালগুলো মাঝেমধ্যেই হাঁস-মুরগির খামারে চলে আসছে ও মারা পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে জনসচেতনতা সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। জনগণ যদি সচেতন না হয়, তাহলে অচিরেই মেছো বিড়ালের মতো এমন সুন্দর একটি প্রাণী বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাবে। এসব বিষয়ে সচেতন করার জন্যই এবার আমরা প্রান্তিক পর্যায়ে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করব।
‘বিশ্ব মেছোবিড়াল দিবস-২০২৫’ উদ্যাপন কমিটির সদস্য শুভব্রত সরকার বলেন, মেছোবিড়াল বাংলাদেশে প্রায় সব জায়গাতেই পাওয়া যায়। এটি ছোট বিড়াল প্রজাতির প্রাণী। এরা নিশাচর, প্রধান খাবার মাছ। মূলত, গ্রামীণ বনাঞ্চলের ঘন ঝোপঝাড়ে বাস করে। আর হাওড়, বিল, পুকুর ও অন্যান্য অগভীর জলাশয় থেকে মাছ শিকার করে খায়।