পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মনগড়া বিলে,অতিষ্ঠ গ্রাহকরা
- আপডেট সময় : ০৬:১৬:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ৮৭
রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা :
নেত্রকোনার বারহাট্টায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মনগড়া বিলের হিসাব মিলাতে পারছেন না অধিকাংশ গ্রাহক। তাদের অভিযোগ, প্রতিটি বিলে অতিরিক্ত টাকা যোগ করে দেওয়া হচ্ছে এবং বিলের কপিতে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিপরীতে ভ্যাট, বিলম্ব মাশুল যোগ করেও চূড়ান্ত বিলের সঙ্গে গরমিল পাওয়া যাচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এমন ভূতুড়ে বিল নিয়ে বিপাকে গ্রাহকরা।
সরেজমিনে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সাথে কথা বললে তারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত কয়েক মাস ধরে প্রত্যেকটি বিলেই ব্যবহারের তুলনায় অতিরিক্ত ইউনিট যোগ করা হচ্ছে। আমরা বিলের কপি নিয়ে অফিসে যাবার পরও কোনো ধরনের সমাধান দিতে পারছেন না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন। পরবর্তী মাসে সমন্বয় করে দেয়ার আশ্বাস দিলেও তা শুধু কথাতেই সীমাবদ্ধ। পরের মাসেও একই রকম ভোগান্তির শিকার হচ্ছি আমরা।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা আরও বলেন, গত কয়েক মাসের তুলনায় এ মাসে বিদ্যুৎ বিল এসেছে দুই থেকে তিন গুণ বেশি। দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তার ওপর বিদ্যুৎ অফিসের ভূতুড়ে বিলের অত্যাচারে নাভিশ্বাস আমাদের অবস্থা।
অপরদিকে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রচণ্ড গরমে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ায় বিদ্যুৎ বিল বেশি আসছে। কোনো ভূতুড়ে বিল হচ্ছে না। মিটার রিডাররা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মিটার দেখেই বিল করছেন। গরমে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহার করছে, তাই বিল একটু বেশি হচ্ছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আজাদ মিয়া জানান, তার বাড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবহার বাবদ প্রতিমাসে সাধারণত ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা বিল হয়। কিন্তু গত জুলাই মাসে ১৩৮০ টাকা এবং আগস্ট মাসের বিদ্যুৎ বিল এসেছে ২৭৩৭ টাকা।
একই অভিযোগ রয়েছে বাউসী ইউনিয়নের মোয়াটি গ্রামের হবিকুল হাসানের। তিনি বলেন, আমার ঘরে দুটি লাইট জ্বলে এবং একটি ফ্যান চলে আগে প্রতি মাসে ২০০-২৫০ টাকা বিল আসতো। কিন্তু গত দুই মাস ধরে ৮০০-১০০০ টাকা বিল আসছে। একই অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার সাত ইউনিয়নের অধিকাংশ পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের।
উপজেলা সদরের খায়রুল ইসলাম নামের এক মনোহারি ব্যবসায়ী জানান, আমার ব্যবহৃত মিটারে ৯ হাজার টাকা অতিরিক্ত যোগ করে বিল ইস্যু করে পাঠিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বিল ইস্যু হলেই পরিশোধ করতে বাধ্য গ্রাহক- এমন অদ্ভুত নিয়ম এই দপ্তরের। ভুল নিজেদের হলেও সেটার দায় গ্রাহকের ওপর চাপানো হয়।
এসব নিয়ে জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বারহাট্টা জোনাল অফিসের ডিজিএম মোঃ মাহফুজুর রহমান খাঁন বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কয়েকজন গ্রাহক এসেছিলেন। আমি তাদেরকে বুঝিয়ে বলেছি মিটারে হয়তো কোনো বড় সমস্যা রয়েছে। তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। চলতি মাসে অর্ধেক বিল পরিশোধ করতে বলেছি এবং পরবর্তী মাসে সমন্বয় করে বিল করা হবে।