নেত্রকোনার ৭ থানার ১১ মামলায় আসামি হাজারের উপর
- আপডেট সময় : ০৬:২৬:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
- / ১২৬
নেত্রকোনার ১০টি থানার মধ্যে বিভিন্ন অভিযোগে ৭টি থানায় এ পর্যন্ত ১১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় মোট আসামি সংখ্যা ১ হাজার ১৮৮ জন। এসকল মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক শামছুর রহমান (ভিপি লিটন), সাবেক সংসদ সদস্য, মেয়র ও চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে। তারমধ্যে সদর উপজেলার মডেল থানায় ২টি, বারহাট্টা থানায় ২টি, কেন্দুয়া থানায় ২টি ও পূর্বধলা থানায় ২টি মামলাসহ মদন, খালিয়াজুরী, দুর্গাপুর থানায় একটি করে মোট ১১টি মামলা করা হয়েছে। বিশেষ ক্ষমতা আইনে এ সকল মামলা দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোনা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. লুৎফর রহমান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচদিনে ৫ আগস্টের পূর্বের বিভিন্ন সময়ে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, আহত করাসহ নানা ঘটনায় এসব মামলা দায়ের হয়েছে। নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামছুর রহমানকে (ভিপি লিটন) তিনটি মামলায় প্রধান আসামি এবং নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ রুহী, নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মদন পৌর মেয়র মো. সাইফুল ইসলাম, লক্ষ্মীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও হাজী ফয়েজ উদ্দিন আকন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ নেতা আজহারুল ইসলামকে প্রধান আসামিসহ সংরক্ষিত আসনের সাবেক সাংসদ অপু উকিলকে আসামি করা হয়।
গত ১৯ আগষ্ট সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের ৩৮ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৬০ জনকে আসামি করে এবং গত ২২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি নেত্রকোনা মডেল থানায় মামলা হয়। একটি মামলায় উপজেলার বাইশধার গ্রামের নুরুল জাহিদ বাদী হয়ে ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামি করেন ৫০ জনকে। একই দিন অপর মামলাটি তিয়োশ্রী গ্রামের হক মিয়া বাদী হয়ে ২৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামি করা হয় ৪০ জনকে।
বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগর গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম গত ১৮ আগষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৩৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করে এবং একই দিন উপজেলা সদরের পাড়া গরমা এলাকার বাসিন্দা আশিক মিয়া বাদী হয়ে, শামছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ জনকে আসামি করে বারহাট্টা থানায় মামলা করেন।
এছাড়াও গত ১৭ আগষ্ট শনিবার রাতে উচিতপুর গ্রামের বাসিন্দা সাজু মিয়া বাদী হয়ে মদন পৌর মেয়র মো. সাইফুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে মদন থানায় একটি মামলা ৪৪ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। একই দিন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ রুহীকে প্রধান আসামি করে দক্ষিণপাড়া এলাকার মিঠুন দত্ত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
এছাড়াও গত ২১ আগষ্ট বুধবার কেন্দুয়া পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকার মোবারক হোসেন বাদী হয়ে নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিলকে প্রধান আসামি করে ও তার সহধর্মিণী সংরক্ষিত আসনের সাবেক সাংসদ অপু উকিলকে ২ নম্বর আসামি করে ১৫২ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করন।
পূর্বধলা থানায় নাকিব আহমেদ সেতু নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বাদী হয়ে ১৫ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরও আরও ১২ জনকে আসামি করা হয়।
বিভিন্ন তথ্য সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা আত্মগোপনে আছেন।
গত ১৭ আগস্ট শনিবার থেকে ২২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলা সদরের মডেল থানাসহ জেলার মদন, খালিয়াজুরি, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা ও কেন্দুয়া থানায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এ মামলাগুলো করা হয়।
এব্যাপারে পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাতটি থানায় ১১টি মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকে পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালাচ্ছে।’