০৯:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে দূর্ণীতির দায়ে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদার পুণবহালের অপচেষ্টায় প্রতিবাদে সভা

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় : ১২:১৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
  • / ২৩৭

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃত আদমজীনগর এম ডব্লিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা পুণরায় স্বপদে বহাল থাকতে নতুন করে পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। তার এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক ও অভিভাবকরা প্রতিবাদ সভা করেছে। এসময় নাসিক ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষীত নারী কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনাও উপস্থিত ছিলেন।

সভায় নারী কাউন্সিলর আয়েশা আকতার দিনা বলেন, দুর্ণীতির দায়ের বরখাস্তকৃত সাবেক প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা প্রায় তিন বছর পর হঠাৎ করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সুযোগকে হাতিয়ার বানিয়ে ভুয়া একটি কাগজ এনে আবারো এই স্কুলে যোগদান করতে চাচ্ছে। আমরা তার কাছে শিক্ষক হিসেবে এমন অপকর্ম আশা করিনা। এটা নোংরামি ছাড়া আর কিছুইনা। এই স্কুলে পুণরায় এই শিক্ষক বসলে স্কুলের সুনাম নষ্ট হয়ে ধুলিস্বাৎ হয়ে যাবে। তাকে কখনো কোনভাবেই এখানে এলাও করা হবে না। সে যে দুর্ণীতি করেছে, তা সে নিজের মুখে স্বীকার করেছে। তাকে পূণরায় এই স্কুলে বসিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে চাইনা।

স্কুল সূত্রে জানা যায়, পূর্বের পদে পূর্ণ বহালের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সাবেক প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা। সিনিয়র সহকারী সচিব তৌহিদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র দেখিয়ে তিনি স্কুল কতৃপক্ষের উপর চাপ প্রয়োগ করছেন বলে জানা যায়। পরিপত্রের বিষয় হলো, স্বীকৃত বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যক্রম নিস্পত্তিকরণ। যেখানে বলা হয়েছে, স্বীকৃত বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত শিক্ষক কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যক্রম ১৮০ দিনের মধ্যে নিস্পত্তি করতে হবে। ১৮০ দিন কার্যদিবস শেষে উক্ত শিক্ষক-কর্মচারী স্বয়ংক্রীয়ভাবে স্বীয় পদে পূর্ণ বহাল হয়ে বিধি মোতাবেক বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্ত হবেন।

পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, সাময়িক বরখাস্তের তারিখ অথবা বিভাগীয় কার্যক্রম শুরুর তারিখ হতে এ সময় গননা করা হবে। আগে সাময়িক বরখাস্তের সময়সীমা নির্ধারন ছিলো না। যার ফলে বিভাগীয় তদন্ত দীর্ঘদিন চলার ফলে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হতো। ধারনা করা হচ্ছে রাজনৈতিক কারনে এবং বর্তমানে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যোগদান করতে গিয়ে অনেক স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারী স্কুল পরিচালনা কমিটি দ্বারা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে। আন্দোলনে অংশগ্রহন করা, কিংবা আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক কারনে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন যাপনের কথা চিন্তা করে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তারা দোসী কি না তা ১৮০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রমান করতে না পারলে বুঝা যাবে সেই ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। ফলে ১৮০ দিন অর্থাৎ ৬ মাস পরে অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী স্বয়ংক্রীয়ভাবে সেই পদে পূর্নবহাল হয়ে যাবে এবং তিনি বিধি মোতাবেক বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্ত হবেন।

এখন প্রশ্ন হলো ৮ আগষ্ট বৃহস্পতিবার ২০২৪ ইং প্রকাশিত এই পরিপত্রের আওতায় কি সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী এমডব্লিউ স্কুলের দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা পড়েছেন? উত্তরে স্কুল কতৃপক্ষ বলেন, দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা এই পরিপত্রের আওতায় পড়েনি। কারন, তিনি কোন রাজনৈতিক কারনে কিংবা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে বরখাস্ত হননি। তিনি গত ৫ বছর আগে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে প্রথমে সাময়িক এবং পরে চুড়ান্তভাবে বরখাস্ত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হয়েছে। তাকে পূর্ন বহালের জন্যও বলা হয়েছে। পূর্ণ বহালের রায়ের বিরেুদ্ধে হাই কোর্টে রিট করা হয়েছে। যা বর্তমানে চলমান রয়েছে।

সুতরাং সর্বদিক বিবেচনা করে দেখা যায়. বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ৮ আগষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীদেও সুবিধার জন্য জারি করা পরিপত্রকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে, শিক্ষার্থীদেরকে ভুল বুঝিয়ে আদমজী এমডব্লিউ স্কুলের দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা প্রধান শিক্ষক পদে পূর্নবহালের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্কুলে এসে আতংক সৃষ্টি করতে চাইছে। পূর্বের দুর্নীতি আড়াল করে নিজেকে একজন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ভুক্তভোগী হিসেবে জাহির করতে চাইছে। বিষয়টি সুষ্ঠ ও নিরোপেক্ষভাবে জানতে এবং অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অনেক অজানা তথ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী এমডব্লিউ স্কুলের দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা নিজেকে নির্দোষ দাবী করে তাকে পুনঃরায় বহালের জন্য স্কুল কতৃপক্ষকে চাপ প্রয়োগ করছেন। তার প্রথম দিকে অভিযোগ যে, তাকে বরখাস্ত করার পর থেকে তিনি স্কুল থেকে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। বর্তমানে অভিযোগ হলো তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসায়, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলা কালে বরখাস্ত হয়েছেন। কিন্তু তার এই অভিযোগগুলো মিথ্যে, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন আদমজী এমডব্লিউ স্কুল কতৃপক্ষ। কতৃপক্ষেও দাবী, বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা নিদোর্ষ হয় কিভাবে? তিনি যে দুর্নীতিবাজ, অর্থ আত্নসাতকারী, স্কুল চলাকালে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত তা বিভিন্ন সময়ে করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দ্বারা প্রমানিত। তিনি স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও বেতন-ভাতা উত্তেলন করেছেন তাও প্রমানিত। তিনি স্কুলের অর্থ নিজের মনে করে দীর্ঘদিন সাথে রেখেছেন এবং তিনি দীর্ঘদিন স্কুলে উপস্থিত থেকে স্কুলের শিক্ষার মান তলানিতে নিয়ে এসেছিলেন। যার ফলে তাকে স্কুলের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকরা চায়নি। তার বিভিন্ন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকরা। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার নন। তাকে দুর্নীতির দায়ে ৪বছর আগেই বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও হয়েছে। রায়ও হয়েছে। তিনি স্কুলের শিক্ষার দিকে নজর না দিয়ে, হাজার হাজার শিক্ষার্থীর দিকে নজর না দিয়ে, স্কুল থেকে বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে বরখান্তকৃত প্রধান শিক্ষক নিজের দুর্নীতি আড়াল করে এখন বুৃঝাতে চাইছেন তিনি দুধে ধোয়া তুলসি পাতা। আসলে গাজী নাজমুল হুদা যে একজন দুর্নীতিবাজ তা বিভিন্ন সময়ে তদন্ত দ্বারা প্রমানিত বলে জানান স্কুল কতৃপক্ষ।

যার প্রমান হল, চাকুরীতে যোগদান করার পর থেকে গাজী নাজমুল হুদা ৫ মাস ২১ দিনের মধ্যে মাত্র ৯১ দিন উপস্থিত ছিলেন। আর ৩ মাস ১৮ দিনের মধ্যে স্কুল থেকে তিনি বিভিন্ন খাত থেকে ১২ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪’শ ৯৯ টাকা আদায় করেন। অথচ ব্যাংকে টাকা জমা দেন ৪ লক্ষ ৮৬ হাজার ৩০৫ টাকা। বাকী ৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ১’শ ৯৪ টাকা তিনি নিজের কাছে রাখেন। এই টাকা গ্রহন করার সময় তিনি কোন রেজিষ্টার্ড করেন নাই যা সম্পূর্ন অপরাধ। ৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৯৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী তৎকালিন স্কুল পরিচালনা কমিটি এই প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে বরখাস্ত করেন।

এই বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের (মাউশির) আইন শাখার অফিসার ইনচার্জ মো. সিদ্দিকুর রহমান তদন্ত কওে ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।

এর এক বছর পরে গত ১০ মার্চ ২০২২ সালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণগঞ্জ সদর কতৃক আরেকটি তদন্ত হয়। সেই প্রতিবেদনেরও বরখান্তকৃত প্রধান শিক্ষকের অর্থ-আত্নসাতের বিষয়টি প্রমানিত হয়েছে। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক দীর্ঘ দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত, আত্নসাৎকৃত অর্থ দীর্ঘ দিন পর ব্যাংকে জমা প্রদানের ফলে অর্থ আত্নসাতের বিষয়টি আবশ্যিকভাবে প্রমানিত, শিক্ষানবিশকাল সন্তোষজন অগ্রগতি প্রদর্শনে ব্যর্থ, শিক্ষকদের মধ্যে দ্বলাদলি সৃষ্টি, শিক্ষক সুলভ আচরনে ব্যর্থ, স্কুলের শিক্ষকগন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন, এলাকার বর্তমান কাউন্সিলর, এলাকাবাসী, সাবেক কাউন্সিলর, বীরমুক্তিযোদ্ধাগন, বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটি, অভিভাবকবৃন্দ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগন বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানায়। এমন অবস্থায় যদি বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদার বরখাস্তের আদেশ বাতিল করে পূর্ন: বহাল করা হয় তাহলে এলাকায় জনরোষের সৃষ্টি হতে পারে, আইন-শৃংখলার অবনতি হতে পারে বলে তদন্তে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এরপরে আবারো মাধ্যমিক ও উ”চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা কতৃক বিদ্যালয় উপ-পরিদর্শক ও শেকসন অফিসার কতৃক ৩য় বারের মতো তদন্ত হয়।

উক্ত তদন্তের সময় স্কুল কতৃপক্ষ বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের অর্থ-আত্নসাতের যাবতীয় প্রমানাদি, পূর্বের তদন্তও তুলে ধরেন কিন্তু এই তদন্তের কোন রিপোর্ট স্কুল কতৃপক্ষকে এখনো জানানো হয়নি। অথচ তদন্তে কি বলা হয়েছে তা জানার অধিকার রাখে স্কুল কতৃপক্ষ। এ ব্যাপাওে তথ্য জানতে চেয়ে একটি আবেদনও করে স্কুল কতৃপক্ষ। কিন্তু আজ পর্যন্ত স্কুল কতৃপক্ষকে তা জানানো হয়নি। অভিযোগ উঠছে, হয়তো বরখাস্তকৃত দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আগের দুইটি তদন্ত প্রতিবেদনকে উপেক্ষা করে তৃতীয় তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখে সম্পূন্ন অবৈধ পন্থায় বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদাকে পুন:বহালের আদেশ প্রদান করা হয়। এদিকে স্কুলে বরখাস্তকৃত দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক পুন:বহালের খবরে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা। ২০২৩ সালের বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে অত্র স্কুলের সামনে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করে।

মানববন্ধনে অত্র স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবকবৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে যেনো পুনরায় স্কুলে বহান করা না হয় সেজন্য জোর দাবী জানানো হয়। যদি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মতের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষককে পুনরায় বহাল করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে আগামীতে বড় আন্দোলনের হুশিয়ারী উচ্চারন করেন মানববন্ধনকারীরা। স্কুলের সুনাম রক্ষায় দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তারা সকলের সহযোগীতা কামনা করেন। একদিকে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক দুর্নীতি করেছে তা প্রমানিত, স্কুলের প্রতি তার সামান্য মায়া নেই, যার ফলে অধিকাংশ সময় তিনি স্কুলে ছিলেন অনুপস্থিত, স্কুলে উপস্থিত না থেকেও তিনি বেতন-ভাতা উত্তেলন করেছেন, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে চায়না। তার সময়ে স্কুলের শিক্ষার মান নীচে নেমে যায়। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী কমে যায়। শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং ও দ¦ন্ধ-সংঘাতের সৃস্টি হয়। তাই স্কুলের ভালোর কথা চিন্ত করে, ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যানের কথা চিন্তা করে, কোন ধরনের বিশৃংখলা আইন-শৃংখলার অবনতি যাতে না হয়, সেদিক বিবেচনা করে দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক নাজমুর হুদাকে পুন:বহাল করা হয়নি বলে জানান স্কুল কতৃপক্ষ। তাছাড়া ৩য় বারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কতৃক বরখাস্তকৃত নামজুল হুদাকে পুন:বহালের যে আদেশ দিয়েছে তা সঠিক তদন্তে হয়নি বলে জানান স্কুল কতৃপক্ষ। ফলে ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের (মাউশির) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কতৃক দুইটি তদন্ত প্রতিবেদনকে উপেক্ষা কওে তৃতীয় তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখে সম্পূন্ন অবৈধভাবে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদাকে পুন:বহালের আদেশ প্রদান করায় এই রায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রীট করেন স্কল কতৃপক্ষের পক্ষে ভারপ্রাপÍ প্রধান শিক্ষিকা রওশন আরা। রীটের ফলে পূর্বের রায় স্থগিতের আদেশ দেয় আদালত। বর্তমানে এই অবস্থায় রয়েছে দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা। এদিকে স্কুলের শিক্ষার মানের কথা চিন্তা করে তারা প্রধার শিক্ষককে পুন:বহালের আদেশ স্থগিত করে উচ্চতর পর্যায়ের তদন্তের দাবী জানিয়ে স্কুল কতৃপক্ষ আবারো মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড বরাবর একটি আবেদন করেছেন বলে জানান।

এরই মধ্যে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে গাজী নাজমুল হুদাকে চুড়ান্তভাবে বরখাস্ত করেন। এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রওশন আরাকে চুড়ান্তভাবে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এখানে নাজমুল হুদার আর কোন ক্ষমতা রইল না। এখন নতুন করে জারি করা পরিপত্র নিয়ে তিনি যে দাবী করছেন তা অবৈধ ও হাস্যকর বলে স্কুল কতৃপক্ষ জানান। তার বিরুদ্ধে ৩ বছর আগেই তদন্ত হয়ে গেছে। তাকে ৪ বছর আগে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত করা হয়েছে। বর্তমান আন্দোলন কিংবা রাজনৈতিক কারনে নয় বলে স্কুল কতৃপক্ষ স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

সিদ্ধিরগঞ্জে দূর্ণীতির দায়ে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদার পুণবহালের অপচেষ্টায় প্রতিবাদে সভা

আপডেট সময় : ১২:১৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃত আদমজীনগর এম ডব্লিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা পুণরায় স্বপদে বহাল থাকতে নতুন করে পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। তার এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক ও অভিভাবকরা প্রতিবাদ সভা করেছে। এসময় নাসিক ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষীত নারী কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনাও উপস্থিত ছিলেন।

সভায় নারী কাউন্সিলর আয়েশা আকতার দিনা বলেন, দুর্ণীতির দায়ের বরখাস্তকৃত সাবেক প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা প্রায় তিন বছর পর হঠাৎ করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সুযোগকে হাতিয়ার বানিয়ে ভুয়া একটি কাগজ এনে আবারো এই স্কুলে যোগদান করতে চাচ্ছে। আমরা তার কাছে শিক্ষক হিসেবে এমন অপকর্ম আশা করিনা। এটা নোংরামি ছাড়া আর কিছুইনা। এই স্কুলে পুণরায় এই শিক্ষক বসলে স্কুলের সুনাম নষ্ট হয়ে ধুলিস্বাৎ হয়ে যাবে। তাকে কখনো কোনভাবেই এখানে এলাও করা হবে না। সে যে দুর্ণীতি করেছে, তা সে নিজের মুখে স্বীকার করেছে। তাকে পূণরায় এই স্কুলে বসিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে চাইনা।

স্কুল সূত্রে জানা যায়, পূর্বের পদে পূর্ণ বহালের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সাবেক প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা। সিনিয়র সহকারী সচিব তৌহিদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র দেখিয়ে তিনি স্কুল কতৃপক্ষের উপর চাপ প্রয়োগ করছেন বলে জানা যায়। পরিপত্রের বিষয় হলো, স্বীকৃত বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যক্রম নিস্পত্তিকরণ। যেখানে বলা হয়েছে, স্বীকৃত বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত শিক্ষক কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যক্রম ১৮০ দিনের মধ্যে নিস্পত্তি করতে হবে। ১৮০ দিন কার্যদিবস শেষে উক্ত শিক্ষক-কর্মচারী স্বয়ংক্রীয়ভাবে স্বীয় পদে পূর্ণ বহাল হয়ে বিধি মোতাবেক বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্ত হবেন।

পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, সাময়িক বরখাস্তের তারিখ অথবা বিভাগীয় কার্যক্রম শুরুর তারিখ হতে এ সময় গননা করা হবে। আগে সাময়িক বরখাস্তের সময়সীমা নির্ধারন ছিলো না। যার ফলে বিভাগীয় তদন্ত দীর্ঘদিন চলার ফলে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হতো। ধারনা করা হচ্ছে রাজনৈতিক কারনে এবং বর্তমানে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যোগদান করতে গিয়ে অনেক স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারী স্কুল পরিচালনা কমিটি দ্বারা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে। আন্দোলনে অংশগ্রহন করা, কিংবা আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক কারনে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন যাপনের কথা চিন্তা করে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তারা দোসী কি না তা ১৮০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রমান করতে না পারলে বুঝা যাবে সেই ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। ফলে ১৮০ দিন অর্থাৎ ৬ মাস পরে অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী স্বয়ংক্রীয়ভাবে সেই পদে পূর্নবহাল হয়ে যাবে এবং তিনি বিধি মোতাবেক বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্ত হবেন।

এখন প্রশ্ন হলো ৮ আগষ্ট বৃহস্পতিবার ২০২৪ ইং প্রকাশিত এই পরিপত্রের আওতায় কি সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী এমডব্লিউ স্কুলের দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা পড়েছেন? উত্তরে স্কুল কতৃপক্ষ বলেন, দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা এই পরিপত্রের আওতায় পড়েনি। কারন, তিনি কোন রাজনৈতিক কারনে কিংবা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে বরখাস্ত হননি। তিনি গত ৫ বছর আগে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে প্রথমে সাময়িক এবং পরে চুড়ান্তভাবে বরখাস্ত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হয়েছে। তাকে পূর্ন বহালের জন্যও বলা হয়েছে। পূর্ণ বহালের রায়ের বিরেুদ্ধে হাই কোর্টে রিট করা হয়েছে। যা বর্তমানে চলমান রয়েছে।

সুতরাং সর্বদিক বিবেচনা করে দেখা যায়. বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ৮ আগষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীদেও সুবিধার জন্য জারি করা পরিপত্রকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে, শিক্ষার্থীদেরকে ভুল বুঝিয়ে আদমজী এমডব্লিউ স্কুলের দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা প্রধান শিক্ষক পদে পূর্নবহালের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্কুলে এসে আতংক সৃষ্টি করতে চাইছে। পূর্বের দুর্নীতি আড়াল করে নিজেকে একজন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ভুক্তভোগী হিসেবে জাহির করতে চাইছে। বিষয়টি সুষ্ঠ ও নিরোপেক্ষভাবে জানতে এবং অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অনেক অজানা তথ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী এমডব্লিউ স্কুলের দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা নিজেকে নির্দোষ দাবী করে তাকে পুনঃরায় বহালের জন্য স্কুল কতৃপক্ষকে চাপ প্রয়োগ করছেন। তার প্রথম দিকে অভিযোগ যে, তাকে বরখাস্ত করার পর থেকে তিনি স্কুল থেকে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। বর্তমানে অভিযোগ হলো তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসায়, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলা কালে বরখাস্ত হয়েছেন। কিন্তু তার এই অভিযোগগুলো মিথ্যে, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন আদমজী এমডব্লিউ স্কুল কতৃপক্ষ। কতৃপক্ষেও দাবী, বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা নিদোর্ষ হয় কিভাবে? তিনি যে দুর্নীতিবাজ, অর্থ আত্নসাতকারী, স্কুল চলাকালে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত তা বিভিন্ন সময়ে করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দ্বারা প্রমানিত। তিনি স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও বেতন-ভাতা উত্তেলন করেছেন তাও প্রমানিত। তিনি স্কুলের অর্থ নিজের মনে করে দীর্ঘদিন সাথে রেখেছেন এবং তিনি দীর্ঘদিন স্কুলে উপস্থিত থেকে স্কুলের শিক্ষার মান তলানিতে নিয়ে এসেছিলেন। যার ফলে তাকে স্কুলের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকরা চায়নি। তার বিভিন্ন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকরা। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার নন। তাকে দুর্নীতির দায়ে ৪বছর আগেই বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও হয়েছে। রায়ও হয়েছে। তিনি স্কুলের শিক্ষার দিকে নজর না দিয়ে, হাজার হাজার শিক্ষার্থীর দিকে নজর না দিয়ে, স্কুল থেকে বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে বরখান্তকৃত প্রধান শিক্ষক নিজের দুর্নীতি আড়াল করে এখন বুৃঝাতে চাইছেন তিনি দুধে ধোয়া তুলসি পাতা। আসলে গাজী নাজমুল হুদা যে একজন দুর্নীতিবাজ তা বিভিন্ন সময়ে তদন্ত দ্বারা প্রমানিত বলে জানান স্কুল কতৃপক্ষ।

যার প্রমান হল, চাকুরীতে যোগদান করার পর থেকে গাজী নাজমুল হুদা ৫ মাস ২১ দিনের মধ্যে মাত্র ৯১ দিন উপস্থিত ছিলেন। আর ৩ মাস ১৮ দিনের মধ্যে স্কুল থেকে তিনি বিভিন্ন খাত থেকে ১২ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪’শ ৯৯ টাকা আদায় করেন। অথচ ব্যাংকে টাকা জমা দেন ৪ লক্ষ ৮৬ হাজার ৩০৫ টাকা। বাকী ৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ১’শ ৯৪ টাকা তিনি নিজের কাছে রাখেন। এই টাকা গ্রহন করার সময় তিনি কোন রেজিষ্টার্ড করেন নাই যা সম্পূর্ন অপরাধ। ৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৯৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী তৎকালিন স্কুল পরিচালনা কমিটি এই প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে বরখাস্ত করেন।

এই বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের (মাউশির) আইন শাখার অফিসার ইনচার্জ মো. সিদ্দিকুর রহমান তদন্ত কওে ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।

এর এক বছর পরে গত ১০ মার্চ ২০২২ সালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণগঞ্জ সদর কতৃক আরেকটি তদন্ত হয়। সেই প্রতিবেদনেরও বরখান্তকৃত প্রধান শিক্ষকের অর্থ-আত্নসাতের বিষয়টি প্রমানিত হয়েছে। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক দীর্ঘ দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত, আত্নসাৎকৃত অর্থ দীর্ঘ দিন পর ব্যাংকে জমা প্রদানের ফলে অর্থ আত্নসাতের বিষয়টি আবশ্যিকভাবে প্রমানিত, শিক্ষানবিশকাল সন্তোষজন অগ্রগতি প্রদর্শনে ব্যর্থ, শিক্ষকদের মধ্যে দ্বলাদলি সৃষ্টি, শিক্ষক সুলভ আচরনে ব্যর্থ, স্কুলের শিক্ষকগন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন, এলাকার বর্তমান কাউন্সিলর, এলাকাবাসী, সাবেক কাউন্সিলর, বীরমুক্তিযোদ্ধাগন, বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটি, অভিভাবকবৃন্দ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগন বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানায়। এমন অবস্থায় যদি বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদার বরখাস্তের আদেশ বাতিল করে পূর্ন: বহাল করা হয় তাহলে এলাকায় জনরোষের সৃষ্টি হতে পারে, আইন-শৃংখলার অবনতি হতে পারে বলে তদন্তে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এরপরে আবারো মাধ্যমিক ও উ”চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা কতৃক বিদ্যালয় উপ-পরিদর্শক ও শেকসন অফিসার কতৃক ৩য় বারের মতো তদন্ত হয়।

উক্ত তদন্তের সময় স্কুল কতৃপক্ষ বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের অর্থ-আত্নসাতের যাবতীয় প্রমানাদি, পূর্বের তদন্তও তুলে ধরেন কিন্তু এই তদন্তের কোন রিপোর্ট স্কুল কতৃপক্ষকে এখনো জানানো হয়নি। অথচ তদন্তে কি বলা হয়েছে তা জানার অধিকার রাখে স্কুল কতৃপক্ষ। এ ব্যাপাওে তথ্য জানতে চেয়ে একটি আবেদনও করে স্কুল কতৃপক্ষ। কিন্তু আজ পর্যন্ত স্কুল কতৃপক্ষকে তা জানানো হয়নি। অভিযোগ উঠছে, হয়তো বরখাস্তকৃত দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আগের দুইটি তদন্ত প্রতিবেদনকে উপেক্ষা করে তৃতীয় তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখে সম্পূন্ন অবৈধ পন্থায় বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদাকে পুন:বহালের আদেশ প্রদান করা হয়। এদিকে স্কুলে বরখাস্তকৃত দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক পুন:বহালের খবরে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা। ২০২৩ সালের বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে অত্র স্কুলের সামনে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করে।

মানববন্ধনে অত্র স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবকবৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে যেনো পুনরায় স্কুলে বহান করা না হয় সেজন্য জোর দাবী জানানো হয়। যদি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মতের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষককে পুনরায় বহাল করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে আগামীতে বড় আন্দোলনের হুশিয়ারী উচ্চারন করেন মানববন্ধনকারীরা। স্কুলের সুনাম রক্ষায় দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তারা সকলের সহযোগীতা কামনা করেন। একদিকে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক দুর্নীতি করেছে তা প্রমানিত, স্কুলের প্রতি তার সামান্য মায়া নেই, যার ফলে অধিকাংশ সময় তিনি স্কুলে ছিলেন অনুপস্থিত, স্কুলে উপস্থিত না থেকেও তিনি বেতন-ভাতা উত্তেলন করেছেন, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে চায়না। তার সময়ে স্কুলের শিক্ষার মান নীচে নেমে যায়। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী কমে যায়। শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং ও দ¦ন্ধ-সংঘাতের সৃস্টি হয়। তাই স্কুলের ভালোর কথা চিন্ত করে, ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যানের কথা চিন্তা করে, কোন ধরনের বিশৃংখলা আইন-শৃংখলার অবনতি যাতে না হয়, সেদিক বিবেচনা করে দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক নাজমুর হুদাকে পুন:বহাল করা হয়নি বলে জানান স্কুল কতৃপক্ষ। তাছাড়া ৩য় বারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কতৃক বরখাস্তকৃত নামজুল হুদাকে পুন:বহালের যে আদেশ দিয়েছে তা সঠিক তদন্তে হয়নি বলে জানান স্কুল কতৃপক্ষ। ফলে ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের (মাউশির) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কতৃক দুইটি তদন্ত প্রতিবেদনকে উপেক্ষা কওে তৃতীয় তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখে সম্পূন্ন অবৈধভাবে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদাকে পুন:বহালের আদেশ প্রদান করায় এই রায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রীট করেন স্কল কতৃপক্ষের পক্ষে ভারপ্রাপÍ প্রধান শিক্ষিকা রওশন আরা। রীটের ফলে পূর্বের রায় স্থগিতের আদেশ দেয় আদালত। বর্তমানে এই অবস্থায় রয়েছে দুর্নীতির দায়ে চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা। এদিকে স্কুলের শিক্ষার মানের কথা চিন্তা করে তারা প্রধার শিক্ষককে পুন:বহালের আদেশ স্থগিত করে উচ্চতর পর্যায়ের তদন্তের দাবী জানিয়ে স্কুল কতৃপক্ষ আবারো মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড বরাবর একটি আবেদন করেছেন বলে জানান।

এরই মধ্যে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে গাজী নাজমুল হুদাকে চুড়ান্তভাবে বরখাস্ত করেন। এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রওশন আরাকে চুড়ান্তভাবে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এখানে নাজমুল হুদার আর কোন ক্ষমতা রইল না। এখন নতুন করে জারি করা পরিপত্র নিয়ে তিনি যে দাবী করছেন তা অবৈধ ও হাস্যকর বলে স্কুল কতৃপক্ষ জানান। তার বিরুদ্ধে ৩ বছর আগেই তদন্ত হয়ে গেছে। তাকে ৪ বছর আগে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত করা হয়েছে। বর্তমান আন্দোলন কিংবা রাজনৈতিক কারনে নয় বলে স্কুল কতৃপক্ষ স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন