১১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

মতলবে শরতের শুভ্রতা ছড়াচ্ছে কাশফুল

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৪:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৪৯

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মমিনুল ইসলাম :

শরৎকাল মানেই সাদা রঙের খেলা। নীল আকাশে সাদা মেঘ আর নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে দোল খাওয়া কাশবন মনে জাগায় অন্য রকম অনুভূতি। শারদীয় এ ঋতুতে ভ্রমণবিলাসীদের প্রথম পছন্দ কাশবন। কাশ ফুলের ছোঁয়া পেতে দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসে প্রকৃতি প্রেমী মানুষজন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা ধনাগোদা নদীর বেরিবাদ এলাকার চরমাছুয়া, বোরচর, বদরপুর, চরউমেধ, উদামদী, ষাটনল ও ছেংগারচর পৌরএলাকার কলাকান্দা, সৈয়ালকান্দি, এলাকাসহ বিভিন্ন চরে দোল খাচ্ছে কাশ বন। এই কাশবনগুলো শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলেনি, কাশগাছ বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকেই।

কোনো প্রকার খরচ ছাড়াই জমির কাশবন বিক্রি করে হাজার টাকা আয় করা যায়। অনাবাদী বালু চরে বন্যার পরে কাশ গাছ জন্মে। ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে গাছগুলো বড় হয়ে বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। কাশবন বিক্রি করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন এখানকার মানুষজন।

কাশবন দেখতে আসা মো. লিয়াকত হোসাইন (৩৬)ও রাফিয়া খানম (৩০) দম্পতি বলেন, কুয়াকাটা বা কক্সবাজার যাওয়ার জন্য ব্যয় হয় তা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য বহন করা খুবই কষ্টসাধ্য, তাই আমরা কোথাও ঘুরতে গেলে অবশ্যই ধনাগোদার বেরিবাদের পাড়ে চলে আসি। বিশেষ করে শরৎকালে এই মেঘনা ধনাগোদা বেরিবাধ প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা কাশবন আর কাশফুলগুলো নয়ানাভিরাম। শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়সের মানু্ষরো কাশফুল পছন্দ করে। স্বল্প খরচে এমন দৃশ্য উপভোগ করতে না পারা যেন প্রকৃতিকে অস্বীকার করা। যারা কখনো মেঘনা ধনাগোদা বেরিবাধে আসেননি তাদের এই দৃশ্য দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের উদামদী চরের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, উদামদী এলাকায় ধনাগোদা নদীর পাড়ে কাশ বন আছে। পাঁচ থেকে ছয় মাস পর কাশ গাছের ফুল পড়ে গেলে গাছগুলো কেটে আঁটি বাঁধি। প্রতি হাজার আঁটি ৪ থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়।

এখলাসপুর ইউনিয়নের বোরচর এলাকার সানাউল্লাহ মাষ্টার বলেন, আমাদের চরাঞ্চলে অনেক জমি অনাবাদি আছে সেখানে শরৎকালের কাশফুল জন্ম নেয়, সেই কাশফুলের গাছ বিক্রি করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।

জীবগাঁও জেনারেল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলী হোসেন বলেন, ঋতুপরিক্রমায় এখন শরৎকাল। আর সেই শরৎকালের বৈশিষ্ট্য কাশফুল। কাশফুলের আদিনিবাস সুদূর রোমানিয়ায়। এটি বাংলাদেশেরও একটি পরিচিতি উদ্ভিদ। আমাদের মতলব উত্তরে এটি অতিপরিচিত। যেহেতু মতলব উত্তর চতুর্দিকে নদীবেষ্টিত এলাকা এবং বহু চরাঞ্চলে রয়েছে। এসব চরে এখন কাশফুলের সমারোহ। কাশফুলের ইংরেজি নাম ক্যাটকিন। কাশফুলে রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার। কাশ সাধারণত গোখাদ্যর খর হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, কাশ দিয়ে গ্রামাঞ্চলে ঘরের ছাউনি, বেড়া নির্মাণ করা হয়ে থাকে। আমরা জানি কাশে অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। পিত্তথলিতে পাথর হলে কাশের মূল পিশিয়ে খাওয়ানো হয়। ব্যথা বা ফোঁড়া হলে কাশের মূলের রস উপশম করে। তা ছাড়া পরিবেশ দূষণ, বিশেষ করে যেখানে শিল্প-কারখানার ছাই থাকে, সেখানে কাশ জন্ম নিলে পরিবেশ পরিশোধিত হয়।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একি মিত্র চাকমা বলেন, যে এলাকায় কাশবন আছে সে সব এলাকায় পর্যটকদের জন্য সুব্যবস্থা করা হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

মতলবে শরতের শুভ্রতা ছড়াচ্ছে কাশফুল

আপডেট সময় : ০৭:৫৪:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মমিনুল ইসলাম :

শরৎকাল মানেই সাদা রঙের খেলা। নীল আকাশে সাদা মেঘ আর নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে দোল খাওয়া কাশবন মনে জাগায় অন্য রকম অনুভূতি। শারদীয় এ ঋতুতে ভ্রমণবিলাসীদের প্রথম পছন্দ কাশবন। কাশ ফুলের ছোঁয়া পেতে দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসে প্রকৃতি প্রেমী মানুষজন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা ধনাগোদা নদীর বেরিবাদ এলাকার চরমাছুয়া, বোরচর, বদরপুর, চরউমেধ, উদামদী, ষাটনল ও ছেংগারচর পৌরএলাকার কলাকান্দা, সৈয়ালকান্দি, এলাকাসহ বিভিন্ন চরে দোল খাচ্ছে কাশ বন। এই কাশবনগুলো শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলেনি, কাশগাছ বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকেই।

কোনো প্রকার খরচ ছাড়াই জমির কাশবন বিক্রি করে হাজার টাকা আয় করা যায়। অনাবাদী বালু চরে বন্যার পরে কাশ গাছ জন্মে। ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে গাছগুলো বড় হয়ে বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। কাশবন বিক্রি করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন এখানকার মানুষজন।

কাশবন দেখতে আসা মো. লিয়াকত হোসাইন (৩৬)ও রাফিয়া খানম (৩০) দম্পতি বলেন, কুয়াকাটা বা কক্সবাজার যাওয়ার জন্য ব্যয় হয় তা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য বহন করা খুবই কষ্টসাধ্য, তাই আমরা কোথাও ঘুরতে গেলে অবশ্যই ধনাগোদার বেরিবাদের পাড়ে চলে আসি। বিশেষ করে শরৎকালে এই মেঘনা ধনাগোদা বেরিবাধ প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা কাশবন আর কাশফুলগুলো নয়ানাভিরাম। শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়সের মানু্ষরো কাশফুল পছন্দ করে। স্বল্প খরচে এমন দৃশ্য উপভোগ করতে না পারা যেন প্রকৃতিকে অস্বীকার করা। যারা কখনো মেঘনা ধনাগোদা বেরিবাধে আসেননি তাদের এই দৃশ্য দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের উদামদী চরের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, উদামদী এলাকায় ধনাগোদা নদীর পাড়ে কাশ বন আছে। পাঁচ থেকে ছয় মাস পর কাশ গাছের ফুল পড়ে গেলে গাছগুলো কেটে আঁটি বাঁধি। প্রতি হাজার আঁটি ৪ থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়।

এখলাসপুর ইউনিয়নের বোরচর এলাকার সানাউল্লাহ মাষ্টার বলেন, আমাদের চরাঞ্চলে অনেক জমি অনাবাদি আছে সেখানে শরৎকালের কাশফুল জন্ম নেয়, সেই কাশফুলের গাছ বিক্রি করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।

জীবগাঁও জেনারেল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলী হোসেন বলেন, ঋতুপরিক্রমায় এখন শরৎকাল। আর সেই শরৎকালের বৈশিষ্ট্য কাশফুল। কাশফুলের আদিনিবাস সুদূর রোমানিয়ায়। এটি বাংলাদেশেরও একটি পরিচিতি উদ্ভিদ। আমাদের মতলব উত্তরে এটি অতিপরিচিত। যেহেতু মতলব উত্তর চতুর্দিকে নদীবেষ্টিত এলাকা এবং বহু চরাঞ্চলে রয়েছে। এসব চরে এখন কাশফুলের সমারোহ। কাশফুলের ইংরেজি নাম ক্যাটকিন। কাশফুলে রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার। কাশ সাধারণত গোখাদ্যর খর হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, কাশ দিয়ে গ্রামাঞ্চলে ঘরের ছাউনি, বেড়া নির্মাণ করা হয়ে থাকে। আমরা জানি কাশে অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। পিত্তথলিতে পাথর হলে কাশের মূল পিশিয়ে খাওয়ানো হয়। ব্যথা বা ফোঁড়া হলে কাশের মূলের রস উপশম করে। তা ছাড়া পরিবেশ দূষণ, বিশেষ করে যেখানে শিল্প-কারখানার ছাই থাকে, সেখানে কাশ জন্ম নিলে পরিবেশ পরিশোধিত হয়।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একি মিত্র চাকমা বলেন, যে এলাকায় কাশবন আছে সে সব এলাকায় পর্যটকদের জন্য সুব্যবস্থা করা হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন