০৫:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মতলব বেলতলী গুচ্ছগ্রামের ৬০ পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন

মমিনুল ইসলাম :
  • আপডেট সময় : ০৮:০৫:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
  • / ৭২

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের বেলতলী গুচ্ছগ্রামের বসবাসকারীরা নানা সমসয়ায় জর্জরিত। ছিন্নমূল পরিবারের বসবাসের জন্য গড়ে তোলা হয়েছিল আশ্রায়ণ প্রকল্প। নানা বিপর্যয়ে জর্জরিত সহায় সম্বলহীন মানুষ গুলোর বেঁচে থাকার ঠাঁই হয়েছে এখানে। এই আশ্রয়ণ প্রকল্প প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষগুলো পাননি বেঁচে থাকার পরিপূর্ণ জীবন।

জানা গেছে, ২০০৭ সালের দিকে শেখ হাসিনার অবদান গৃহহীনদের গৃহ দান এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেলতলী মৌজার খাস জমিতে ৬০টি পরিবারের জন্য গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের অদ্যবধি আবাসনের অবকাঠামো সংস্কার ও মেরামত না করায় জরাজীর্ণ ভাঙ্গাচোরা ঘরে অনেকটাই মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ৬টি ব্যারাকে ৬০টি পরিবারের জন্য নির্মিত আবাসনের ইউনিট গুলোর বেশিরভাগ ছাউনি, বেড়া, দরজা, জানালা নষ্ট হয়ে ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বাঁচার আকুতিতে জরাজীর্ণ ঘরের চালে পলিথিন, ঘরের বেড়ায় পুরনো কাপড় দিয়ে কোন রকমে বসবাস করছেন। সামান্য বৃষ্টি এলে তাদের ভিজিয়ে গিয়ে ঘুম হারাম হয়ে যায়। আবাসনের টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে গেলে নিজেদের অর্থই ঠিক করে নিতে হয়। টয়লেটের অবস্থাটাও একইরকম। বর্ষাকালে এখানকার বাসিন্দাদের দুর্দশার অন্ত থাকে না। পরিবার-পরিজন, গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়তে হয় বিপাকে। তাদের জন্য অন্য কোন কর্মসংস্থান না থাকায় চরম দারিদ্র্র আর অভাবের মধ্যে দিন কাটছে তাদের। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ভিজিএফ ও ভিজিডি কার্ডের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ করেন আবাসনের বাসিন্দারা। এ অবস্থায় গুচ্ছগ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছে ২০টি পরিবার।

গুচ্ছগ্রামের পূর্নবাসিতরা জানান, নির্মাণের পর সংস্কার না করায় বেশিরভাগ ইউনিট গুলোর টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে। শীতে হিমহিম বাতাস আর বর্ষাকালে ঝড়বৃষ্টিতে বসবাস করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।

আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা পারুল জানান, জায়গা জমি নাই তাই ঠাঁই হয় এ গুচ্ছগ্রামে। সংস্কার না করায় এখানে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুয়েল রানা জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক গৃহহীনদের ঘরবাড়ি তৈরী করে দিচ্ছে অথচ ১৭ বছর আগে গুচ্ছগ্রামের মাথা গোঁজার ঠাঁই টুুকু করে দিয়ে অধ্যবধি কেউ আর আমাদের কোন রকমের খোঁজ খবর নেয়নি।

গুচ্ছগ্রামের সভাপতি সভাপতি জহির মোল্লা জানান, আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে মাথা গোঁজার ভাঙ্গাচোরা ঘর। এগুলো অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। সংস্কারের অভাবে অনেক ঘরে থাকার মতো অবস্থা নেই। একারণে আশ্রয়নের অনেক বাসিন্দা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, মতলব উত্তরে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায় ১৮-২০ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল, সেই ঘরগুলো যথাযথ সময় মেরামত না করায় কিছু ঘরের টিন ফুটো হয়ে গেছে এবং বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। আমি ওখানকার ইউএনও এবং এসিল্যান্ডকে বলা হয়েছে যদি লোকালি সংস্কার করা যায় তাহলে সংস্কার করে দেওয়ার জন্য। সরকারি বরাদ্দ না থাকায় গুচ্ছগ্রাম সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। বরাদ্দ পেলে সংস্কার করা হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

মতলব বেলতলী গুচ্ছগ্রামের ৬০ পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন

আপডেট সময় : ০৮:০৫:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের বেলতলী গুচ্ছগ্রামের বসবাসকারীরা নানা সমসয়ায় জর্জরিত। ছিন্নমূল পরিবারের বসবাসের জন্য গড়ে তোলা হয়েছিল আশ্রায়ণ প্রকল্প। নানা বিপর্যয়ে জর্জরিত সহায় সম্বলহীন মানুষ গুলোর বেঁচে থাকার ঠাঁই হয়েছে এখানে। এই আশ্রয়ণ প্রকল্প প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষগুলো পাননি বেঁচে থাকার পরিপূর্ণ জীবন।

জানা গেছে, ২০০৭ সালের দিকে শেখ হাসিনার অবদান গৃহহীনদের গৃহ দান এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেলতলী মৌজার খাস জমিতে ৬০টি পরিবারের জন্য গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের অদ্যবধি আবাসনের অবকাঠামো সংস্কার ও মেরামত না করায় জরাজীর্ণ ভাঙ্গাচোরা ঘরে অনেকটাই মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ৬টি ব্যারাকে ৬০টি পরিবারের জন্য নির্মিত আবাসনের ইউনিট গুলোর বেশিরভাগ ছাউনি, বেড়া, দরজা, জানালা নষ্ট হয়ে ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বাঁচার আকুতিতে জরাজীর্ণ ঘরের চালে পলিথিন, ঘরের বেড়ায় পুরনো কাপড় দিয়ে কোন রকমে বসবাস করছেন। সামান্য বৃষ্টি এলে তাদের ভিজিয়ে গিয়ে ঘুম হারাম হয়ে যায়। আবাসনের টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে গেলে নিজেদের অর্থই ঠিক করে নিতে হয়। টয়লেটের অবস্থাটাও একইরকম। বর্ষাকালে এখানকার বাসিন্দাদের দুর্দশার অন্ত থাকে না। পরিবার-পরিজন, গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়তে হয় বিপাকে। তাদের জন্য অন্য কোন কর্মসংস্থান না থাকায় চরম দারিদ্র্র আর অভাবের মধ্যে দিন কাটছে তাদের। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ভিজিএফ ও ভিজিডি কার্ডের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ করেন আবাসনের বাসিন্দারা। এ অবস্থায় গুচ্ছগ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছে ২০টি পরিবার।

গুচ্ছগ্রামের পূর্নবাসিতরা জানান, নির্মাণের পর সংস্কার না করায় বেশিরভাগ ইউনিট গুলোর টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে। শীতে হিমহিম বাতাস আর বর্ষাকালে ঝড়বৃষ্টিতে বসবাস করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।

আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা পারুল জানান, জায়গা জমি নাই তাই ঠাঁই হয় এ গুচ্ছগ্রামে। সংস্কার না করায় এখানে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুয়েল রানা জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক গৃহহীনদের ঘরবাড়ি তৈরী করে দিচ্ছে অথচ ১৭ বছর আগে গুচ্ছগ্রামের মাথা গোঁজার ঠাঁই টুুকু করে দিয়ে অধ্যবধি কেউ আর আমাদের কোন রকমের খোঁজ খবর নেয়নি।

গুচ্ছগ্রামের সভাপতি সভাপতি জহির মোল্লা জানান, আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে মাথা গোঁজার ভাঙ্গাচোরা ঘর। এগুলো অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। সংস্কারের অভাবে অনেক ঘরে থাকার মতো অবস্থা নেই। একারণে আশ্রয়নের অনেক বাসিন্দা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, মতলব উত্তরে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায় ১৮-২০ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল, সেই ঘরগুলো যথাযথ সময় মেরামত না করায় কিছু ঘরের টিন ফুটো হয়ে গেছে এবং বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। আমি ওখানকার ইউএনও এবং এসিল্যান্ডকে বলা হয়েছে যদি লোকালি সংস্কার করা যায় তাহলে সংস্কার করে দেওয়ার জন্য। সরকারি বরাদ্দ না থাকায় গুচ্ছগ্রাম সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। বরাদ্দ পেলে সংস্কার করা হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন