০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাজীপুরে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১২:১২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৮৪

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রবিউল আলম,গাজীপুর :

গাজীপুরে দুর্নীতিগ্রস্ত নিয়মবহির্ভূত নিয়োগ প্রাপ্তসহ নানা অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারন চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করেছেন শিক্ষার্থীদের অবিভাবকেরা। গাজীপুর মহানগরীর ৪১নং ওয়ার্ডে অবস্থিত পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুবি আক্তারের বিরুদ্ধে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

গত কাল মঙ্গলবার দুপুরে অভিযোগ পত্রটি জমা দিয়েছেন একই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ফেরদৌস বেপারি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পূবাইল উচ্চ প্রধান শিক্ষক রুবি আক্তার যিনি গার্হস্থ্য বিষয় নিয়া পড়াশোনা করে সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়ে দলীয়, আঞ্চলিক ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির আত্মীয়তার সুবাধে নামমাত্র নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে লিখিত পরিক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে তার চাইতে যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশে অনিয়মের দূর্নীতির মাধ্যমে বিধি বহির্ভুত পন্থায় পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান।

তিনি প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন পন্থায় স্কুলের অর্থ আত্মসাৎ করতে থাকেন।অভিযোগ উঠে স্কুলের নামে একটি সরকারি পুকুর ছিল। দূর্নীতি করে পুকুরের আয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই পুকুরের মাছ রাতের আধারে বিক্রি করে স্কুলের ফান্ডে টাকা জমা না দিয়া ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজসে এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন দীর্ঘদিন যাবত এবং মাছ বিক্রির টাকার কোন প্রমাণ রাখে নাই। এছাড়াও অভিযোগ উঠে স্কুলের পুরনো খাতা, বই বিক্রীর কোন রশিদ না রেখে মনগড়া মতো আয় দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই প্রধান শিক্ষক ।

অভিযোগে আরও বলেন প্রধান শিক্ষক স্কুলের নতুন বিল্ডিং এর মাটি বিক্রি করেও লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মাটি বিক্রীর কোন আয় প্রতিষ্ঠানে যোগ করেন নাই। পুরাতন বিল্ডিং এর পুরানো ইট, রড ও টিন বিক্রীর কোন রশিদ না রেখে মনগড়া আয় দেখিয়েও লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

নিয়োগ বাণিজ্য কোচিং বাণিজ্য সহ নানা অপকর্মে জরিয়ে পড়েন তিনি। এমন কি সাধারণ একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী (আয়া) থেকে দুই লক্ষ টাকা ঘুস নেয়ার অভিযোগ উঠে পত্রে। তার পছন্দ মত স্কুল পরিচালনা কমিটির সাথে মিলে অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্যে উকিল জামাই কোচিং বাণিজ্যর হোতা ইউনুস মিয়া ও কথিত ডান হাত মোঃ ওয়াসিম মিয়া। মোঃ ওয়াসিম প্রায়শই ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করতেন,তার বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।

খন্ডকালীন শিক্ষক ছাত্রীদের গায়ে আপত্তিজনক স্থানে হাত দিলে সংশ্লিষ্ট ছাত্রী ও তাদের অভিভাবক অভিযোগ জানালে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে অসম্মানিত করতেন। তাছাড়া স্কুলের হিসাবে সোনালি ব্যাংকে থাকা টাকা কমিটির দাতা সদস্য ও নিজের ব্যবসা বাণিজ্য খাটিয়েছেন। তার প্রমাণ একাউন্ট অনুসন্ধান করিলে পাওয়া যাবে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন সময় উপযুক্ত মেয়েদের গায়ে হাত দিতেও দ্বিধাবোধ করেনি। জরিমানার নামে ভিবিন্ন অজুহাতে টাকা হাতিয়ে নেন এই চক্র। বিগত চার বছর যাবত ওই স্কুলে নির্বাচিত কোন পরিচালনা কমিটি নেই বা হতে দেওয়া হয় নাই। বিগত দুই বছর যাবত কোন প্রকার খেলা-ধুলা বা বার্ষিক ক্রিয়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে নাই।এসব অনিয়মের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক আয়ের একটি অবৈধ উৎস সৃষ্টি করেছেন। বিধি বহির্ভূত পন্থায় গরেছেন অঢেল সম্পদের পাহাড়।এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হলেও তার ছেলেমেয়েদের পড়াতেন অন্য স্কুলে।

ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি ও একাডেমিক শিক্ষার মান তলানিতে গেলে ২৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ ও অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানব বন্ধন করেন। বিষয়টি ভিবিন্ন গনমাধ্যেমে প্রকাশিত হয়। এর পর গাজীপুরে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করেন।

এদিকে গত ২৫ তারিখ থেকে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক সহ অভিযুক্তরা অদ্যাবধি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।

এবিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার মো.শাজাহান জানান অভিযোগটি হাতে পেয়েছি এটি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।তদন্ত কমিটি করে কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

গাজীপুরে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন

আপডেট সময় : ১২:১২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রবিউল আলম,গাজীপুর :

গাজীপুরে দুর্নীতিগ্রস্ত নিয়মবহির্ভূত নিয়োগ প্রাপ্তসহ নানা অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারন চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করেছেন শিক্ষার্থীদের অবিভাবকেরা। গাজীপুর মহানগরীর ৪১নং ওয়ার্ডে অবস্থিত পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুবি আক্তারের বিরুদ্ধে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

গত কাল মঙ্গলবার দুপুরে অভিযোগ পত্রটি জমা দিয়েছেন একই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ফেরদৌস বেপারি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পূবাইল উচ্চ প্রধান শিক্ষক রুবি আক্তার যিনি গার্হস্থ্য বিষয় নিয়া পড়াশোনা করে সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়ে দলীয়, আঞ্চলিক ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির আত্মীয়তার সুবাধে নামমাত্র নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে লিখিত পরিক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে তার চাইতে যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশে অনিয়মের দূর্নীতির মাধ্যমে বিধি বহির্ভুত পন্থায় পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান।

তিনি প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন পন্থায় স্কুলের অর্থ আত্মসাৎ করতে থাকেন।অভিযোগ উঠে স্কুলের নামে একটি সরকারি পুকুর ছিল। দূর্নীতি করে পুকুরের আয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই পুকুরের মাছ রাতের আধারে বিক্রি করে স্কুলের ফান্ডে টাকা জমা না দিয়া ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজসে এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন দীর্ঘদিন যাবত এবং মাছ বিক্রির টাকার কোন প্রমাণ রাখে নাই। এছাড়াও অভিযোগ উঠে স্কুলের পুরনো খাতা, বই বিক্রীর কোন রশিদ না রেখে মনগড়া মতো আয় দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই প্রধান শিক্ষক ।

অভিযোগে আরও বলেন প্রধান শিক্ষক স্কুলের নতুন বিল্ডিং এর মাটি বিক্রি করেও লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মাটি বিক্রীর কোন আয় প্রতিষ্ঠানে যোগ করেন নাই। পুরাতন বিল্ডিং এর পুরানো ইট, রড ও টিন বিক্রীর কোন রশিদ না রেখে মনগড়া আয় দেখিয়েও লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

নিয়োগ বাণিজ্য কোচিং বাণিজ্য সহ নানা অপকর্মে জরিয়ে পড়েন তিনি। এমন কি সাধারণ একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী (আয়া) থেকে দুই লক্ষ টাকা ঘুস নেয়ার অভিযোগ উঠে পত্রে। তার পছন্দ মত স্কুল পরিচালনা কমিটির সাথে মিলে অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্যে উকিল জামাই কোচিং বাণিজ্যর হোতা ইউনুস মিয়া ও কথিত ডান হাত মোঃ ওয়াসিম মিয়া। মোঃ ওয়াসিম প্রায়শই ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করতেন,তার বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।

খন্ডকালীন শিক্ষক ছাত্রীদের গায়ে আপত্তিজনক স্থানে হাত দিলে সংশ্লিষ্ট ছাত্রী ও তাদের অভিভাবক অভিযোগ জানালে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে অসম্মানিত করতেন। তাছাড়া স্কুলের হিসাবে সোনালি ব্যাংকে থাকা টাকা কমিটির দাতা সদস্য ও নিজের ব্যবসা বাণিজ্য খাটিয়েছেন। তার প্রমাণ একাউন্ট অনুসন্ধান করিলে পাওয়া যাবে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন সময় উপযুক্ত মেয়েদের গায়ে হাত দিতেও দ্বিধাবোধ করেনি। জরিমানার নামে ভিবিন্ন অজুহাতে টাকা হাতিয়ে নেন এই চক্র। বিগত চার বছর যাবত ওই স্কুলে নির্বাচিত কোন পরিচালনা কমিটি নেই বা হতে দেওয়া হয় নাই। বিগত দুই বছর যাবত কোন প্রকার খেলা-ধুলা বা বার্ষিক ক্রিয়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে নাই।এসব অনিয়মের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক আয়ের একটি অবৈধ উৎস সৃষ্টি করেছেন। বিধি বহির্ভূত পন্থায় গরেছেন অঢেল সম্পদের পাহাড়।এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হলেও তার ছেলেমেয়েদের পড়াতেন অন্য স্কুলে।

ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি ও একাডেমিক শিক্ষার মান তলানিতে গেলে ২৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ ও অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানব বন্ধন করেন। বিষয়টি ভিবিন্ন গনমাধ্যেমে প্রকাশিত হয়। এর পর গাজীপুরে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করেন।

এদিকে গত ২৫ তারিখ থেকে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক সহ অভিযুক্তরা অদ্যাবধি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।

এবিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার মো.শাজাহান জানান অভিযোগটি হাতে পেয়েছি এটি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।তদন্ত কমিটি করে কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন