১১:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মেঘনা ধনাঘোদা সেচ প্রকল্প পানির চাপ ও গর্তের ঝুঁকিতে বেড়িবাঁধ

মতলব উত্তর প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় : ০৭:০৬:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৪৪

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বৃষ্টি ও বন্যার পানির চাপে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মূল বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে এর ১০-১২টি স্থানে বড় বড় ছিদ্র এবং কমপক্ষে ৪০ টি স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামতের চেষ্টা করছেন স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসন। তবে পাউবো এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ওই সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধ ঘুরে দেখা যায়, সুগন্ধি, শিকিরচর, দশানী, সিপাহীকান্দি, গালিম খাঁ বাজার, কালীপুর, বাগানবাড়ি, ধনাগোদা, তালতলী, এনায়েতনগর, ফরাজীকান্দি, রায়েরকান্দি, নবীপুর, লালপুর ও গোপালকান্দি এলাকায় গর্ত ও বড় বড় ছিদ্রের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো দিয়ে পানি চুইয়ে বাঁধের ভেতরে ঢুকছে। তালতলী এলাকায় স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বড় ছিদ্র বালুর বস্তা ফেলে আটকানোর চেষ্টা করছে।

বাগানবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, তাঁদের এলাকা থেকে কালীপুর বাজার পর্যন্ত বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে অনেক বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো স্থানীয়ভাবে মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত পাল বলেন, ভারী বৃষ্টি ও নদীর পানির চাপে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে গর্ত (রেইনকাট) ও বড় বড় ছিদ্রের সৃষ্টি হয়েছে।

পাউবোর চাঁদপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মতলব উত্তর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৬০ কিলোমিটারে ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে অর্থায়ন করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। এই বাঁধের ভেতরে প্রায় ৩২ হাজার ১১০ একর ফসলি জমি আছে।নির্মাণের পর এ পর্যন্ত দুবার বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়। এতে কয়েক শ কোটি টাকার ফসল ও সম্পদের ক্ষতি হয়। বাঁধের সবটাই পিচঢালাই সড়ক রাস্তা রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিপাহীকান্দি এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, বর্ষা শুরুর পর থেকে টানা বৃষ্টি ও নদীর পানির চাপে মূল বাঁধের বিভিন্ন অংশে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো মেরামতে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি পাউবো কর্তৃপক্ষ। সময়মতো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এসব গর্ত ও ছিদ্র ক্রমশ বড় হয়েছে। বাঁধও পড়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে। আতঙ্কে রয়েছেন বাঁধের ভেতরের পাঁচ লাখ বাসিন্দা।

ফরাজীকান্দি এলাকার কৃষক সফিকুল ইসলাম বলেন, আমার এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা পড়লেও হেগুলি ঠিক করণের কেউ নাই। বাঁধ ভাইঙ্গা গেলে সব ফসল তলাইয়া যাইব। তহন আমাগো পথে বসন লাগব।

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প পানি ব্যবহারকারী দলের একাংশের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী খোকন বলেন, বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে এলাকার লোকজন রাত-দিন পাহারা দিচ্ছেন। কোথাও নতুন করে গর্ত বা ছিদ্রের সৃষ্টি হলে সেটি মেরামতের জন্য এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, পাউবোর দায়িত্বহীনতার কারণে বাঁধের কয়েকটি অংশ ঝুঁকিতে রয়েছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

মেঘনা ধনাঘোদা সেচ প্রকল্প পানির চাপ ও গর্তের ঝুঁকিতে বেড়িবাঁধ

আপডেট সময় : ০৭:০৬:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বৃষ্টি ও বন্যার পানির চাপে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মূল বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে এর ১০-১২টি স্থানে বড় বড় ছিদ্র এবং কমপক্ষে ৪০ টি স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামতের চেষ্টা করছেন স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসন। তবে পাউবো এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ওই সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধ ঘুরে দেখা যায়, সুগন্ধি, শিকিরচর, দশানী, সিপাহীকান্দি, গালিম খাঁ বাজার, কালীপুর, বাগানবাড়ি, ধনাগোদা, তালতলী, এনায়েতনগর, ফরাজীকান্দি, রায়েরকান্দি, নবীপুর, লালপুর ও গোপালকান্দি এলাকায় গর্ত ও বড় বড় ছিদ্রের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো দিয়ে পানি চুইয়ে বাঁধের ভেতরে ঢুকছে। তালতলী এলাকায় স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বড় ছিদ্র বালুর বস্তা ফেলে আটকানোর চেষ্টা করছে।

বাগানবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, তাঁদের এলাকা থেকে কালীপুর বাজার পর্যন্ত বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে অনেক বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো স্থানীয়ভাবে মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত পাল বলেন, ভারী বৃষ্টি ও নদীর পানির চাপে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে গর্ত (রেইনকাট) ও বড় বড় ছিদ্রের সৃষ্টি হয়েছে।

পাউবোর চাঁদপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মতলব উত্তর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৬০ কিলোমিটারে ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে অর্থায়ন করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। এই বাঁধের ভেতরে প্রায় ৩২ হাজার ১১০ একর ফসলি জমি আছে।নির্মাণের পর এ পর্যন্ত দুবার বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়। এতে কয়েক শ কোটি টাকার ফসল ও সম্পদের ক্ষতি হয়। বাঁধের সবটাই পিচঢালাই সড়ক রাস্তা রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিপাহীকান্দি এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, বর্ষা শুরুর পর থেকে টানা বৃষ্টি ও নদীর পানির চাপে মূল বাঁধের বিভিন্ন অংশে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো মেরামতে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি পাউবো কর্তৃপক্ষ। সময়মতো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এসব গর্ত ও ছিদ্র ক্রমশ বড় হয়েছে। বাঁধও পড়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে। আতঙ্কে রয়েছেন বাঁধের ভেতরের পাঁচ লাখ বাসিন্দা।

ফরাজীকান্দি এলাকার কৃষক সফিকুল ইসলাম বলেন, আমার এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা পড়লেও হেগুলি ঠিক করণের কেউ নাই। বাঁধ ভাইঙ্গা গেলে সব ফসল তলাইয়া যাইব। তহন আমাগো পথে বসন লাগব।

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প পানি ব্যবহারকারী দলের একাংশের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী খোকন বলেন, বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে এলাকার লোকজন রাত-দিন পাহারা দিচ্ছেন। কোথাও নতুন করে গর্ত বা ছিদ্রের সৃষ্টি হলে সেটি মেরামতের জন্য এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, পাউবোর দায়িত্বহীনতার কারণে বাঁধের কয়েকটি অংশ ঝুঁকিতে রয়েছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন