০৮:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার হতে পলাতক সিদ্ধিরগঞ্জে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী ফিরোজ গ্রেফতার

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৩:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
  • / ২৩

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :

গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার হতে পলাতক মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী ফিরোজ (৩৫) কে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১’র সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে র‌্যাব-১১’র একটি আভিযানিক দল সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

একই দিন বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগরে অবহিমকত র‌্যাব-১১’র সদর দপ্তর থেকে মিডিয়া অফিসার এএসপি সনদ বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গনমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ফিরোজ সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি দক্ষিণ বাতেনপাড়া এলাকার নবী হোসেনের ছেলে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, গত ৬ আগস্ট বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে থাকা বন্দিরা বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের সময় বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। চলমান দাঙ্গা-হাঙ্গামার এক পর্যায়ে বন্দিরা কারাগারের দক্ষিণ অংশের পেরিমিটার ওয়াল ভেঙ্গে
গর্ত করতে থাকলে তা প্রতিহত করা হয়। প্রতিহতকালীন সময়ে অন্য দিকে কারা অভ্যন্তরের বৈদ্যুতিক খুঁটি দেয়ালের উপরে ফেলে মই বানিয়ে পশ্চিম দিকের দেওয়াল টপকে বেলা ১টা থেকে ২টার মধ্যে ২০৩ জন বন্দি পালিয়ে যায়। এসময় বুলেট ইনজুরিতে ৬ জন বন্দি মারা যায়। এ ঘটনায় গাজীপুরে কোনাবাড়ী থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়। মামলা নং-০৪, তাং-১৫/০৮/২৪ইং, জিআর নং-১৪০, তাং-১৫/০৮/২৪ইং, ধারা-১৪৩/১৪৮/১৪৯/৩৫৩/২২৪/৪২৭/৩৩২/৩৩৩/ ৪৩৬/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব আরো জানায়, গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার হতে পলাতক আসামীগণ দেশে বিশৃঙ্খলা এবং সামাজিক অপরাধের সাথে জড়িয়ে যেতে পারে বিধায় তাদের গ্রেফতার করার জন্য র‌্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। তারই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১১, সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল আজ সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফিরোজকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

উল্লেখ্য, গত ২০০৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় সালেহা বেগম নামে এক নারীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় নিহতের স্বামী মো. বাদশা মিয়া বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৪৩, তাং-২৪/০৯/০৬ইং।

ঘটনাটি স্থানীয় জনমনে ব্যাপক ভীতির সৃষ্টি করে। গ্রেফতারকৃত আসামী ফিরোজ ও তার সঙ্গীদের নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার বাতেনপাড়ায় ভিকটিম সালেহা বেগমের গৃহে প্রবেশ করে ভিকটিম ও তার দুই জন শিশু সন্তান শাওন ও স্বপ্নাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মাথায়, গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন ভিকটিম ও সন্তানদের মূমুর্ষ অবস্থায় চিটাগাং রোড শুভেচ্ছা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম সালেহা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন এবং তার সন্তানদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

আসামী ফিরোজ উক্ত হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন। ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, ১ম আদালতের বিচারক মামুন উর রশিদ উক্ত মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী ফিরোজকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও অপর আসামী মনির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ এবং ১০,০০০/-(দশ হাজার) টাকা জরিমানা আদেশ প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় গ্রেফতারকৃত আসামী ফিরোজ বিজ্ঞ আদালাতে অনুপস্থিত ছিল। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারী ভোরে র‌্যাব-১১’র একটি আভিযানিক দল আসামী ফিরোজকে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেন।

গ্রেফতারকৃত আসামী ফিরোজকে ২ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার এবং পরবর্তীতে তাকে ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারী গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার হতে পলাতক সিদ্ধিরগঞ্জে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী ফিরোজ গ্রেফতার

আপডেট সময় : ০৯:৪৩:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :

গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার হতে পলাতক মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী ফিরোজ (৩৫) কে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১’র সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে র‌্যাব-১১’র একটি আভিযানিক দল সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

একই দিন বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগরে অবহিমকত র‌্যাব-১১’র সদর দপ্তর থেকে মিডিয়া অফিসার এএসপি সনদ বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গনমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ফিরোজ সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি দক্ষিণ বাতেনপাড়া এলাকার নবী হোসেনের ছেলে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, গত ৬ আগস্ট বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে থাকা বন্দিরা বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের সময় বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। চলমান দাঙ্গা-হাঙ্গামার এক পর্যায়ে বন্দিরা কারাগারের দক্ষিণ অংশের পেরিমিটার ওয়াল ভেঙ্গে
গর্ত করতে থাকলে তা প্রতিহত করা হয়। প্রতিহতকালীন সময়ে অন্য দিকে কারা অভ্যন্তরের বৈদ্যুতিক খুঁটি দেয়ালের উপরে ফেলে মই বানিয়ে পশ্চিম দিকের দেওয়াল টপকে বেলা ১টা থেকে ২টার মধ্যে ২০৩ জন বন্দি পালিয়ে যায়। এসময় বুলেট ইনজুরিতে ৬ জন বন্দি মারা যায়। এ ঘটনায় গাজীপুরে কোনাবাড়ী থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়। মামলা নং-০৪, তাং-১৫/০৮/২৪ইং, জিআর নং-১৪০, তাং-১৫/০৮/২৪ইং, ধারা-১৪৩/১৪৮/১৪৯/৩৫৩/২২৪/৪২৭/৩৩২/৩৩৩/ ৪৩৬/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব আরো জানায়, গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার হতে পলাতক আসামীগণ দেশে বিশৃঙ্খলা এবং সামাজিক অপরাধের সাথে জড়িয়ে যেতে পারে বিধায় তাদের গ্রেফতার করার জন্য র‌্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। তারই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১১, সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল আজ সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফিরোজকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

উল্লেখ্য, গত ২০০৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় সালেহা বেগম নামে এক নারীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় নিহতের স্বামী মো. বাদশা মিয়া বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৪৩, তাং-২৪/০৯/০৬ইং।

ঘটনাটি স্থানীয় জনমনে ব্যাপক ভীতির সৃষ্টি করে। গ্রেফতারকৃত আসামী ফিরোজ ও তার সঙ্গীদের নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার বাতেনপাড়ায় ভিকটিম সালেহা বেগমের গৃহে প্রবেশ করে ভিকটিম ও তার দুই জন শিশু সন্তান শাওন ও স্বপ্নাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মাথায়, গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন ভিকটিম ও সন্তানদের মূমুর্ষ অবস্থায় চিটাগাং রোড শুভেচ্ছা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম সালেহা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন এবং তার সন্তানদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

আসামী ফিরোজ উক্ত হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন। ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, ১ম আদালতের বিচারক মামুন উর রশিদ উক্ত মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী ফিরোজকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও অপর আসামী মনির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ এবং ১০,০০০/-(দশ হাজার) টাকা জরিমানা আদেশ প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় গ্রেফতারকৃত আসামী ফিরোজ বিজ্ঞ আদালাতে অনুপস্থিত ছিল। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারী ভোরে র‌্যাব-১১’র একটি আভিযানিক দল আসামী ফিরোজকে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেন।

গ্রেফতারকৃত আসামী ফিরোজকে ২ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার এবং পরবর্তীতে তাকে ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারী গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন